‘ঘটনা সত্য’ নিয়ে নাট্যাঙ্গনের সংগঠনগুলো যা বলছে

প্রকাশ: জুলাই ২৮, ২০২১

ফিচার প্রতিবেদক

প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে আপত্তিকর বার্তা ছড়িয়ে ঘটনা সত্য নাটকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন জানিয়ে ছোট পর্দার ১৪ সংগঠনের মোর্চা ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশন (এফটিপিও) বলছে, বিষয়টি নিয়ে তাদের সতর্ক করা হবে। এদিকে নাটকের প্রযোজক এসকে সাহেদ আলী পাপ্পু পরিচালক রুবেল হাসানের ওপর দায় চাপিয়ে দুই শিল্পী আফরান নিশো মেহজাবীন চৌধুরীর পক্ষে কথা বলেছে ছোট পর্দার শিল্পীদের সংগঠন অভিনয় শিল্পী সংঘ।

নাটকে প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্ম নিয়ে অবৈজ্ঞানিক বার্তা দেয়ার অভিযোগে বিভিন্ন সংগঠন, অভিভাবক দর্শকদের প্রতিবাদের মধ্যে তোপের মুখে রোববার দুঃখ প্রকাশ করে ইউটিউব থেকে নাটকটি সরিয়ে নিয়েছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল মিউজিক অ্যান্ড ভিডিও (সিএমভি) বিষয়টি নিয়ে তুমুল সমালোচনার মধ্যে প্রযোজক পাপ্পু, পরিচালক রুবেল হাসান, শিল্পী আফরান নিশো মেহজাবীন চৌধুরী একযোগে দুঃখ প্রকাশ করেন।

বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে তুমুল সমালোচনার মধ্যে এফটিপিওর চেয়ারম্যান অভিনেতা-নাট্যকার-পরিচালক মামুনুর রশীদ বলছেন, এটি খুব দায়িত্বহীন কাজ হয়েছে। নাট্যকাররা না জেনে-শুনেই স্বাস্থ্য সম্পর্কিত মেডিকেলের বিষয়টিকে যে এভাবে তুলে ধরেছে তা ঘোরতর অন্যায়।

সিএমভির প্রযোজনায় মঈনুল সানুর চিত্রনাট্যে নাটকটি নির্মাণ করেন তরুণ নির্মাতা রুবেল হাসান। প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন আফরান নিশো মেহজাবীন চৌধুরী। নাটকটি চ্যানেল আইয়ের ঈদুল আজহার আয়োজনে প্রচারের পর শনিবার সিএমভির ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা হয়েছে। শনিবার থেকেই প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন, অভিভাবক দর্শকদের মধ্যে কেউ কেউ অভিযোগ তুলেছেন, নাটকে প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্ম নিয়ে আপত্তিকর বার্তা দেয়া হয়েছে। নাটকে বিলকিছ নামে একজন গৃহপরিচারিকার চরিত্রে মেহজাবীন চৌধুরী মুকুল নামে একজন গাড়িচালকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন আফরান নিশো। বিয়ের পর তাদের সংসারে একটি প্রতিবন্ধী সন্তানের জন্ম হয়। নাটকের শেষভাগে সেই সন্তানের জন্মের কারণ হিসেবে তাদের অতীত জীবনের পাপকে দায়ী করে নাটকে আপত্তিকর বার্তা দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিভিন্ন সংগঠন, যা বাংলাদেশের প্রচলিত প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সুরক্ষা আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।

এমন বার্তায় বিস্ময় প্রকাশ করে মামুনুর রশীদ বলেন, তারা একদমই দায়িত্বহীন কাজ করেছে। তারা নাটকটা তুলে নিয়েছে। তার পরও আমরা আমাদের দিক থেকে খুব স্ট্রং রিঅ্যাকশন দিয়েছি।

সোমবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শিল্পীদের স্বার্থ সংরক্ষণে গঠিত সংগঠন অভিনয় শিল্পী সংঘ বলছে, আমরা নাটকের অভিনয় শিল্পীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা -জাতীয় কোনো সংলাপ উচ্চারণ করেননি। দেখা গেছে, ভয়েস ওভারের মাধ্যমে সংলাপ পরিচালক ব্যবহার করেছেন, যা পাণ্ডুলিপিতে উল্লেখ ছিল না। যে বিতর্কের জন্ম হয়েছে, সেই দায় নিতান্তই পরিচালক প্রযোজকের। সংগঠনটি দাবি করেছে, চ্যানেল আইয়ে নাটকটি প্রচারের সময় সেই বিতর্কিত অংশটুকু বাদ দিয়ে প্রচার করা হয়েছিল; পরে সিএমভির ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশের আগে প্রযোজক-পরিচালক সেই অংশটুকু জুড়ে নিয়েছেন। ভবিষ্যতে নাটক কিংবা চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা মানার তাগিদ দিয়েছে সংগঠনটি।

শিল্পী সংঘের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শিল্পীদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, আমরা এমন কিছু করব না, যা সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিতে পারে এবং আপনি কোনো আইনি জটিলতার সম্মুখীন হন। অবশ্যই সকলে পাণ্ডুলিপি পড়ে শর্ত সাপেক্ষে চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করে কাজ করবেন। ভবিষ্যতে যেন এভাবে কোনো শিল্পী বলির পাঁঠায় পরিণত না হয়।

টিভি নাটকের পরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টর গিল্ড এক বিবৃতিতে বলেছে, যেখানে বিশ্ব একত্র হয়ে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু এবং তাদের পরিবারকে একটা স্বাভাবিক জীবন নিশ্চিত করতে চেষ্টা করছে, সেখানে নাটকে এমন ভয়ানক বক্তব্যে ডিরেক্টর গিল্ড হতাশ, বিক্ষুব্ধ। ধরনের বক্তব্য/সংলাপ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫