সময়ের ভাবনা

ঈদ ও কাঁচা চামড়ার অর্থনীতি

প্রকাশ: জুলাই ২৭, ২০২১

ফেরদাউস আরা বেগম

কভিড-১৯-এর কারণে ঘরে বসে টেলিভিশনের পর্দায় দেশের ভেতরের বাইরের খবর দেখার সুযোগ অনেক বেড়েছে। প্রতিদিনকার খবরে জানা যাচ্ছে যে গত বছরের তুলনায় এবারের পশুর চামড়ার বাজারের পরিস্থিতি অনেকটা ভালো, যদিও দাম কিছুটা কম এবং অনেক ক্ষেত্রেই সরকারের বেঁধে দেয়া দাম মানা হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক বাজারেও পশুর চামড়ার দাম খুব একটা বাড়েনি, তার পরেও সংশ্লিষ্ট সব মহলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় এখনো পশুর চামড়ার বাজার স্থিতিশীল রয়েছে এবং নষ্ট হয়ে যাওয়া কাঁচা চামড়ার পরিমাণ গত বছরের তুলনায় কিছুটা হলেও কম।

কোরবানির ঈদ এবং তার সঙ্গে কাঁচা চামড়ার সরবরাহের সম্পর্ক অনেক দিনের। আর এর সঙ্গে অর্থনীতির যোগ বেশ নিবিড়। সংশ্লিষ্ট তথ্যে দেখা যায়, দেশে প্রায় ৩১৫ মিলিয়ন স্কয়ার ফুট ক্রাস্ট ফিনিশিড চামড়ার সরবরাহ আছে, তার একটি বিশেষ অংশই আসে কোরবানির সময়।

আর তাই কাঁচা চামড়ার সঠিক সংগ্রহ, সংরক্ষণ এগুলোর প্রতি সংশ্লিষ্ট সবার আগ্রহ রয়েছে। প্রথমেই বলার ছিল চামড়ার অর্থনীতি কতটা ব্যাপক। ধরে নেয়া যাক, মৎস্য প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্য মোতাবেক বছর পশুর মজুদ ছিল প্রায় ১১ দশমিক মিলিয়ন। মজুদের চেয়ে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ লাখ পশু বছর  কোরবানি হয়েছে ধরে নেয়া যেতে পারে। প্রতিটি চামড়ার গড় মূল্য যদি ২০০-২৫০ (গরু, ছাগল, মহিষ) টাকা করেও হয়, তাহলে প্রায় ১৫ বিলিয়ন টাকার কেনা-বেচা হতে পারে। স্থানীয় রফতানি বাজার মিলে এবং মূল্য সংযোজিত পণ্য ধরে এর একটি বিপুল অর্থনীতি রয়েছে, তা ঠিকভাবে ম্যানেজ করতে পারলে থেকে বিপুল পরিমাণ অভ্যন্তরীণ রফতানি মূল্য আরো পাঁচ গুণ বেড়ে ৭৫ বিলিয়ন টাকার মতো হতে পারে, যা অর্জন করা সম্ভব। তারপর এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বিভিন্ন ধরনের প্রান্তিক থেকে বৃহৎ উদ্যোক্তা, মৌসুমি ব্যবসায়ী, পরিবহন শ্রমিক, লবণ ব্যবসায়ী, পশু খামারি, সাধারণ শ্রমিক, চামড়া প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, রফতানিকারক, কেমিক্যাল পণ্য প্রস্তুতকারক আমদানিকারক, কারখানা শ্রমিক, ম্যানেজার, টেকনিশিয়ান এবং আরো অনেকে। তাই সরকার দেশের রকম একটি কভিড সংক্রমণ পরিস্থিতিতেও শাটডাউন রহিত করে কোরবানির সুযোগ করে দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবার উচিত সুযোগটি যথাযথ কাজে লাগিয়ে শিল্পকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়া।

চামড়া শিল্পের প্রতি আমাদের সবার আগ্রহ রয়েছে, কারণ এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি খাত। এর কারণে কোরবানি ঈদের পর পরই চামড়া সংগ্রহের খবর বেশ যত্ন করে দেখছি, যার প্রচার হচ্ছে ভালো। এত বড় একটা মূল্যবান সম্পদ আমাদের, যার সঠিক ব্যবহারের জন্য বেশ কিছুদিন থেকেই শিল্প মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, পরিবেশ মন্ত্রণালয়, মৎস্য প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ঘন ঘন সভার আয়োজন করছিল, বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এসেছিল এসব সভা থেকে। এর মধ্যে রয়েছে চামড়ার মূল্য নির্ধারণ, লবণ যুক্ত করার বিষয়, পরিবহন, সংরক্ষণ, মজুদ, পাচার না হওয়া, বাইরে থেকে পশু না আসা। কারণ দেশেই যথেষ্ট মজুদ রয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ইত্যাদি, যাতে কোনোভাবেই সম্পদ নষ্ট না হয়।

একথা সত্যি, গত বছরে ব্যাপারে অভিজ্ঞতা তেমন ভালো নয়। সঠিক মূল্য পাননি বলে অনেকে কাঁচা চামড়া ফেলে দিয়েছেন, মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন ধরনের খবর পাওয়া গিয়েছিল। এবার যাতে এর পুনরাবৃত্তি না হয়, সে কারণে সংশ্লিট সব মহল যথেষ্ট তত্পর ছিল। পর্যন্ত যতটুকু খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে চামড়া নষ্ট হয়েছে এমন খবর পাওয়া যায়নি।

তবে এখনো সংশয় যেটা রয়েছে, তা হলো মূল্য নিয়ে। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন অপেক্ষা করে থাকেন থেকে যাতে কিছু আর্থিক সুবিধা তারা পান। বছর সংগত কারণে কোরবানি কম হয়েছে। মৎস্য প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত বছর কোরবানির জন্য তৈরি পশুর তুলনায় বছর তার পরিমাণ ১১ দশমিক মিলিয়ন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার মূল্য ঢাকায় ৩৫-৪০ টাকা প্রতি স্কয়ার ফুট, ঢাকার বাইরে এর দাম ধার্য হয়েছে ২৮-৩২ টাকা। অন্যদিকে ছাগলের চামড়া প্রতি স্কয়ার ফুট ১৩-১৫ টাকা, ছাগীর চামড়ার মূল্য ১০-১২ টাকা। মূল্য দেশের সর্বত্র মেনে চামড়ার কেনা-বেচা হবে বলে ধারণা করা হয়। বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের তথ্যমতে, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচা চামড়ার দাম তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। চাহিদা সরবরাহের ভিত্তিতে দাম নির্ধারিত হয়। তাই সঠিক তুলনা সম্ভব নয়। তবে এটা ঠিক যে কাঁচা চামড়ার মূল্য অতীতে অনেক বেশি ছিল। যেমন ২০১৩ সালে গরুর চামড়া প্রতি স্কয়ার ফুট ছিল ৮৫-৯৫ টাকা এবং ছাগলের চামড়ার মূল্য ছিল ৫০-৫৫ টাকা। ঢাকার বাইরে এর দাম ছিল ৭৫-৮০ টাকা। ২০১৭ সালে এটি কমে দাঁড়ায় ৫০-৫৫ টাকা এবং ২০-২২ টাকা আর ঢাকার বাইরে ছিল ৪০-৪৫ টাকা। খাতের উদ্যোক্তাদের মতে, আগে চামড়া মানেই লবণযুক্ত চামড়াকেই বোঝানো হতো। ২০১৮-১৯ সময়ে বিষয়টি পরিবর্তন হয়, অর্থাৎ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা লবণ ছাড়াই দ্রুত মুনাফার জন্য এবং লবণের দামের সাশ্রয়ের জন্য বড় মহাজনের কাছে কাঁচা চামড়া পৌঁছে দিতে চান কিছু নগদ লাভের জন্য, যা ক্ষেত্রবিশেষে লবণযুক্ত বা মুক্তও হতে পারে।

পশুর চামড়ার ব্যাপারে গুণগত মান সংরক্ষণ একটি বিশেষ ব্যাপার। এদিকে লক্ষ রেখে যত দ্রুত লবণ দেয়া যায় ততই মঙ্গল। অর্থাৎ কোরবানির ঘণ্টার মধ্যে যদি লবণ দেয়া যায় সেটাই ভালো। কোরবানির ঈদের আগে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সভায় কিন্তু এটি আলোচনায় এসেছিল এবং এটাও বলা হয়েছিল যে লবণের কোনো ঘাটতি নেই, তাই আমদানির দরকার নেই। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বলছেন লবণের দাম বেড়ে গেছে, তাই কিছুটা প্রক্রিয়াকৃত চামড়ার দাম বেশি পড়ে যাচ্ছে। ৭৫ কেজি একটি লবণের বস্তায় ২০০-৩০০ টাকা বেড়ে কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা ৯০০ টাকায় পৌঁছেছে, যা এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর জন্য মোটেও সুখবর নয়। অথচ ক্ষার লবণের দাম থেকে ১০ টাকার বেশি হওয়া কোনোভাবেই উচিত নয়। সেই মতে, একটি বড় গরুর জন্য ১০ থেকে ১২ কেজি লবণ দরকার হয়, যার দাম ১২০ টাকা, যিনি লাগাবেন তার মজুরি ৩০ টাকা ধরে মোট ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা। সে হিসাবে একটি মোটামুটি মাঝারি থেকে বড় গরুর চামড়া লবণ যুক্ত করার মূল্য প্রাথমিকভাবে ২০০-২৫০ টাকা হতে পারে। তারপর বিভিন্ন হাতবদলের মাধ্যমে দাম বেড়ে যেতে থাকে।

কোনো কোনো ক্ষেত্রে বড় আকারের গরুর মোট চামড়ার পরিমাণ প্রায় হাজার থেকে হাজার ২০০ স্কয়ার ফুট হতে পারে। তবে বাংলাদেশে বেশির ভাগ গরুই হাজার থেকে হাজার ২০০ স্কয়ার ফুটের মধ্য দেখা যায়। চামড়ার অনেকটা অংশ ব্যবহারযোগ্য করা যায় না, তাহলে একটি গরুর চামড়ার মূল্য অন্ততপক্ষে হাজার ৫০০ থেকে হাজার ৬০০ টাকা হওয়া দরকার এবং ছাগলের ক্ষেত্রে এটা অন্তত ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা হতে পারে। কিন্তু ফড়িয়াদের মুখে যা জানা গেল, তাদের ৭০০-৮০০ টাকা খরচ পড়ছে কিন্তু সে তুলনায় তারা দাম পাচ্ছেন না।

সারা পৃথিবীতেই কিন্তু পশুর ফার্মের সংখ্যা বেড়েছে। যেমন বাংলাদেশেও এটা বেড়েছে। চামড়া  প্রক্রিয়াকরণ একটি ব্যয়বহুল এবং টেকনিক্যাল বিষয়, যে কারণে বিষয়ে সঠিক ধারণা জ্ঞান না থাকলে সঠিকভাবে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে ভালো দাম পাওয়া যায় না। এছাড়া রয়েছে পরিবেশ, প্রকৃতি এবং অন্যান্য বিষয়। পৃথিবীর অনেক দেশ স্বেচ্ছায় চামড়া প্রক্রিয়াকরণে অংশ নেয় না। মালায়েশিয়া একটি উদাহরণ। বাংলাদেশে যেহেতু একটি অগ্র পশ্চাৎ সংযোগ শিল্প খাত গড়ে উঠেছে কাঁচা চামড়াকে কেন্দ্র করে এবং এর সঙ্গে জড়িত ব্যাপক জনগোষ্ঠী অর্থনীতি, তাই আমাদের সংশ্লিষ্ট সব বিষয়কে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।

গুণগত মানের যে কথাটি বলছিলাম, এলাকাভিত্তিক পশুর চামড়ার মান বিশেষ কারণে প্রতিপালনের কারণে আলাদা হয়ে থাকে। যেমন সিলেট চট্টগ্রামের চামড়ার যে গ্রেইন, অর্থাৎ স্ট্রেংথ, তার থেকে অনেক ভালো মান পাওয়া যায় কুষ্টিয়া, পাবনা বা সিরাজগঞ্জের গরুর চামড়ায়। এসব জায়গায় যত বেশি খামার করা যায়, ভালো মানের চামড়ার সরবরাহ তত ভালো করা যায়। লালনপালনের বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এসব ক্ষেত্রে তাই দাম ভালো পাওয়া যায়। কোনো কোনো সময়ে পশু মোটাতাজাকরণের ফলে মাংস হয়তো ভালো পাওয়া যায় কিন্তু চামড়ার মান ভালো না- হতে পারে।

এরপর রয়েছে চামড়া পরিষ্কার করার ব্যাপারটি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে ব্যাপারে বারবার সাবধানতার কথা বলা হলেও এবং ব্যাপক প্রশিক্ষণের সুযোগ থাকলেও দেখা যায়, এক্ষেত্রে চর্বি বা কিছু মাংস থেকে যাওয়ার ফলে চামড়ায় দ্রুত পচন ধরে যায় এবং গুণগত মান নষ্ট  হয়। বাংলাদেশে মেকানাইজড স্লোটার হাউজ নেই বললেই চলে, যা চামড়ার মান রক্ষণে বিশেষ জরুরি। এছাড়া পশুর চামড়া আলাদা করার মেশিনও রয়েছে, যা চামড়ার গুণগত মান সংরক্ষণে সহায়ক হতে পারে। আমদের এখন পরিবেশ, প্রতিবেশ, ক্লাইমেট চেঞ্জের কথা মনে রাখতে হবে। তাই যত দ্রুত আধুনিকায়ন করা যায় ততই মঙ্গল।

বাংলাদেশ থেকে এরই মধ্যে কিছু মাংস রফতানি হয়, সসেজ, মিটবল এবং ধরনের আরো কিছু মূল্য সংযোজিত পণ্য তৈরি হচ্ছে। রফতানিও হচ্ছে, সেখানে কিন্তু মানুষের হাত ছাড়াই এসব কাজ হচ্ছে। ধীরে ধীরে সব স্তরে ব্যবস্থা চালু করা দরকার, যাতে মানুষের হাতের ব্যবহার কমে আসে, স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা সম্ভব হয় এবং এতে চামড়ার গুণগত মান বাড়বে।

এখানে বলতে চাই, খবরে যে ছবিগুলো আমরা দেখতে পাই, তা নিতান্তই করুণ। অপরিচ্ছন্ন, জীর্ণ, খালি পায়ে দিনমজুর অত্যন্ত নোংরা পরিবেশে হাঁটাচলা করছেন লালবাগ-পোস্তায় এবং অন্যান্য জায়গায়। তারা যে খুব শিগগিরই অসুস্থ হয়ে পড়বেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্ট খাতের উদ্যোক্তাদের অনুরোধ করতে চাই অন্তত খালি পায়ে এদের না অনুমোদন করা, হাতে অন্তত একটি গ্লোবসের ব্যবহার স্বাস্থ্যের কিছুটা হলেও সুরক্ষা দিতে পারে।

পশুসম্পদ আমাদের জাতীয় সম্পদ, খাতের সবকিছু কাজে লাগানো সম্ভব। কৃষির সার থেকে শুরু করে মাছ চাষের উপকরণ, প্রোটিনসবকিছুই থেকে পাওয়া সম্ভব। আগে গরুর খামারের জন্য প্রচুর জায়গার প্রয়োজন হতো, এখন কিন্তু তার আর দরকার হয় না। একজন কৃষকের দুটি গরু থাকলে তিনি তার সংসার চালিয়ে নিতে পারেন।

বছর সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে। চিন্তা করা হয়েছিল -রকম লকডাউন, শাটডাউন পরিবহন পরিস্থিতির মধ্যে কীভাবে সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু না, সঠিক জায়গায় সঠিক ব্যবস্থাটি নেয়া হয়েছে। জানা যায়১৯৫৭ সালের এসেন্সিয়াল কমোডিটির আইনের ধারার সঙ্গে মিল রেখে ২৩ জুলাই থেকে পরিচালিত লকডাউনের সময়ও কাঁচা চামড়া পরিবহনের বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে এবং তা এর আওতামুক্ত রাখা হয়েছে।

এখন বাকি রইল কিছু দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা, যা নিরসন করা না হলে মূল খাতটি সমস্যার মধ্য পড়ে যাবে। সেটি হলো, পুরো চামড়া শিল্পকে হাজারীবাগ থেকে সাভারে স্থানান্তরের সময় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের অপরিশোধিত ঋণ, যে কারণে ব্যাংক চামড়া ক্রয়ে সময়মতো ঋণ দিতে সবসময় অনীহা প্রকাশ করে, তার ওপর হাজারীবাগ এলাকাটিকে এখনো রেড জোনের মধ্যে রাখা হয়েছে, যে কারণে তারা এটিকে কোলেটারেল বা মর্টগেজ হিসেবে দেখিয়ে  ঋণ  নিতে পারছেন না। ফলে ইনস্টলমেন্ট দিতে পারছেন না, বাড়ছে নন-পারফর্মিং লোন। তাই তারা ফড়িয়াদের অর্থ সঙ্গে সঙ্গে পরিশোধ করতে পারছেন না। তাই খাতে একটি অনিশ্চয়তা রয়েছে।

তার ওপর রয়েছে সাভার ট্যানারির অবকাঠামোগত সমস্যা, সিইটিপির সঠিকভাবে ফাংশন না করা, কোরবানির পর অতিরিক্ত চামড়া প্রক্রিয়াকরণের ভার অবকাঠামো বইতে পারছে না। সলিড ওয়েস্ট ব্যবস্থাপনা সমস্যা, ডাম্পিং ইয়ার্ড, ক্রম রিকভারি ইউনিট, প্রি-ট্রিটমেন্টের ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের সচেতনতা ইত্যাদি এরই মধ্যে চিহ্নিত হয়েছে। যে ডাম্পিং ইয়ার্ড রয়েছে, তা দিয়ে হয়তো ৫০ টন বর্জ্য রাখা যাবে রকম দুটি বা তিনটি রয়েছে কিন্তু কোরবানির পর যে বিপুল পরিমাণ চামড়া পরিশোধন হবে, তার বর্জ্য কীভাবে ম্যানেজ হবে। এসব বিষয়ের একটি চেইন ইমপ্যাক্ট রয়েছে পুরো খাত ঘিরে। তাই পুরো বিষয়টিকে আলাদাভাবে না দেখে সব বিষয়কে সমন্বিতভাবে দেখা দরকার।

 

ফেরদাউস আরা বেগম: প্রধান নির্বাহী

বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড)


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫