করোনা সংক্রমণে মৃতের সংখ্যা ছয় সপ্তাহ পর পঞ্চাশের নিচে নেমেছে। গতকাল মৃত্যু হয়েছে ৪১ জন কভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর। সর্বশেষ গত ২৮ মার্চ এরচেয়ে কম রোগীর মৃত্যু হয়েছিল। ওইদিন ৩৫ জন করোনা সংক্রমিত রোগীর মৃত্যু হয়। গতকাল আরো ১ হাজার ৮২২ জনের শরীরে ভাইরাসটির সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বাংলাদেশে গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের তথ্য জানায় সরকার। চলতি বছরের মার্চে সংক্রমণের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হলে ২৯ মার্চ বেশকিছু বিধিনিষেধসহ ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করে সরকার। প্রথমবারের চেয়ে দ্বিতীয়বারের সংক্রমণের তীব্রতা খুব বেশি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৪২৮টি পরীক্ষাগারে ২১ হাজার ৫৮৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট ৫৫ লাখ ৮২ হাজার ২৬৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সর্বশেষ ১ হাজার ৮২২ জনের দেহে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় দেশে মোট কভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬৯ হাজার ১৬০ জনে। আর মারা গেছেন ১১ হাজার ৭৯৬ জন করোনা রোগী। সর্বশেষ বাড়ি ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরো ৩ হাজার ৬৯৮ জন সুস্থ হয়ে ওঠায় মোট সুস্থতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ২ হাজার ১৬৩ জনে।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
গতকাল মারা যাওয়া ৪১ জনের মধ্যে ২২ জন পুরুষ ও ১৯ জন নারী। তাদের মধ্যে ২৬ জন সরকারি হাসপাতালে, ১৪ জন বেসরকারি হাসপাতাল এবং একজন বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাদের বয়স বিবেচনায় ২৪ জন ষাটোর্ধ্ব ছিলেন। বাকিদের মধ্যে ১৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর এবং দুজনের ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ছিল। বিভাগভিত্তিক হিসাবে ২০ জন ঢাকার, ১৪ জন চট্টগ্রামের, দুজন করে ছয়জন রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেটের এবং একজন খুলনার বাসিন্দা ছিলেন। গতকাল পর্যন্ত মারা যাওয়া ১১ হাজার ৭৯৬ জনের মধ্যে ৮ হাজার ৫৬৬ জন পুরুষ এবং ৩ হাজার ২৩০ জন নারী।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপর মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে শতাধিক দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়লে গত বছরের ১১ মার্চ করোনাকে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৩তম ও মৃতের সংখ্যা বিবেচনায় রয়েছে ৩৭তম অবস্থানে।