ভার্চুয়াল পণ্য উন্মোচন

করোনা মহামারীর কারণে কি ভালো দর্শক পাচ্ছে টেক জায়ান্টরা?

প্রকাশ: এপ্রিল ২১, ২০২১

বণিক বার্তা ডেস্ক

২০২০ সালে মাইক্রোসফটের তত্কালীন প্রধান নির্বাহী স্টিভ বলমারের একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব জায়গায় ভাইরাল হয়ে যায়। তিনি স্টেজে এসে একটি শব্দ বারবার বলে যাচ্ছিলেন। গত ৩০ বছরে টেকনোলজি খাতে যেসব স্মরণীয় লাইভ অনুষ্ঠান ছিল, সেগুলোর মধ্যে এটি ছিল অন্যতম।

করোনা মহামারীর কারণে দীর্ঘ সময় ধরে দর্শকরা এমন অনুষ্ঠান দেখা থেকে বঞ্চিত। অ্যাপলের স্টিভ জবস থেকে শুরু করে লাইভ অনুষ্ঠানে যারা প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখতেন, তারা কেউই আর এখন অনুষ্ঠানে নেই। এর পরিবর্তে বর্তমানে অধিকাংশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ভার্চুয়াল ইভেন্টের আয়োজন করে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব অনুষ্ঠানে আগে থেকে এডিট করা জাঁকজমকপূর্ণ ভিডিও দেখানো হয়ে থাকে।

প্রযুক্তি ভাষ্যকার জ্যাসন স্নেল বলেন, আমরা সবাই তাদের লাইভেই দেখি, কিন্তু সেগুলো আসলে লাইভ নয়। এসব ভিডিও আগে থেকেই রেকর্ড করে রাখা হয়। বলতে গেলে এগুলো ইউটিউবের প্রিমিয়ারের মতো।

সম্প্রতি অ্যাপল তাদের নতুন কিছু আইপ্যাড এবং হোম অ্যাপ্লায়েন্সের কিছু পণ্য বাজারজাত করতে যাচ্ছে। এসব পণ্যও ডব্লিউডব্লিউডিসির ডেভেলপারদের কনফারেন্সে রেকর্ডেড কি-নোট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে উন্মুক্ত করা হবে।

ফ্রিল্যান্স আইওএস ডেভেলপার ইশ শাবাজ বলেন, গত বছর তারা যে কনফারেন্স করেছিল, সেটা ছিল অন্যতম সেরা একটি আয়োজন। ২০১৫ সাল শাবাজ ডব্লিউডব্লিউডিসির কনফারেন্সে যোগ দিয়ে আসছিলেন। তিনি আরো বলেন, অ্যাপলের ইভেন্টগুলোতে তিনি যেতে পারলেও মেইন রুমে প্রবেশ করার সুযোগ পেতেন না।

ইন্ডাস্ট্রি গবেষক ক্যারোলিনা মিলানেসি বলেন, ঘরে বসে যারা অ্যাপলের লাইভ অনুষ্ঠান দেখছেন তারা ঘোর সমর্থক। কিন্তু অনুষ্ঠানের সঙ্গে তারা নিজেদের একত্রিত অনুভব করেন না। তবে আগে থেকে রেকর্ড করা ভিডিওর একটি সুবিধা হচ্ছে, প্রধান নির্বাহী টিম কুক এখন সবার সঙ্গেই আলাদা করে কথা বলছেন এমন অনুভূতির সৃষ্টি হয়।

রেকর্ডেড ভিডিও ফরম্যাট পছন্দ করার পেছনে আরো কিছু কারণ রয়েছে। এর একটি কারণ হচ্ছে, লাইভ অনুষ্ঠানে যদি কোনো বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তাহলে সেটা সেখানেই সমাধান করতে হয়। কিন্তু রেকর্ডেড ভিডিওতে এমন সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, টেসলা সাইবারট্রাক এনেছিল যেটির জানালাকে তারা আনম্যাশেবল বা ভাঙ্গা সম্ভব নয় বলেছি। যদিও মেটাল বলের সংস্পর্শে আসার পর জানালায় বিকট শব্দের সৃষ্টি হয়েছিল।

অ্যাপল মূলত ভালোমানের সুন্দর ইলেকট্রনিক পণ্য বাজারজাত করতেই আগ্রহী। তাই ২০১০ সালে যখন ওয়াই-ফাই সমস্যার কারণে স্টিভ জবসের আইফোন -এর ডেমো ক্র্যাশের মতো ঘটনা অ্যাপল জনসম্মুখে আনতে চায় না।

এছাড়াও লাইভে অনুষ্ঠান করা অনেক ব্যয়বহুল এবং মানসিক চাপের সৃষ্টি করে। সব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীরা সাবলীলভাবে কথা বলতে পারদর্শী না। তাই অটো কিউর মাধ্যমে আগে ভিডিও রেকর্ড করাকেই অনেকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। অনেক দিক থেকে এটা লাইভ অনুষ্ঠানকে এড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যক্ষ প্রমাণ।

ভার্চুয়াল ইভেন্টে সাংবাদিকরা আগের মতো পণ্যের রিভিউ দিতে পারেন না। ব্যাপারে মিলানেসি বলেন, ভিডিও অনুষ্ঠানে আপনি সরাসরি ডিভাইসটি ধরে দেখতে পারছেন না, আর অ্যাপলের কাছে এটাই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রযুক্তি বিষয়ক সাংবাদিক স্টিভেন একুইনো বলেন, অ্যাপল যদি তাদের নতুন কোনো পণ্যের গুণগান করতে চায়, তবে তাদের উচিত স্টেজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা। এতে করে ব্যবহারকারীরা পণ্যের মান সম্পর্কে জানাতে পারবে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫