উন্নয়নশীল দেশগুলোয় টিকাদান কার্যক্রম

২০০ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি বিশ্বব্যাংকের

প্রকাশ: এপ্রিল ১১, ২০২১

বণিক বার্তা ডেস্ক

কভিড-১৯ মহামারীতে নিমজ্জিত অর্থনীতিকে টেনে তুলতে লড়াই করছে পুরো বিশ্ব। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে টিকাদান কার্যক্রমকে। এক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলো দ্রুত টিকার সরবরাহ পেলেও পিছিয়ে আছে উন্নয়নশীল অনুন্নত দেশগুলো। মহামারীর শুরুর পর থেকে দেশগুলোর সহায়তায় এগিয়ে এসেছে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলো। এবার উন্নয়নশীল দেশগুলোর টিকাদান কার্যক্রম এগিয়ে নিতে ২০০ কোটি ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠী চলতি মাসের শেষ নাগাদ প্রায় ৪০টি উন্নয়নশীল দেশে অর্থায়ন দেবে। বিশ্বব্যাংকের অপারেশনস বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ তথ্য জানিয়েছেন। খবর রয়টার্স।

বিশ্বব্যাংকের এক ফোরামে ভ্যান ট্রটসেনবার্গ জানিয়েছেন, বিশ্বব্যাংক স্বল্প মধ্যম আয়ের দেশগুলোয় কভিড-১৯ টিকা উন্নয়ন, বিতরণ উৎপাদনের জন্য সামগ্রিকভাবে হাজার ২০০ কোটি ডলার তহবিল সরবরাহ করছে। তহবিল থেকেই উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ২০০ কোটি ডলার সহায়তা দেয়া হবে।

গত শুক্রবার ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কমিটির এক বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস বলেন, চলতি বছরের মাঝামাঝি নাগাদ টিকা কেনার জন্য আরো ৫০টি দেশকে ৪০০ কোটি ডলারের সহায়তা দিতে পারব বলে আশা করছি। তবে ওই বৈঠকে জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ টিকাদান কার্যক্রমের মধ্যে এক ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে টিকাদান কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নেয়া প্রয়োজন। উন্নয়নশীল বিশ্ব যদি টিকাদানের গতি বাড়াতে না পারে, তবে সহায়তা দেয়ার মূল উদ্দেশ্য ব্যর্থ হতে পারে।

এর আগে বিশ্বব্যাংক গত জানুয়ারির শেষ দিকে টিকাদান কার্যক্রমে পিছিয়ে থাকা আফ্রিকার দেশগুলোকে হাজার ২০০ কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছিল। জরুরি টিকাদান কার্যক্রমের জন্য কঙ্গো, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, তিউনিসিয়া, এসওয়াতিনি, ক্যাবো ভার্দেসহ আফ্রিকার ২১টি দেশে অর্থায়ন দেয়া হয়।

এদিকে ব্লুমবার্গের ভ্যাকটিস ট্র্যাকারের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে কভিড-১৯ টিকা সরবরাহের মধ্যে ৪০ শতাংশই গেছে ধনী দেশগুলোয়। যদিও দেশগুলো বৈশ্বিক জনসংখ্যার মাত্র ১১ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে। অন্যদিকে স্বল্পোন্নত ১১ শতাংশ দেশ মাত্র দশমিক শতাংশ টিকা পেয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিওএইচও) মহাপরিচালক টেড্রোস অ্যাডহ্যানম গেব্রেইসাস বলেন, ভাইরাসটি এভাবে ছড়িয়ে পড়তে এবং পরিবর্তন হতে থাকলে বিদ্যমান টিকাগুলো অকার্যকর হতে পারে। কারণে যে দেশগুলোয় ব্যাপকভাবে টিকাদান কার্যক্রম চলছে, সে দেশগুলোও সুরক্ষিত থাকবে না। বিদ্যমান টিকা ভাইরাসটির নতুন রূপগুলোর সংক্রমণ রুখতে ব্যর্থ হলে শতভাগ টিকা প্রয়োগ করা দেশেও পুনরায় ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। এজন্য পুরো বিশ্বে একযোগে গণটিকাদান কার্যক্রম চালানো প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।

ডব্লিওএইচওর প্রধান বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মাধ্যমে টিকার বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের মালিকানা ত্যাগ করে কভিড-১৯ টিকার উৎপাদন বৃদ্ধি এবং সরবরাহ ভাগাভাগি করে নিতে আরো রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, টিকার বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ ভাগাভাগি না করে উৎপাদন আটকে রাখা হয়েছে। একটি ছোট ঘরে হাতি আটকে রাখার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে। অথচ কভিড-১৯ মহামারী জরুরি পরিস্থিতি ছিল।

টেড্রোস প্রশ্ন তোলেন, আমরা আমাদের জীবদ্দশায় ধরনের কোনো জরুরি পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি। সময়ে আমরা যদি টিকা তৈরির প্রযুক্তি ভাগাভাগি করে নিতে না পারি, তাহলে আর কখন পারব? এসব বাধা দূর করার জন্য আমাদের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫