কলিমউল্লাহর অভিযোগ অসত্য, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন: শিক্ষা মন্ত্রণালয়

প্রকাশ: মার্চ ০৫, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক . নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেছেন, শিক্ষামন্ত্রীর আশ্রয়, প্রশ্রয় আর আনুকূল্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আজকের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তা না হলে এমন ন্যক্কারজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি পাল্টা অভিযোগ তোলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে অনিয়ম, দুর্নীতি, অসংগতি নিয়ে ইউজিসির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। এদিকে সংবাদ সম্মেলনের পর এক বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কলিমউল্লাহর উত্থাপিত অভিযোগ অসত্য, বানোয়াট, ভিত্তিহীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

. কলিমউল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ইউজিসির প্রতিবেদনের সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব শিক্ষামন্ত্রীর। তার পরামর্শে ইউজিসির কমিটি এমন আচরণ করেছে। মন্ত্রীর অফিস থেকে তদন্ত প্রতিবেদনের খণ্ডিত অংশ প্রকাশ করা হয়েছে। একটা তকমা আমাদের ঘাড়ে দিয়ে দেয়ার জন্য এসব করা হচ্ছে। এটি ন্যক্কারজনক রাজনৈতিক অপকৌশল। সর্বোচ্চ শিক্ষাঙ্গন ধরনের হীন রাজনীতি করার জায়গা না।

চাঁদপুর-কুমিল্লা অঞ্চলের স্থানীয় রাজনীতিও এর পেছনে দায়ী বলে অভিযোগ করেন . কলিমউল্লাহ। তিনি বলেন, বিষয়টিও হয়তো প্রচ্ছন্নভাবে কাজ করেছে। এমন চিন্তার বহিঃপ্রকাশ হওয়া সঠিক বলে মনে করি না। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকেও অবহিত করেছি। পর্যন্ত আমি যা কিছু করেছি প্রধানমন্ত্রীর শ্রুতি নির্দেশনা নিয়েই করেছি।

কলিমউল্লাহ বলেন, ইউজিসির তিন সদস্যের যে তদন্ত কমিটি ক্যাম্পাসে গিয়েছিল, তার আহ্বায়ক ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক . মুহম্মদ আলমগীর আগের ভিসির আমলে সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন। তিনি শিক্ষামন্ত্রীর এলাকার মানুষও। তদন্ত কমিটি আগের ভিসির দায় আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন। তারা দায়সারাভাবে কাজ করেছেন। মন্ত্রীর নির্দেশেই এমন প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। ইউজিসির প্রতিবেদন আমরা প্রত্যাখ্যান করি, এটি অবাঞ্ছিত। এর দায়দায়িত্ব ইউজিসিও এড়াতে পারে না। ইউজিসির দেউলিয়াপনার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি কেন হলো?

ক্যাম্পাসে না থাকার ব্যাপারে তিনি বলেন, আমাকে পাওয়া যায় না ঘেরাও করার জন্য। আমি সাবেক ভিসির মতো ঘেরাওয়ের শিকার বা সিটিং ডাক হতে রাজি নই। আমি প্রতিদিন ২০-২২ ঘণ্টা কাজ করছি। বিশ্ববিদ্যালয় যে এখনো ঠিকমতো চলছে, এটি আমার পরিশ্রমের কারণে। ক্যাম্পাস ঢাকা দুই স্থানেই থাকি আমি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সংসদে পাসকৃত আইনে বলা আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের যিনি রেজিস্ট্রার, তার জন্য এটি আবাসিক দায়িত্ব। তাকে সার্বক্ষণিকভাবে ক্যাম্পাসে বাস করতে হবে। কিন্তু উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষের এটি আবাসিক দায়িত্ব নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন তাকে নিয়োগদানের শর্তে উল্লেখ করা বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্বক্ষণিক থাকতে হবে দুটি সাংঘর্ষিক বলেও মত দেন উপাচার্য। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে পরিচিত করতে ব্র্যান্ডিং করতে সব সময় আমরা আইডি কার্ড পরিধান করি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য: এদিকে কলিমউল্লাহর তোলা অভিযোগের জবাব দিয়ে বিবৃতি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ইউজিসি একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, তদন্ত প্রক্রিয়ার কোনো পর্যায়ে মন্ত্রণালয় বা মন্ত্রীর পক্ষ থেকে কোনো ধরনের প্রভাব বিস্তারের সুযোগ নেই, -সংক্রান্ত কলিমউল্লাহর অভিযোগ অসত্য, বানোয়াট, ভিত্তিহীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বক্তব্য দিয়েছেন, যা নিতান্তই অনভিপ্রেত। কলিমউল্লাহর উত্থাপিত অভিযোগ খণ্ডন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, ব্যক্তিগত আক্রমণ করে শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে কলিমউল্লাহ যে বক্তব্য রেখেছেন, তা শুধু অনাকাঙ্ক্ষিত দুঃখজনকই নয়, নিতান্তই রুচিবিবর্জিত।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫