নভেল করোনাভাইরাস মহামারীতে বিপর্যস্ত বিশ্ব। দেশে দেশে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছে। যদিও আর্থিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম বেশ ভঙ্গুর আর অসমান। এমন অবস্থায় বিশ্বের নিম্ন আয়ের দেশগুলোর জন্য সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করল জি২০ গ্রুপভুক্ত উন্নত ও উন্নয়নশীল ২০ দেশ। তাদের মতে, এ সময় আর্থিক সাহায্য ও প্রণোদনা প্রত্যাহার করা হবে অপরিপক্ব এক সিদ্ধান্ত। খবর কিয়োদো নিউজ।
ভার্চুয়াল বৈঠকের পর ইতালির অর্থমন্ত্রী ড্যানিয়েলে ফ্রাঙ্কো জানিয়েছেন, কভিড-১৯ মহামারী নিয়ে বৈশ্বিক সংকট চলাকালে যখন টিকার সমবণ্টন আরেকটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে তখন তা মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সমন্বয় বৃদ্ধি করতে সম্মত হয়েছে গ্রুপটি।
জি২০ গ্রুপের বর্তমান চেয়ারম্যান ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি। তারই প্রতিনিধি হিসেবে শুক্রবার অনলাইন প্রেস কনফারেন্সে ইতালির অর্থমন্ত্রী বলেন, কভিড-১৯ মহামারী অপেক্ষাকৃত দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলোকে গুরুতরভাবে আঘাত করেছে। এতে উন্নয়ন সম্ভাবনা ঝুঁকির মুখে পড়ে গেছে, বিশেষ করে আফ্রিকার দেশগুলোয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন দায়িত্ব নেয়ার পর এই প্রথম বৈঠকে বসলেন জি২০ গ্রুপের অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নররা। বাইরের পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘আমেরিকা ফার্স্ট’
নীতি অবলম্বন করায় বহুজাতিক সম্পৃক্ততা প্রায়ই বর্জন করেছিলেন। বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্পের বিতর্কিত সব নীতি থেকে সরে এসেছেন।
মহামারীকে অতিক্রম করে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের কাজে বহুজাতিক সমন্বয় ও সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে আশার সঞ্চার করেছে টিকাদান কর্মসূচি। নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার রুখতে ২০২০ সালে দেশে দেশে কঠোর লকডাউন চলছিল, ফলে ওই সময় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থমকে গিয়েছিল; যা এ বছর ৫ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল।
জাপানের অর্থমন্ত্রী তারো আসো বলেন, অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে এমনিতেই পিছিয়ে নিম্ন আয়ের দেশগুলো, এরপর টিকাদান কর্মসূচিতে ধনী দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবধান আরো বাড়ছে। এ কারণে আমি জি২০ জোটকে আরো ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিম্ন আয়ের দেশগুলোকে সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছি।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এ মাসের শুরুর দিকে জি২০ দেশগুলোকে আহ্বান জানান, যেন তারা বৈশ্বিক টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে একটি মহাপরিকল্পনা করেন। তিনি মনে করিয়ে দেন এ মুহূর্তে কভিড-১৯ টিকার ৭৫ শতাংশই দখলে রয়েছে মাত্র ১০টি দেশের এবং ১৩০টি দেশে এখনো কোনো টিকা পৌঁছেনি।
জি২০ জোটে রয়েছে আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, ব্রিটেন, কানাডা, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, মেক্সিকো, রাশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।