গৃহস্থালী কাজের জন্য সাবেক স্ত্রীকে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ নিয়ে চীনে তোলপাড়

প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২১

বণিক বার্তা অনলাইন

সংসার করার সময় ‍গৃহস্থালী কাজের মজুরি হিসেবে সাবেক স্ত্রীকে ৮ হাজার ডলার পরিশোধের জন্য স্বামীকে নির্দেশ দিয়েছেন চীনের একটি আদালত।  দেশটির ইতিহাসে এই রায় একটি মাইলফলক।  তবে এ নিয়ে দেশজুড়ে চলছে পক্ষেবিপক্ষে বিতর্ক।  অনেকেই টাকার পরিমান নিয়ে আপত্তি তুলছেন।

চীনের নতুন দেওয়ানি আইন চলতি বছর থেকে কার্যকর হয়েছে।  এ আইন অনুযায়ী, বিবাহ বিচ্ছেদের সময় স্ত্রী সংসারকালীন গৃহস্থালী কোনো কাজ যদি বিরক্তিকর ও ক্লান্তিকর ছিল বলে মনে করে থাকেন তাহলে সেই কাজের বিনিময়ে তিনি ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারেন।

বিবাহ বিচ্ছেদ করা স্ত্রী ওয়াং বেইজিংয়ের একটি আদালতে তার অভিযোগে বলেছেন, তার পাঁচ বছরের সংসারে সন্তানদের দেখাশোনার পাশাপাশি ঘরের সব কাজ করতে তাকে একা করতে হয়েছে। তার স্বামী চেন চাকরি ছাড়া আর কোনো কাজে কখনো হাত দেননি। 

ওয়াং সন্তান লালনপালন এবং গৃহস্থালী কাজের জন্য অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন।  আদালতের নথিতে জানা যাচ্ছে, গত ৪ ফেব্রুয়ারি তিনি এ অভিযোগ দায়ের করেন। 

আদালত রায়ে বলেছেন, গৃহস্থালীর অতিরিক্ত কাজের ক্ষতিপূরণ দাবি করার অধিকার রাখেন ওয়াং।  তিনি এর বিনিময়ে ৫০ হাজার ইউয়ান (৭ হাজার ৭০০ ডলার) পাবেন সেই সঙ্গে সন্তানদের একক অভিভাবকত্বের পাশাপাশি ভরণপোষণ বাবদ প্রতিমাসে আরো ২ হাজার ইউয়ান তাকে দিতে হবে।

কিন্তু স্থানীয় একটি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ওয়াং মূলত ১ লাখ ৬০ হাজার ইউয়ান ক্ষতিপূরণ দাবি করেছিলেন। এরপরই চীনজুড়ে বিতর্কের ঝড় শুরু হয়েছে।  আদালতকেও অনেকে তুলোধুনো করছেন।  তারা বলছেন, একজন নারীর গৃহস্থালীর কাজের মজুরি হিসেবে আদালত যেটি দিতে বলেছেন তা অতিনগণ্য। কেউ কেউ বলেছেন, একজন গৃহপরিচারিকা এর চেয়ে অনেক বেশি আয় করেন।

তবে গত সোমবার ওই রায় ঘোষণা করা একজন বিচারক স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ক্ষতিপূরণের টাকাটি নির্ধারণ করা হয়েছে: ওই দম্পতি কতোদিন সংসার করেছেন, ওয়াং সংসারের কী কী কাজ করেছেন, তার স্বামী চেনের আয় এবং স্থানীয় জীবনযাত্রার ব্যয়- এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে।

অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) হিসাবে, চীনা নারীরা সংসারে দৈনিক গড়ে চার ঘণ্টা ব্যয় করেন যার কোনো বিনিময় তারা পান না। এটি পুরুষদের তুলনায় আড়াইগুণ এবং বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে বেশি।

এদিকে বিবাহ বিচ্ছেদ আইন কিছুটা শিথিল করা এবং নারীদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বৃদ্ধির ফলে চীনে গত দুই দশকে বিবাহ বিচ্ছেদের প্রবণতা বেড়েছে।  এ নিয়ে বেইজিং যারপর নেই উদ্বিগ্ন। কারণ চীনা সরকার অভ্যন্তরীণ জনশক্তি সংকট মোকাবেলায় এক সন্তান নীতি থেকে সরে এসে একাধিক সন্তান নিতে নাগরিকদের উৎসাহিত করছে।

সূত্র: এএফপি


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫