সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণামতে, ২০২০-২১ অর্থবছরের সরকারি ব্যয় বেশ উদ্বেগজনক। ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের, বিশেষ করে এডিপি ও স্বাস্থ্য খাতে সরকারি ব্যয় তুলনামূলক খুবই কম।
গতকাল এক ওয়েবিনারে আয়োজিত সিপিডির ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম অন্তর্বর্তীকালীন পর্যালোচনায় এসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়। সিপিডির প্রতিবেদনে বলা হয়, এডিপি খাতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকারি ব্যয় হয়েছে ৭৬ দশমিক ৮ শতাংশ। কিন্তু ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে সে ব্যয়ের পরিমাণ মাত্র ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতে করোনাকালীন সময়েও মাত্র ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ সরকারি ব্যয় হয়েছে, যা করোনা-পূর্ববর্তী ২০১৯-২০ অর্থবছরে এর চেয়েও বেশি ছিল।
মহামারীর সময়ে অন্যান্য দেশে যেখানে সরকারি ব্যয় বেশি ছিল সেখানে বাংলাদেশের সরকারি ব্যয়ের পরিমাণ এত কম হওয়াকে উদ্বেগের চোখে দেখেছে সিপিডি। সিপিডির গবেষণামতে, এ ধরনের অতিমারীর ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আরো বেশি সরকারি ব্যয় বাড়ানো প্রয়োজন ছিল।
অর্থনীতিতে কভিডের প্রভাব নিয়েও সিপিডির গবেষণাপত্রে আলোচনা করা হয়। কভিডের প্রভাবে দেশের উৎপাদন ও কর্মসংস্থান ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কভিডের বড় প্রভাব পড়ে জিডিপিতে। মহামারীর আগে যেখানে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৮ দশমিক ২ শতাংশ, কভিড এসে তা নামিয়ে দেয় ৫ দশমিক ২ শতাংশে।
তবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি বিশেষ করে কৃষি, পোশাক খাত ও রেমিট্যান্স বেশ এগিয়েছে বলে মন্তব্য করা হয় প্রতিবেদনে। চালের দাম নিয়ন্ত্রণ এবং সামনের দিনগুলোয় সংকট কাটাতে এখনই ১০ লাখ টন চাল মজুদ করার ওপর জোর দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর এ সময়ে মজুদ চালের পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ টন, এ বছরে আছে মাত্র সাত লাখ টন। পর্যাপ্ত চাল মজুদ করতে না পারলে খাদ্য সংকট আশঙ্কার কথাও বলা হয় প্রতিবেদনে।
ওয়েবিনারে সিপিডির গবেষণাপত্রটি পড়ে শোনান সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। গবেষণাপত্রটি তৈরিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। এছাড়া সহযোগী গবেষকরা হলেন মুনতাসীর কামাল, সাইয়েদ ইউসুফ সাদাত, মো. আল-হাসান ও কামরুজ্জামান।