২০২১ সালে সম্ভাব্য গড় দাম

ব্রেন্টের ব্যারেল দাঁড়াবে ৫৫ ডলারে ডব্লিউটিআইয়ের ৫২ ডলারে

প্রকাশ: জানুয়ারি ২৭, ২০২১

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেল করোনাভাইরাসের মহামারী নিয়ে বিশ্বজুড়ে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। দেশে দেশে বাড়ছে সংক্রমণ। বাড়তির পথে রয়েছে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ নতুন করে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কঠোর করার চিন্তাভাবনা করছে। চীনেও করোনা পরিস্থিতি মারাত্মক রূপ নিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদায় ধস নামার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর পরও চলতি বছরের জন্য জ্বালানি পণ্যটির গড় দামের প্রাক্কলন বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটিশ বিনিয়োগ ব্যাংক বার্কলেস পিএলসি। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, করোনার চ্যালেঞ্জ ছাপিয়ে চলতি শীত মৌসুমে বাড়তি চাহিদা উত্তোলন সীমিত রাখা ২০২১ সালে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের গড় দাম বাড়াতে পারে। খবর অয়েলপ্রাইসডটকম নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ।

সম্প্রতি প্রকাশিত বার্কলেস ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুডের গড় দাম দাঁড়াতে পারে ৫৫ ডলারে। একই সঙ্গে ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) গড় দাম দাঁড়াতে পারে ব্যারেলপ্রতি ৫২ ডলারে। এর আগে প্রকাশিত আরেক প্রতিবেদনে বার্কলেস ব্যাংক চলতি বছর ব্রেন্ট ক্রুডের সম্ভাব্য গড় দাম ব্যারেলপ্রতি ৫৩ ডলার ডব্লিউটিআইয়ের গড় দাম ব্যারেলপ্রতি ৫০ ডলার প্রাক্কলন করেছিল। সেই হিসাবে দুই গ্রেডের জ্বালানি তেলের গড় দামের প্রাক্কলন ব্যারেলপ্রতি ডলার বাড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সম্ভাব্য মূল্যবৃদ্ধির পেছনে কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করেছে বার্কলেস ব্যাংক। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে করোনা মহামারী লকডাউনের জের ধরে দেশে দেশে পরিবহন খাত কার্যত স্থবির থাকায় জ্বালানি তেলের চাহিদায় রীতিমতো ধস নেমেছিল, যা জ্বালানি পণ্যটির রেকর্ড দরপতনের পেছনে অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। চলতি বছর বৈশ্বিক পরিবহন খাতে জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়বে। পরিস্থিতি জ্বালানি পণ্যটির মূল্যবৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।

একই সঙ্গে গত জানুয়ারিতে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন স্বতঃপ্রণোদিতভাবে কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব। সৌদি সরকারের ঘোষণা জ্বালানি পণ্যটি উত্তোলনকারী রফতানিকারক দেশগুলোকে একই নীতি নিতে উৎসাহ দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর জের ধরে ওপেক প্লাসের আওতায় চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক উত্তোলন সরবরাহ সীমিত হয়ে আসার জোরালো সম্ভাবনা দেখছে প্রতিষ্ঠানটি। এর প্রভাব পড়তে পারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজারে।

আশা জাগিয়েছে দেশে দেশে ভ্যাকসিন প্রকল্পের দ্রুত বিস্তার, যা মহামারীর রাশ টানতে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করছে। বার্কলেস ব্যাংক জানিয়েছে, এসব কারণে ২০২১ সালের দ্বিতীয়ার্ধ (জুলাই-ডিসেম্বর) নাগাদ আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম চাঙ্গা হয়ে ওঠার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। মূলত বিষয়টি মাথায় রেখে চলতি বছরের জন্য ডব্লিউটিআই ব্রেন্ট ক্রুডের গড় দামের প্রাক্কলন ব্যারেলপ্রতি ডলার বাড়ানো হয়েছে।

তবে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সম্ভাব্য মূল্যবৃদ্ধির পেছনে প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে বিশ্বজুড়ে করোনা পরিস্থিতির অবনতি। প্রাণঘাতী ভাইরাসের নতুন বিবর্তিত ধারা বা স্ট্রেইনের সংক্রমণ ইউরোপজুড়ে আতঙ্ক বাড়িয়েছে। অনেক দেশ নতুন করে লকডাউনে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ছাড়াও ইউরোপের দেশগুলো নাগরিকদের ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করছে। কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে সীমান্তে।

পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোয়। পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে নতুন করে লকডাউন শুরু হলে কিংবা দেশে দেশে বড় পরিসরে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে পরিবহন খাত ফের স্থবির হয়ে যেতে পারে। নতুন করে ধস নামতে পারে জ্বালানি তেলের চাহিদায়। এমনটা হলে বিশ্বজুড়ে ভ্যাকসিন প্রকল্প চালু থাকার পরও চলতি বছর আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা ফিকে হয়ে আসতে পারে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫