‘সুরক্ষা’-তে নিবন্ধন করে নিতে হবে করোনার টিকা

প্রকাশ: জানুয়ারি ২৬, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক

সুরক্ষা ওয়েবসাইটেনিবন্ধন ছাড়া নভেল করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। ডাটা সংরক্ষণ অ্যানালাইসিস করতেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এজন্য নিবন্ধন ছাড়া টিকা নেয়াকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন অনলাইন রেজিস্ট্রেশন-বিষয়ক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি।

এক প্রশ্নের জবাবে ডা. খুরশীদ আলম বলেন, ডিজিটাল ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমসুরক্ষা’-তে অনলাইনে নিবন্ধন ছাড়া টিকা দেয়া হবে না। নিবন্ধনের বাইরে টিকা দেয়াকে আমরা নিরুৎসাহিত করছি। আমাদের ডাটাগুলো সংরক্ষণ করতে হবে, অ্যানালাইসিস করতে হবে। অনলাইনের তথ্যগুলোকে পরবর্তী সময়ে অনেকগুলো কাজে আমাদের লাগাতে হবে।

কেন্দ্র পরিবর্তন করে টিকা দেয়ার সুযোগ থাকছে না জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, রেজিস্ট্রেশন অনুযায়ী আমরা কেন্দ্রে টিকা পাঠাব। সেক্ষেত্রে কেন্দ্র পরিবর্তন করে টিকার সুযোগ দিলে অনেক টিকা নষ্ট হবে। নির্ধারিত তারিখ কেন্দ্র অনুযায়ী টিকা গ্রহণের অনুরোধ করেন তিনি।

করোনার ভ্যাকসিনের মূল্য নিয়ে উত্থাপিত নানা প্রশ্নের জবাবে সরকারের মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস বলেছেন, ভারতের বাইরে বিশ্বে সবচেয়ে স্বল্পমূল্যে আমরা টিকা পাচ্ছি। এরই মধ্যে ৭০ লাখ টিকা প্রস্তুত ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সুরক্ষা অ্যাপসও প্রস্তুত।

ব্রিফিংয়ে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিক টিকা প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। ওই সময় সুরক্ষা ওয়েবসাইট সুরক্ষা অ্যাপসও উদ্বোধন করবেন। এরপর থেকে ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করে নাগরিকরা কভিড-১৯ টিকা পাবেন।

সভায় জানানো হয়, ২৭ জানুয়ারি থেকে পাঁচটি হাসপাতালে এবং আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশের হাজার ৩৪৪টি হাসপাতালের কেন্দ্রে নভেল করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া হবে। 

এক্ষেত্রে পাঁচ ধরনের নাগরিককে আপাতত টিকা না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গর্ভবতী নারী, উচ্চ ডায়াবেটিস আক্রান্ত, ১৮ বছরের নিচে শিশু, করোনা আক্রান্ত হওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে নিবন্ধনের বাইরে থাকা নাগরিকরা টিকা পাবে না। তবে পরিস্থিতির পরিবর্তন হলে সিদ্ধান্তও পরিবর্তন হতে পারে।

জানা গেছে, ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর থেকে নাগরিকরা কভিড-১৯-এর টিকা পাবেন। এজন্য সরকারের সুরক্ষা অ্যাপ সুরক্ষা ওয়েবসাইটে নিবন্ধন পরবর্তী প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।

ব্রিফিংয়ে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের প্রোগ্রামারদের একটি দল নিজস্ব উদ্যোগ ব্যবস্থাপনায় কভিড-১৯ ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমসুরক্ষাসফটওয়্যারটি প্রস্তুত করেছে। সফটওয়্যার সরকারের কোনো অর্থ ব্যয় ছাড়া প্রস্তুত করা হয়েছে এটি ব্যবহারের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে সরবরাহ করা হচ্ছে। নাগরিক নিবন্ধন টিকা প্রদানসহ ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সুরক্ষা সফটওয়্যারটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ব্যবহার করতে পারবে। সিস্টেমটির উন্নয়ন এবং পরিচালনায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি), এটুআই এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।

সেলফ রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে অনলাইনে নিবন্ধন ভ্যাকসিন কার্ড ডাউনলোডের ব্যবস্থা রয়েছে। এর মাধ্যমে ভ্যাকসিন গ্রহণ ভ্যাকসিন প্রদানের তথ্য অনলাইনের মাধ্যমে যাচাই মনিটরিং করা যাবে। টিকার দুটি ডোজ সম্পন্ন হওয়ার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে সুরক্ষা সিস্টেম থেকে অনলাইনের মাধ্যমে টিকা গ্রহণের সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে। জাতীয় পরিচয়পত্রের গেটওয়েপরিচয়’-এর মাধ্যমে নিবন্ধনকৃত ব্যক্তির পরিচয় যাচাই-বাছাই করা হবে। নিরাপদ নিবন্ধন নিশ্চিতকল্পে নিবন্ধনকৃত ব্যক্তির সেলফোন নম্বরে ওটিপি বা ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড প্রেরণের ব্যবস্থা রয়েছে। এসএমএসের মাধ্যমে নিবন্ধনকৃত ব্যক্তিকে টিকা প্রদানের তারিখ তথ্য প্রদান করা যাবে। নাগরিকের টিকার ডোজ গ্রহণ সম্পর্কিত তথ্য কিউআর কোড স্ক্যানের মাধ্যমে নেয়া সংরক্ষণের ব্যবস্থা আছে। এতে টিকা প্রদান সম্পর্কিত বিভিন্ন তালিকা, পরিসংখ্যান প্রতিবেদন প্রস্তুতের ব্যবস্থা আছে। জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর জন্মতারিখ ব্যবহার করে নিবন্ধন সম্পন্ন করা যাবে।

যেভাবে কাজ করবে সুরক্ষা ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম www.surakkha.gov.bd ওয়েব পোর্টালে প্রবেশ করতে হবে। নিবন্ধন বাটনে ক্লিক করে নাগরিক শ্রেণী (সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী, বেসরকারি স্বাস্থ্যকর্মী, বীর মুক্তিযোদ্ধা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সামরিক-আধাসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন কার্যালয়, গণমাধ্যমকর্মী, জনপ্রতিনিধি, সিটি পৌর কর্মী, ধর্মীয় প্রতিনিধি ইত্যাদি) নির্বাচন করে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর জন্মতারিখ দিতে হবে। তারপর যাচাই বাটনে ক্লিক করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচয় নিশ্চিত করতে হবে। পরিচয় যথাযথ হলে বাংলা ইংরেজিতে নাম ফরমে দেখা যাবে। দীর্ঘমেয়াদি রোগ, কোমরবিডি আছে কিনা হ্যাঁ অথবা না সিলেক্ট করতে হবে। নিবন্ধনকারী নাগরিকের পেশা সরাসরি কভিড-১৯ কাজের সঙ্গে জড়িত কিনা, তা নির্বাচন করতে হবে। যে সেলফোনে টিকার তথ্য ভেরিফিকেশন এসএমএস পেতে চান তা নিবন্ধনের সময় দিতে হবে। ফরমে বর্তমান ঠিকানা টিকা কেন্দ্র নির্বাচন করতে হবে। সব শেষে সেলফোনে প্রাপ্ত ওটিপি দিয়ে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। নিবন্ধন সম্পন্ন হয়ে গেলে টিকা কার্ড সংগ্রহ বাটনে ক্লিক করে কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। পরে নিবন্ধিত সেলফোন নম্বরে নির্ধারিত সময়ে এসএমএসের মাধ্যমে টিকা গ্রহণের তারিখ কেন্দ্র জানানো হবে। টিকা কেন্দ্রে যাওয়ার সময় প্রিন্টেড টিকা কার্ড জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি সঙ্গে নিতে হবে।

 


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫