ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা চলছে। এর জের ধরে ইরানের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি সংকুচিত হয়ে এসেছে। চাপ বেড়েছে দেশটির অর্থনীতিতে। তবে ইরান সরকারের দাবি, বিদায়ী বছরের শেষ দিকে এসে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে জ্বালানি তেল রফতানি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়িয়েছে তেহরান। যদিও জ্বালানি পণ্যটির রফতানির কোনো পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি ইরান। খবর রয়টার্স ও অয়েলপ্রাইসডটকম।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিজন জাঙ্গানেহ সম্প্রতি এক সাক্ষাত্কারে বলেন, ২০২০ সালের শেষের দিকে এসে ইরান থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। সদ্য সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়াদ শেষের আগে ক্রেতারা ইরানি জ্বালানি তেলের প্রতি বাড়তি আগ্রহ দেখিয়েছেন। এর জের ধরে ২০২০ সালের শেষের দিকে এসে নিষেধাজ্ঞাকালে জ্বালানি পণ্যটির রফতানি সর্বোচ্চে উন্নীত করা সম্ভব হয়েছে।
যদিও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশটি থেকে কী পরিমাণ অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি। এমনকি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পরও গত বছর ইরান থেকে কোন কোন দেশে জ্বালানি তেল রফতানি হয়েছে, সে তথ্যও প্রকাশ করা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, ভেনিজুয়েলা ও চীনের সঙ্গে বেনামে জ্বালানি তেল বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছে তেহরান।
ইরানের সঙ্গে সম্পাদিত ছয় জাতির পারমাণবিক চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্রত্যাহার করে নেন ট্রাম্প। এর পর পরই দেশটির বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। নিষেধাজ্ঞার আওতায় ও ট্রাম্পের চাপে জাপান, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়াসহ শীর্ষ ক্রেতারা ইরানি জ্বালানি তেল থেকে ধীরে ধীরে মুখ ফিরিয়ে নেয়। এখন জো বাইডেনের হাত ধরে ওয়াশিংটনের নতুন প্রশাসন বাতিল হয়ে যাওয়া এ চুক্তির বিষয়ে ভিন্নভাবে ভাবতে পারে।
এ বিষয়ে বিজন জাঙ্গানেহ বলেন, নতুন মার্কিন প্রশাসন যদি চুক্তিতে ফিরে আসে, তাহলে আমরা অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি ফের নিষেধাজ্ঞা-পূর্ববর্তী অবস্থানে উন্নীত করব। জ্বালানি পণ্যটির রফতানি প্রত্যাশার তুলনায় আরো দ্রুত বাড়বে। হারানো বাজার ফিরে পাওয়া নিয়ে ইরান মোটেও শঙ্কিত নয়।
এদিকে ইরান সরকারের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি ‘উল্লেখযোগ্য পরিমাণে’
বাড়ানোর দাবির সঙ্গে একমত নন এ খাতের বাজার বিশ্লেষকরা। তাদের ভাষ্য, ২০১৮ সালে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে ইরান থেকে প্রতিদিন গড়ে ২৮ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি হয়েছিল। বিদায়ী বছরে এর পরিমাণ দৈনিক গড়ে তিন লাখ ব্যারেলের নিচে নেমে এসেছে।