দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ঘন কুয়াশা

৯ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধে দুর্ভোগ চরমে

প্রকাশ: জানুয়ারি ২৩, ২০২১

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ

ঘন কুয়াশার কারণে টানা সাড়ে ঘণ্টা বন্ধ ছিল দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট। দীর্ঘ সময় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় পদ্মার দুই পারে আটকা পড়ে হাজারো যানবাহন। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী চালকরা। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় কুয়াশা কেটে গেলে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়।

ঘাট সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকেই নদীজুড়ে কুয়াশা পড়া শুরু হয়। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থেকে কুয়াশার ঘনত্ব। এক পর্যায়ে রাত ২টার পর দুর্ঘটনা এড়াতে বন্ধ রাখা হয় গুরুত্বপূর্ণ রুটে ফেরি চলাচল। ঘন কুয়াশার কারণে যানবাহন নিয়ে মাঝ নদীতে আটকা পড়ে তিনটি ফেরি। এতে তীব্র ঠাণ্ডায় চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী চালকরা।

গতকাল সকালে সরেজমিনে পাটুরিয়া পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পাটুরিয়া ঘাটে শতাধিক যাত্রীবাহী কোচ তিন শতাধিক পণ্যবোঝাই ট্রাক আটকা পড়ে। একই সঙ্গে দৌলতদিয়া ঘাটে আরো তিন শতাধিক যানবাহন পারের অপেক্ষায় আটকে পড়ে। বেলা সাড়ে ১১টায় কুয়াশার প্রকোপ কমে গেলে পুনরায় ফেরি চলাচল শুরু হয়।

ফরিদপুরগামী গোল্ডেন লাইন পরিবহনের যাত্রী শফি আলম বলেন, গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য রাত ১০টার দিকে ঢাকার গাবতলী থেকে বাসে উঠি। রাত ২টার দিকে পাটুরিয়া ঘাটের কাছাকাছি এসে বাসটি আটকা পড়ে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, ঘন কুয়াশার কারণে এরই মধ্যে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে বাসের মধ্যেই সারা রাত কাটিয়েছি।

সাকুরা পরিবহনের বরিশালগামী যাত্রী আইয়ুব আলী (৪০) বলেন, রাত ৩টার দিকে নৈশকোচে চড়ে পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছি। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে নদী পার হতে পারিনি। আরো কতক্ষণ লাগবে তা- বলতে পারছি না।

কয়েকজন যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, ঘাট এলাকায় রাতে খাবার হোটেল খোলা থাকে না। সারা রাত অনেককে বিস্কুট-কলা খেয়ে থাকতে হয়েছে। এছাড়া ব্যবহার উপযোগী কোনো শৌচাগারও নেই। এতে নারী যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

ট্রাফিক পুলিশ ঘাটসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ সময় ফেরি চলাচল পারাপার বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় যানবাহনের তীব্র চাপ পড়েছে। গতকাল দুপুর ১২টা পর্যন্ত পাটুরিয়া প্রান্তে দেড় শতাধিক যাত্রীবাহী বাস এবং চার শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাকসহ অর্ধশত ছোট গাড়ি আটকা পড়ে পারের অপেক্ষায়।

বিআইডব্লিউটিসি আরিচা সেক্টরের এজিএম তানভির হোসেন জানান, মধ্যরাত থেকে কুয়াশার প্রকোপ বাড়তে থাকে। রাত ২টার দিকে এর তীব্রতা বেড়ে পুরো নৌপথ ঢেকে দেয়। এতে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। সময় মাঝ নদীতে আটকে পড়ে তিনটি ফেরি। বেলা সাড়ে ১১টায় কুয়াশা কমে গেলে ফেরি চলাচল শুরু হয়। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীবাহী পরিবহন পারাপার করানো হয়। তাই খুব কম সময়ের মধ্যেই যাটজট নিয়ন্ত্রণে আসে।

তিনি জানান, বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ১৬টি ফেরি চলাচল করছে। প্রত্যেক শীত মৌসুমেই ঘন কুয়াশার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হয় রুটে চলাচলকারীদের। ফেরি বন্ধ না থাকলে যানজট দেখা দিত না।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫