প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে গতি আনতে ব্যাংকগুলোকে বাধ্য করার তাগিদ

প্রকাশ: ডিসেম্বর ০৪, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলমান করোনা মহামারী গত মার্চ থেকে সব ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অচলাবস্থার সৃষ্টি করে। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে লাখ ২১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকার ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার। কিন্তু সাত মাস পার হয়ে গেলেও প্রণোদনার প্রায় অর্ধেকই বাস্তবায়ন হয়নি। তাই বাস্তবায়ন হার বাড়াতে ব্যাংকগুলোকে বাধ্য করার তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট মহল।

করোনা মোকাবেলা অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার নিয়ে গতকাল রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

কভিড-১৯ মোকাবেলা এবং টেকসই অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশ সরকারের নেয়া প্রণোদনা প্যাকেজ শীর্ষক সিরিজ মতবিনিময়ের দ্বিতীয় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। এতে কর্মসৃজন গ্রামীণ অর্থনীতি পুনরুজ্জীবন শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থ সচিব আবদুর রউফ তালুকদার।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে অর্থনীতিতে অনেক গতি এসেছে। তারপর প্রণোদনার অর্থ সরকার পাঠালেও তার একটা বড় অংশ উপকারভোগীদের কছে পৌঁছাচ্ছে না। ফলে অনেকেই এর উপকার ভোগ করতে পারছেন না। বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে অর্থ সচিব বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রণোদনার অর্থ আমরা পাঠাচ্ছি কিন্তু তার বড় একটা অংশ যাচ্ছে না। কারণ আমাদের চ্যানেলটা ব্যাংকিং। আমি কাউকে দোষ দেব না, এখানে অর্থ সচিব গভর্নর আছেন, ব্যাংকগুলো থেকে অনেকেই সহায়তা পাননি। কেন এটা হলো? আমাদের অর্থ ছিল, অর্থ দিয়েছি। আইন মানতে তারা বাধ্য, আইন আইনই, তা অসম্মান করা যাবে না। যদি কোনো ব্যাংক আপনার কথা না মানে, তাহলে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নিতে পারেন। কারণ আমরা সবাই একই পথের যাত্রী।

ফজলে কবির বলেন, বড় বড় প্রতিষ্ঠানের জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল তহবিল থেকে যে হারে ঋণ দেয়া হচ্ছে, সে হারে সিএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের ঋণ দেয়া যাচ্ছে না। সিএসএমই খাতের জন্য যে ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে, সেখান থেকে পর্যন্ত ঋণ দেয়া হয়েছে ৪১ দশমিক শূন্য শতাংশ। টাকার অংকে সেটা হাজার ২১৮ কোটি টাকা। ঋণ বিতরণে গতি আনতে আমরা হাজার কোটি টাকার ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম চালু করেছি।

অর্থ সচিব বলেন, করোনায় দুই ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। একটা হচ্ছে স্বাস্থ্য খাতের ক্ষতি, অন্যটা অর্থনীতির ক্ষতি। স্বাস্থ্য খাতের কী পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে, সে বিষয়টি নিয়মিত আপডেট দিচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। অর্থনীতিতে যে ক্ষতি হচ্ছে, সেটা নির্ধারণে আরো একটু সময় লাগবে। এটা এখনই বলা সম্ভব হবে না।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সিনিয়র ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, করোনাকালে গ্রামীণ অর্থনীতি বিশেষ করে কৃষি আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। কিন্তু সরকারের প্রণোদনার ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে কৃষক, প্রান্তিক উদ্যোক্তা সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। তাদের হাতে টাকা পৌঁছানো না গেলে কর্মসংস্থান হবে কীভাবে?


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫