ভ্যাকসিনের জন্য তাপমাত্রা কেন গুরুত্বপূর্ণ?

প্রকাশ: নভেম্বর ২২, ২০২০

বণিক বার্তা ডেস্ক

আবহাওয়া একটু শীতল হওয়ার সঙ্গেই দেশে দেশে ফের কভিড-১৯-এর সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। মহামারীজনিত ক্লান্তি, অর্থনৈতিক বাধা রাজনৈতিক বিভাজনের কারণে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মহামারী নিয়ন্ত্রণে সংগ্রাম করছেন। কিন্তু এখন এসে বিপরীত দিক থেকে আশার সঞ্চার করেছে ফাইজার মডার্নার মতো ভ্যাকসিনগুলোর শেষ ধাপের ট্রায়ালের ফল। দুটি ভ্যাকসিনই উচ্চমানের ভালো ফল দেখিয়েছে। এখানে দুটি ভ্যাকসিনই তৈরি হচ্ছে ম্যাসেঞ্জার বা এমআরএনএ দ্বারা। যা কিনা কভিড-১৯ রোধ করার ক্ষেত্রে উচ্চতর কার্যকারিতা দেখাতে পারে।

ভ্যাকসিনের প্রাথমিক সাফল্য এখন সাধারণ মানুষ এবং বিশেষজ্ঞদের প্রত্যাশাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষ করে তৃতীয় ধাপে পৌঁছার পর ভ্যাকসিনের সফলতা ছিল দুর্দান্ত। এক্ষেত্রে বিশেষ করে ফাইজার শেষ ধাপের চূড়ান্ত ট্রায়ালেও ৯০ শতাংশের অধিক সফলতার কথা বলেছে।

এমআরএনএ প্রযুক্তি নতুন নয়। এটা দেখা গিয়েছিল যখন সিনথেটিক এমআরএনএ প্রাণীদের মধ্যে ইনজেক্ট করা হয়, কোষ এখানে কাঙ্ক্ষিত প্রোটিন উৎপাদন করতে পারে। কিন্তু উন্নতি ছিল ধীর। এর কারণ কেবল এমআরএনএ বেশ অস্থিতিশীল এবং ছোট উপাদানে হ্রাস করা যায় বলেই না, বরং এটা সহজেই শরীরের ইমিউন প্রতিরক্ষা দ্বারা ধ্বংস করা যায়। যা একে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে বিতরণের অযোগ্য করে তোলে।

কিন্তু ২০০৫  সালে গবেষকরা বের করলেন কীভাবে এমআরএনএ ভ্যাকসিনকে স্থিতিশীল রাখা যাবে এবং ভ্যাকসিন হিসেবে বিতরণের জন্য ছোট ছোট কণায় প্যাকেজিং করা যায়। আশা করা হচ্ছে এমআরএনএ কভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রথম প্রযুক্তি ব্যবহার করছে, যা ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন দ্বারা অনুমোদিত হতে যাচ্ছে।

এক দশকের কাজের পর এমআরএনএ ভ্যাকসিন এখন মূল্যায়নের জন্য প্রস্তুত। বিশেষজ্ঞরা এখন অনিচ্ছাকৃত ইমিউন প্রতিক্রিয়ার দিকে চোখ রাখবেন, যা সহায়ক ক্ষতিকারক দুটোই হতে পরে। এমআরএনএ ভ্যাকসিন বিকাশের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জটি হচ্ছে তার সহজাত অস্থিতিশীলতা, যার ফলে এটি ফ্রিজিং তাপমাত্রার ঊর্ধ্বে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু বিতরণ মানুষকে ভ্যাকসিনেট করার জন্য ভ্যাকসিনের নতুন জাতের এখনো নজিরবিহীন ফ্রিজার পরিবেশ প্রয়োজন।

প্রশ্ন হচ্ছে সেই রেফ্রিজারেশন শর্তগুলো কেমন? ফাইজার বায়োএনটেক ভ্যাকসিনকে সর্বোত্তমভাবে মাইনাস ৯৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হবে। কিছুটা স্বাভাবিক রেফ্রিজারেশন তাপমাত্রায় পাঁচদিনের মধ্যে এটির অবনতি ঘটতে শুরু করবে।

বিপরীতে মডার্না বলেছে, তাদের ভ্যাকসিন শিপিং দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণের জন্য বাসায় অথবা মেডিকেলে ফ্রিজার তাপমাত্রায় (-২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ছয় মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যেতে পারে। সব মিলিয়ে তাপমাত্রা সংরক্ষণযোগ্যতা বিবেচনায় বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিনের সঠিক বিস্তৃতির জন্য ফাইজারের চেয়ে মডার্নার ভ্যাকসিনই অধিক উপযোগী বলে মনে হচ্ছে।

স্ক্রলডটইন


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫