জাবিতে নিরাপত্তা কর্মীকে ছাত্রের ‘মারধর’, বিচারের দাবিতে আল্টিমেটাম

প্রকাশ: নভেম্বর ১৫, ২০২০

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, জাবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্রের বিরুদ্ধে প্রধান ফটকে দায়িত্বরত এক নিরাপত্তা কর্মীকে মারধরের অভিযোগ এনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে কর্মচারীরা। অভিযুক্ত ছাত্রকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে প্রশাসনকে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে কর্মচারী ইউনিয়ন। 

আজ রবিবার সকালে কর্মচারী ইউনিয়নের এক কেবিনেট সভায় সকল সদস্যের উপস্থিতিতে এ ঘোষণা দেয়া হয়। সভা শেষে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পরিবহন চত্ত্বর থেকে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলে প্রায় শতাধিক কর্মচারী অংশগ্রহণ করে। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. শরীফ মিয়া বলেন, দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় একজন নিরাপত্তাকর্মীকে মারধর কোনোভাবেই কাম্য নয়। এই ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে। বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোনো কর্মচারী অফিস করবে না।

কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. সেন্টু খানের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মো. আব্দুর রহিম, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কালাম হাওলাদার এবং কর্মচারী ক্লাবের সাবেক সভাপতি ফেরদৌস রহমান। বক্তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাষ্ট্রীয় আইনে মারধরের বিচার দাবি করেন। 

মারধরকারী ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ৪৬ ব্যাচের মির্জা সোহাগ। তিনি শহীদ রফিক জব্বার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। অপরদিকে মারধরের শিকার নিরাপত্তা কর্মীর নাম আমিনুর রহমান। এ বিষয়ে মারধরের শিকার নিরাপত্তাকর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগপত্রে তিনি বলেন, প্রধান ফটকে দায়িত্বরত অবস্থায় বহিরাগত এক মেয়ে এসে আমার হাতে একটা ফোন ধরিয়ে দেয়। আমি তাকে সালাম দিলে ফোনের অপর প্রান্ত থেকে ওনাকে (বহিরাগত মেয়ে) ভেতরে যেতে দিতে বলা হয়। এ সময় আমি বলি বহিরাগত প্রবেশ নিষেধ আছে। তাই আমাদের সজল স্যারকে ফোন দিতে বলি। কিন্তু তিনি আমাকে হুমকি দিয়ে ফোন রেখে দেন। পরে কয়েকজনকে সাথে নিয়ে এসে আমাকে মারধর করেন। এক পর্যায়ে আমি ভয়ে রুমের ভিতরে ঢুকে যাই। কিন্তু তিনি আমাকে রুমের ভিতর থেকে বের করে এনেও মারতে থাকেন।

ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শামীম রেজা উপস্থিত ছিলেন বলে তিনি জানান।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী চারুকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শামীম রেজা বলেন, আমি তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হতে দেখেছি। তবে মারামারির কোনো ঘটনা দেখিনি। সে যখন মারতে যাচ্ছিল তার বন্ধুরা টেনে ধরেছিল। আমি শিক্ষক পরিচয়ে কথা বললে ছেলেটি ক্ষমা চায় এবং চলে যায়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্র সোহাগ বলেন, তাকে আমি আমার বান্ধবীকে ভেতরে ঢুকতে দিতে বললে সে (নিরাপত্তারক্ষী) ঢুকতে দেয় নাই। তাই সেখানে গিয়ে এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তার সাথে আমি বাকবিতান্ডায় জড়িয়ে পড়ি। তবে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, বন্ধ ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ করানোর জন্য ওই ছাত্র যা করেছে তা শৃঙ্খলাবিধির পরিপন্থী। আমরা আজকের মধ্যেই তদন্ত রিপোর্ট জমা দেবো। এরপর ডিসিপ্লিনারি বোর্ড ডেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫