বাইডেনের বড় চ্যালেঞ্জ মিত্রদের আস্থা ফিরে পাওয়া

প্রকাশ: নভেম্বর ১৫, ২০২০

বণিক বার্তা ডেস্ক

ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৩ নভেম্বরের নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানালে কী হবে, বিশ্বনেতাদের অনেকেই কিন্তু এরই মধ্যে বিজয়ী জো বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এমনকি সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোর শত্রু বনে যাওয়া চীনও আনুষ্ঠানিকভাবে বাইডেনের জয়কে স্বীকৃতি দিয়েছে। বিশ্বনেতারা কেবল অভিনন্দন জানিয়েই থেমে থাকেননি, বরং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আরো জোরদারের আশাবাদও ব্যক্ত করেছেন। অর্থাৎ তারা ধরেই নিচ্ছেন, ট্রাম্পের মতো খ্যাপাটে নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘ ঐতিহ্যের প্রতিফলন ঘটে, এমন পররাষ্ট্রনীতিই গ্রহণ করবেন বাইডেন।

হোয়াইট হাউজে প্রবেশের পর বৈদেশিক নীতিকাঠামো তৈরির ক্ষেত্রে বাইডেনের সামনে এমন কিছু চ্যালেঞ্জ আবির্ভূত হবে, যেগুলো ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও মোকাবেলা করতে হয়েছে। আবার বাইডেনের ডেমোক্রেটিক পূর্বসূরি বারাক ওবামার আমলেও এসব চ্যালেঞ্জ ছিল। এগুলোর মধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠা চীনকে মোকাবেলা করা এবং উত্তর কোরিয়ার, বিশেষ করে ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ কিম জং উনের হুমকি-ধমকির পাল্টা জবাব দেয়া। তবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের খ্যাপাটে আচরণের কারণে বিভিন্ন মিত্র দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে যে ঘুণ ধরেছে, তা সারিয়ে তোলা। একই সঙ্গে বাকি বিশ্বকেও বোঝাতে হবে যে তারা নির্দ্বিধায় যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আস্থা রাখতে পারে।

আরেকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। ডোনাল্ড ট্রাম্প তার চার বছরে বেশ কিছু বিধ্বংসী, বৈদেশিক সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর নীতি গ্রহণ সত্ত্বেও নির্বাচনে সাত কোটির বেশি মার্কিনের সমর্থন পেয়েছেন। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মার্কিনের মনোভাবও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ফলে বাইডেন তার পূর্বসূরির নীতি থেকে ইউটার্ন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে আগের অবস্থানে নিয়ে আসবেন, নাকি স্বল্প পরিসরে কিছু পরিবর্তন আনার মাধ্যমে ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান উভয় দলের সমর্থকদের মন রক্ষার চেষ্টা করবেন—সেদিকেই এখন নজর সবার।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের যেসব নীতি পাল্টানোর ক্ষেত্রে কংগ্রেসের অনুমোদন নেয়ার দরকার হবে না, বাইডেন সেগুলোয় হাত দিতে পারেন। তবে এ পরিবর্তন কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে, সেটাই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউরোপে কর্মরত একজন মার্কিন কূটনীতিক বলেছেন, আমাদের মিত্র দেশগুলো আশঙ্কা করছে, একটা সময়ে গিয়ে বাইডেন হয়তো উদারনীতি থেকে ইউটার্ন নিয়ে একের পর এক কঠোর পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করতে পারেন। বিশেষ করে যে পরিমাণ ভোট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঝুলিতে গেছে, সেটাই তাদের এমন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আরেকজন মার্কিন কূটনীতিক বলেছেন, স্বল্পমেয়াদে আমাদের মিত্রদের জন্য ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করাটা তুলনামূলক সহজ পদক্ষেপ হবে। এক্ষেত্রে কেবল ভালো গণতন্ত্রের স্বাভাবিক চর্চা চালিয়ে গেলেই হবে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে? 

সবাই জানে যে যুক্তরাষ্ট্র ট্রাম্পের নীতিতে ফিরে যেতে পারে। আর তাদের ভয়টা এখানেই।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫