কভিড-১৯-এ প্লাজমা থেরাপির প্রভাব সীমিত

প্রকাশ: অক্টোবর ২৪, ২০২০

বণিক বার্তা ডেস্ক

এটিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুগান্তকারী চিকিৎসা হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। আশা ছিল যে রক্তের প্লাজমায় ধারণকৃত করোনাভাইরাস অ্যান্টিবডি কভিড-১৯-এর দ্বিতীয় ঝড়ের সময়ও রোগীদের সাহায্য করবে।

কিন্তু ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি গবেষণা ভিন্ন কিছুই বলছে। সেখানে বলা হচ্ছে, কনভালসেন্ট প্লাজমার খুবই সীমিত কার্যকারিতা আছে এবং সেটি মৃত্যু হ্রাস করতে ব্যর্থ কিংবা মারাত্মক রোগে রূপান্তরিত হওয়া আটকানোর ক্ষেত্রেও দুর্বল।

প্লাজমা রক্তের পরিষ্কার হলুদ তরল অংশ। যা কিনা দেহের চারদিকে লোহিত শ্বেত রক্তকণিকা এবং প্লাটিলেট বহন করে। কোনো একটি সংক্রমণের পর প্লাজমা প্রায়ই অ্যান্টিবডি দ্বারা পূর্ণ থাকে, যা তৈরি হয় ইমিউন সিস্টেম দ্বারা। যেমন এটি কখনো কখনো নেয়া হয় যেসব মানুষ রোগ থেকে সেরে উঠেছে তাদের কাছ থেকে এবং সেসব মানুষের মাঝে স্থানান্তর করা হয় যারা রোগটির সঙ্গে লড়াই করছে। কনভালসেন্ট প্লাজমা থেরাপি ১৯১৮ সালের ফ্লু মহামারীর সময় ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া সাম্প্রতিক বৈশ্বিক স্বাস্থ্যজনিত জরুরি অবস্থার সময়, যেমন সার্স কিংবা ইবোলার সময়ও এটির ব্যবহার দেখা গেছে।

কভিড-১৯-এর জটিলতার ক্ষেত্রে কনভালসেন্ট প্লাজমা কোনো ধরনের সাহায্য করতে পারে কিনা সেটি নিয়ে অনেকগুলো ট্রায়াল চলমান আছে। যেখানে বৃহত্তর এলোমেলো নিয়ন্ত্রিত ট্রায়ালটি চলছে যুক্তরাজ্যে। সর্বশেষ প্রকাশিত গবেষণার অনুসন্ধানগুলো সত্ত্বেও কনভালসেন্ট প্লাজমা এখনো কভিড-১৯-এর জন্য কার্যকর প্রমাণিত হতে পারে।

গবেষণায় মাঝারি কভিড-১৯- আক্রান্ত ৪৬৪ জন প্রাপ্তবয়স্ক রোগী অন্তর্ভুক্ত ছিল, যাদের এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে ভারতের হাসপাতালগুলোয় ভর্তি করা হয়েছিল। প্রায় অর্ধেক রোগীকে যত্নের সঙ্গে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি কনভালসেন্ট প্লাজমা দেয়া হয়। যেখানে নিয়ন্ত্রিত দলটি কেবল মানসম্পন্ন যত্ন পেয়েছিল।

এক মাস পর যারা প্লাজমা গ্রহণ করেছিল তাদের ১৯ শতাংশ হয় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিল কিংবা কোনো কারণে মারা গিয়েছিল, নিয়ন্ত্রিত দলটির ১৮ শতাংশের তুলনায়। প্লাজমা থেরাপি সাতদিন পর যদিও উপসর্গ হ্রাস করেছে বলে দেখা গেছে, যেমন শ্বাসকষ্ট অবসাদ।

এনএইচএস ব্লাড অ্যান্ড ট্রান্সপালেন্ট, যারা সেরে ওঠা রোগীদের কাছ থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করেছে, তারা যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণার ক্ষেত্রে উচ্চস্তরের করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি সংগ্রহের ওপর জোর দিয়েছিল। তাদের একজন মুখপাত্র বলেন, ভারতীয় গবেষণায় অ্যান্টিবডিসহ যে প্লাজমা ব্যবহার করা হয়েছে তার স্তর ছয় থেকে দশ ভাগ কম।

ভারতীয় গবেষকরাও এতে একমত হয়েছেন এবং বলেছেন তারা পরবর্তী গবেষণায় উচ্চস্তরের অ্যান্টিবডি ব্যবহার করেছেন এবং ইতিবাচক ফল পেয়েছেন।

টেক্সাসের হিউস্টন মেথোডিস্ট হাসপাতালে ১৩৬ জন রোগীকে নিয়ে করা একটি মধ্যবর্তী বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যারা রোগের শুরুতে উচ্চস্তরের অ্যান্টিবডি গ্রহণ করেছে তাদের মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। তবে পরবর্তী সময়ে আরেকটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, অ্যান্টিবডির স্তর যেমনই হোক না কেন, রোগের পরবর্তী পর্যায়ে প্লাজমা দেয়া হলেও তা মৃত্যুর হারে উল্লেখযোগ্য কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না। তবে আরেকটি আশার কথা বলেছেন প্রফেসর পল মরগান। তিনি বলেন, প্লাজমা থেরাপি ভাইরাল লোড হ্রাসের সঙ্গে জড়িত বলেও দেখা গেছে। 

দ্য গার্ডিয়ান


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫