পুষ্টি ও অথনৈতিক নিরাপত্তায় পোল্ট্রি শিল্প: অপার সম্ভাবনার হাতছানি

প্রকাশ: অক্টোবর ০৯, ২০২০

ডা. মো. নূরে-আলম

ডিমকে এক‌টি উন্নতমানের ও সহজলভ্য আমিষজাতীয় খাদ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে ডিমের গুণাগুণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ডিম খান প্রতিদিন, ডিমের গুণ অপরিসীম প্রতিপাদ্য নিয়ে ৯ অক্টোবর, ২০২০, শুক্রবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডিম দিবস-২০২০।

পুষ্টি নিরাপত্তায় ডিম  

প্রাণের স্পন্দন শুরু হয় যেই ডিম দিয়ে সেই ডিমের পুষ্টিমান নিয়ে তর্ক বৃথা। বাংলাদেশের করোনা যুদ্ধের মুখপাত্র আইডিসিআর বলছে, মাছ মাংস খেতে, না পেলে বেশি করে ডিম খেতে। ইউনিসেফ দুধ, ডিম, মাংসকে বলছে সুপার ফুড যা নিশ্চিত করে সুপার হেলথ! 

ডিমে থাকে প্রচুর এইচডিএল, যা হার্টের জন্য উপকারী, এলডিএল কোলস্টেরলকে মন্দ কোলস্টেরল হিসেবে বলা হয় যা ডিম খেলে কমে যায়। তাই ডিম খাওয়ায় হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়েনা বরং কমে।

এলিট শ্রেণির খাবার টেবিল কিংবা দামি রেস্টুরেন্ট থেকে অসহায় দরিদ্রের পেট ভরছে প্রাণিসম্পদ পণ্য দিয়ে।

প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স) ডিমে পুষ্টিমান

প্রোটিন-১৩ গ্রাম, শক্তি - ১৫৫ কিলো ক্যালরি, শর্করা-১.১গ্রাম, স্নেহ পদার্থ-১১ গ্রাম। ভিটামিন-এ ৫২০ আইইউ, ডি- ৮৭ আইইউ, সায়ানোকোবালামিন- ১.১ মাইক্রোগ্রাম, পাইরিডক্সিন-০.১মি.গ্রা., থায়ামিন (বি-১)-০.০৬৬মি.গ্রা.,রিবোফ্লাভিন (বি-২)-০.৫মি.গ্রা., প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বি-৫)- ১.৪মি.গ্রা., ফোলেট (বি-৯)-০.৪৪ মি.গ্রা.। মিনারেল সমুহের মধ্যে ক্যালসিয়াম-৫০মিগ্রা, আয়রন-১.২মিগ্রা, ম্যাগনেসিয়াম- ১০ মি.গ্রা., ফসফরাস- ১৭২ মি.গ্রা., পটাশিয়াম- ১২৬মি.গ্রা., কপার-১ মি.গ্রা. কোলিন -২২৫ গ্রামসহ অসংখ্য অ্যান্টিবডি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট (সূত্র-ইউএসডিএ)। 

সহজলভ্য পুষ্টির উৎস হিসেবে ডিমের তুলনা কেবল ডিমই হতে পারে। গার্মেন্টস ও ব্যাচেলরদের জীবনে সহজে রান্নার সহজ মেন্যু হিসেবে ডিম তো প্রায় জাতীয় খাদ্যই বটে! 

ডিমের ভিটামিন ও মিনারেল হাড় ও দাঁত মজবুত করতে সহায়তা করে। ডিমে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান আদশ মাত্রায় থাকায় তা বাড়তি খাবার খাওয়ার চাহিদা কমিয়ে দেয়। এতে ক্ষুধা কমে যায় এবং দেহের ওজনও কমে যায়।

অর্থনীতি, জ্বালানি নিরাপত্তা ও বেকারত্ব দূরীকরণে ডিম তথা পোল্ট্রি খাত 

শিল্পপতি হতে গ্রামাঞ্চলের ভূমিহীন, প্রান্তিক, দুস্থ, বেকার শ্রেণীর ‘জীবন্ত ব্যাংক’ হিসেবে কাজ করে প্রাণিসম্পদ ও পোল্ট্রি। যে ব্যাংকের তহবিল প্রায় ১৮ কোটি মানুষের ৮০ শতাংশ প্রাণিজ আমিষের পুষ্টির যোগান দিচ্ছে তাই নয় বরং স্বাস্থ্য, শিক্ষা, এমনকি কৃষি ফসলের চাষ ও মৎস্য চাষেও ব্যবহৃত হয়।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য, গত দশ বছরে ডিম উৎপাদন বেড়েছে ৪ গুণ (২০০৮/০৯-২০১৮/১৯ : ৪৬৯.৬১-১৭১১ কোটি)। মোট জনশক্তির ২০ শতাংশ প্রত্যক্ষভাবে, ৫০ শতাংশ পরোক্ষভাবে প্রাণিসম্পদ খাতের সঙ্গে জড়িত। তাই বলা যায় এককভাবে সর্বোচ্চ শ্রমশক্তি নিযুক্ত আছে পোল্ট্রি খাতে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০১৮ বলছে মানুষের প্রাণিজ আমিষ চাহিদার ৪৫ শতাংশ এখন পোল্ট্রি খাত নির্ভর এবং বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। 

ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ শাখা (ওয়াপসা)-এর তথ্য মতে, ছোট-বড় ৭০ হাজার পোল্ট্রি খামার গ্রামীণ ও নগর অর্থনীতিতে কাজ করে চলছে নিরন্তর গতিতে। 

বিপিআইসিসির তথ্য, প্রতি সপ্তাহে এক দিনের লেয়ার, ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির বাচ্চা ৯৫ লাখ থেকে ১ দশমিক ১০ কোটি উৎপাদিত হচ্ছে এবং বাচ্চা উৎপাদনে স্বয়ং সম্পূর্ণতার কারণে বিগত কয়েক বছর ধরে ১৮ থেকে ২২ শতাংশ হারে ডিম ও মুরগির উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে অর্থাৎ ২০১৬ সালে মুরগির বাচ্চার সাপ্তাহিক উৎপাদন ছিল যেখানে ৯০ লাখ; দুই বছর পর তা দাঁড়িয়েছে ১কোটি। 

বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি)-এর ১৭টি লক্ষ্যের মধ্যে ৭টির সঙ্গে পোল্ট্রি শিল্পের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বিধায় আলাদাভাবে এই শিল্পের গুরুত্ব অনায়াসেই চলে আসে। 

এই পোল্ট্রি শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের ৪০ ভাগই নারী যা নারীর ক্ষমতায়নে কৃষির পরেই গ্রামীণ অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে। 

এই শিল্পের বর্জ্য থেকে তৈরি হয় বায়োগ্যাস, বিদ্যুৎ ও সার যার পরির্পুণ বাস্তবায়ন করা গেলে জ্বালানী খাতে বিপ্লব সম্ভব।

হালাল মাংস ও ডিমের বাজার ধরতে পারলে অর্জিত হতে পারে বিশাল বিদেশি মুদ্রা, বিশেষত মধ্যপ্রাচ্যে যেখানে ৬০ লাখ বাংলাদেশী রয়েছে যাদের কাছে দেশীয় মাংস ও ডিম খুব প্রিয়।

চ্যালেঞ্জসমূহ

গ্রামাঞ্চলে অগণিত খামারি সনাতনি কায়দায় খামার পরিচালনা করে থাকে। যেখান থেকে ডিম কিংবা মাংস উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ অন্যান্য ব্যবসার আদলে করা যাবে না। কারণ যখন উৎপাদন হয় তখনি বিক্রি করতে হয়, ফলে অস্থিতিশীল বাজারে উৎপাদকরা পুঁজি হারাচ্ছেন। 

তাছাড়া চাহিদার সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সরবরাহ না থাকা, রোগবালাই, আপৎকালীন প্রণোদনা না থাকা, কাঁচামাল ও পণ্য  আমদানিতে শুল্ক, উৎসে আয়কর, পোল্ট্রি খাতকে কৃষিভিত্তিক শিল্পের মর্যাদা না দেয়া, ওষুধের ওপর উচ্চ আমদানি শুল্ক হার, ঋণের ক্ষেত্রে বর্ধিত হারে সুদের হার ইত্যাদি। 

পোল্ট্রি কৃষির উপখাত হলেও ঋণ নিতে হয় ডাবল ডিজিটে অথচ কৃষিখাতে ঋণের সুদ মাত্র ৫ শতাংশ। অন্যদিকে বিদেশী কোম্পানির আগ্রাসন দেশীয় খামারিদের সর্বনাশ করছে। 

অন্যদিকে কৃষিতে বিদ্যুৎ বিলে প্রণোদনা ও ছাড় থাকলেও পোল্ট্রি খামারিদের শিল্পখাতের বিল পরিশোধ করতে হয়। 

সবচেয়ে হতাশার বিষয় হলো, এখনো দেশে কোনো পোল্ট্রি ডেভেলপমেন্ট বোর্ড বা কর্পোরেশন গড়ে ওঠেনি। অথচ তুলা উন্নয়ন বোর্ড আছে, পাট কিংবা চা উন্নয়ন বোর্ড আছে। ফলে যথাযথ নীতিনির্ধারণ যেমন বিঘ্নিত হচ্ছে তেমনি দেশের খামারিবান্ধব প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন বিঘ্নিত হচ্ছে! 

আমরা ফ্রোজেন মাংস আমদানি করে দেশীয় খামারিদের পথে বসাচ্ছি। একদিকে পোল্ট্রি খামারিরা গরীব হতে নিঃস্ব হচ্ছে, অন্য দিকে ইন্ডাস্ট্রি চলে যাচ্ছে বিদেশি কোম্পানিদের হাতে। বিদেশি কোম্পানিদের হাতে ব্যবসা চলে গেলে দুধ, মাংস, ডিমের দাম কেমন হবে তা নিকট অতিতের পেঁয়াজ কাহিনী হতে ধারনা করতে পারি। 

দেশীয় পণ্যের বাজার নষ্ট করতে ভাড়াটিয়া গবেষক ও সাংবাদিকদের নির্লজ্জ বিধিবহির্ভুত রিপোর্টিং খামারীদের বারোটা বাজাচ্ছে। 

চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় করণীয় 

দ্রুত বাস্তাবায়নযোগ্য ব্যবস্থাসমূহ:

১। চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত খামারি ও বেকার প্রাণিসম্পদ শ্রমিকদের সরকারি ত্রাণ সহায়তার আওতায় নিয়ে আসা (উপজেলাভিত্তিক)

২। চলমান খামারগুলোর বিদ্যুৎ বিল মওকুফ করা 

৩। চলমান খামারগুলোর ব্যাংক লোনের কিস্তি স্থগিত ও সুদ মওকুফ করা

৩। পশুখাদ্যের দাম যেনো কেউ বাড়াতে না পারে সেজন্য বাজার মনিটরিং করা

৪। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্টান ও মিডিয়া কর্তৃক গবাদিপশু ও পোল্ট্রি নিয়ে চলমান অপপ্রচার বন্ধ করা এবং সকল অপপ্রচারের বিরম্নদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া।

স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে বাসস্তবায়নযোগ্য ব্যবস্থা

১। প্রাণিস্বাস্থ্য সেবাকে জরুরি ঘোষণা করা। প্রতি উপজেলায় ভেটেরিনারি হাসপাতাল নির্মাণ করে- ২৪ ঘণ্টা ও প্রতিদিন সেবা নিশ্চিত করা। বাংলাদেশে কোন উপজেলায় ভেটেরিনারি হাসপাতাল, অপারেশন থিয়েটার ও রোগ নির্ণয় করে চিকিত্সার ব্যবস্থা নেই বরং উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতরে একজন মাত্র ভেটেরিনারি সার্জন দিয়ে চিকিত্সা কার্যক্রম চালানো হয়। এতে খামারিরা প্রায়ই অপচিকিত্সার স্বীকার হচ্ছেন ও আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তাই প্রাণিসম্পদ সেবাকে জরুরি সেবার আওতায় এনে এর লোকবল কাঠামো আধুনিকায়ন করা প্রয়োজন।

২। জাতীয় পোল্ট্রি ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন, জাতীয় ডিম উন্নয়ন কর্পোরেশন  গঠন করে প্রতিটি বিষয়ের বিশেষায়িত গবেষণা, মান নিয়ন্ত্রণ, প্রকল্প প্রণয়ন করে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা। উল্লেখ্য যে, কৃষি খাতে বাংলাদেশ এগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (বিএডিসি), ইক্ষু/ চা/তুলা/ হর্টিকালচার/ধান/পাট/ফলসমূহ প্রভৃতির জন্য বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান থাকলেও কৃষির অন্যতম উপখাত হলেও প্রাণিসম্পদ খাতে এমন কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠেনি। ফলে নীতিনির্ধারণসহ বাণিজ্যিকভাবে বিশেষ গোষ্ঠীর কাছে প্রাণিসম্পদ খাত জিম্মি হয়ে আছে ও বিদ্যমান বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপনা খামারিবান্ধব না হয়ে সেসব গোষ্ঠীবান্ধব হয়ে আছে। ভারতসহ বিশ্বের উন্নত সকল দেশে এরকম প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পশুখাদ্যের দাম, মান নিয়ন্ত্রণ, বাজার ব্যবস্থাপনা, প্রণোদনা, অঞ্চলভিত্তিক প্রকল্প পরিচালনাসহ দেশীয় উত্পাদন বৃদ্ধি, খামারিদের স্বার্থসমূহ তদারকি করা হয়। বাংলাদেশে কাঁচামালের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার, ভ্যাট কমালেও পশুখাদ্যের দাম খামারিদের জন্য কমে না বরং মুনাফা লুট করে গোষ্ঠীভিত্তিক কোম্পানির মালিকরা, তাই ডেভেলপমেন্ট বোর্ড গঠন করে পশুখাদ্যের ন্যায্যমূল্য নির্ধারণসহ খামারিবান্ধব সরকারি পলিসি প্রণয়ন করা উচিত।

৩। বাংলাদেশে সর্বাধুনিক পদ্ধতিতে মুরগির মাংস প্রক্রিয়াজাত ও সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণ চালু করলে একদিকে খামারিরা অস্থিতিশীল বাজারের হুমকি হতে বাঁচবে, অন্যদিকে ভোক্তারা নিরাপদ মাংস পাবে।

৪। প্রাণিসম্পদের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন: ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি প্রাণিসম্পদ খাতের সঙ্গে দেশের মোট শ্রমশক্তির ২০ শতাংশ প্রত্যক্ষভাবে ও ৪৫ শতাংশ পরোক্ষভাবে জড়িত (২০১৭-১৮)। দেশের শিক্ষিত বেকার বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের অপার সম্ভাবনাময় এ খাতকে কাজে লাগিয়ে বেকার সমস্যার কার্যকর সমাধান সম্ভব। অন্যদিকে মত্স্য খাতও বিশাল একটি সেক্টর। দুটো বিশাল সেক্টরের উন্নয়ন ও কার্যক্রম পরিচালনা হচ্ছে একটি মন্ত্রণালয় তথা একজন মন্ত্রী ও সচিব মহোদয়ের তত্ত্বাবধানে, ফলে দুটি বিকাশমান সেক্টর বঞ্চিত হচ্ছে। আশা করা যায় আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন হলে দুটো সেক্টরই লাভবান হবে এবং দেশের প্রভূত উন্নয়ন সাধন হবে। 

৫। কঠোর মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রবর্তন করা: প্রতিটি খামারিকে হতে হবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, খামার হতে হবে বায়োসিকিউরিটি ও বায়োগ্যাস প্লান্ট সমৃদ্ধ। খাদ্য, মেডিসিন, মাংস, ডিম উত্পাদন ও বিপণনের প্রতিটি ধাপে কঠোরমান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা করতে হবে।

৪। খামারিদের প্রণোদনা: সারা বিশ্বে পোল্ট্রিখাত ভর্তুকি খাত। উত্পাদন খরচ কমিয়ে খামারিদের বাঁচিয়ে রাখতে এর বিকল্প নেই। বাংলাদেশে এধরনের কোনো প্রণোদনা না থাকায় প্রান্তিক খামারিরা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছে না। তাই বন্ধ হয়ে যাওয়া খামারগুলোকে চালু করতে বিশেষ প্রণোদনার আওতায় খামারিদের আর্থিক অনুদান নিশ্চিত করা। বিদ্যমান লোনের সুদ মওকুফ করা।

৫। বিদ্যুৎ বিলের ধরনকে শিল্প থেকে কৃষিতে রূপান্তরিত করা: বর্তমানে কৃষিখাতে বিদ্যুৎ বিলের চেয়ে প্রাণিসম্পদখাতে তিন গুণ হারে শিল্প বিল দিতে হচ্ছে। অথচ কৃষির অন্যতম উপখাত হচ্ছে প্রাণিসম্পদ খাত। 

৬। পোল্ট্রি ও পোল্ট্রি পণ্য রফতানিতে উদ্যোগ গ্রহণ: বিশেষত মুসলমান প্রধান দেশসমূহের হালাল মার্কেট আয়ত্তে আনার জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া এবং মাংস আমদনি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া।

৭। পোল্ট্রি টিকা সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি গ্রহণ করা। 

৮। ভারত থেকে এক দিনের বাচ্চা আমদানি বন্ধ করার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া। 

এই বাস্তবতায়, করোনা পরবর্তী দেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা এবং  কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্য দূরীকরণে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে প্রাণিসম্পদ খাতকে বিশেষত পোল্ট্রি খাতকে অন্তর্ভুক্ত রাখার জরুরি অন্যথায়, ভবিষ্যত পুষ্টি নিরাপত্তা হুমকিতে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিম্নআয়ের ভূমিহীন, প্রান্তিক, দুস্থ, বেকার শিক্ষিত যুব, যুব মহিলা খামারি/উৎপাদক/উদ্যোক্তাদের কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য নিরসন কার্যক্রম অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

এটাই হোক বিশ্ব ডিম দিবস-২০২০-এর প্রতিশ্রুতি। 

ডা. মো. নূরে-আলম

ভেটেরিনারি সার্জন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫