সুটকেসভর্তি ময়লা কাপড় নিয়ে হোয়াইট হাউসে নেতানিয়াহু দম্পতি!

প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২০

বণিক বার্তা অনলাইন

জাঁকালো আকণ্ঠ ভোজ, রাজকীয় অভ্যর্থনা আর অমূল্য উপঢৌকন আন্তর্জাতিক কূটনীতির চিরাচরিত অমিতব্যয়িতার রীতি। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ও তার স্ত্রী রাষ্ট্রীয় সফরে আলোচনায় এসেছেন একটা খুবই তুচ্ছ কারণে। রাষ্ট্রীয় সফরে নিজেদের নোংরা পোশাক-পরিচ্ছদ ফ্রিতে ড্রাই ক্লিনিং করে নেয়ার নাকি বদভ্যাস আছে তাদের!

মার্কিন পত্রিকা ওয়াশিংটন পোস্ট হোয়াইট হাউসের অতিথিশালার সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে নেতানিয়াহু দম্পতির এমন অভ্যাস নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার স্ত্রী সারা বিদেশ সফরে অন্য দেশের পয়সায় নোংরা কাপড় পরিষ্কার করে নেয়ার জন্য কুখ্যাতি অর্জন করেছেন। 

ওই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, নেতানিয়াহুরাই একমাত্র, যারা পরিষ্কার করার জন্য আমাদের এখানে নোংরা জামাভর্তি সুটকেস বয়ে নিয়ে আসেন। প্রথমে এটি কাকতালীয় ভাবা হলেও দেখা গেছে, বেশ কয়েকটি সফরে তারা এমনটি করেছেন। তার মানে ব্যাপারটি ইচ্ছাকৃত।

তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করে বিবৃতি দেয়া হয়েছে। তবে ৭০ বছর বয়সী ইসরায়েলি এ নেতার বিরুদ্ধে বিদেশ সফরে ময়লা জামা বয়ে নেয়ার অভিযোগ এটিই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৮ সালে ফাঁস হওয়া গোপন নথিতে সারা নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সফরে চার/পাঁচ সুইটকেসভর্তি ময়লা জামা বয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে। এর দুবছর আগেই নিজের ঘরের লন্ড্রি খরচ প্রকাশে বাধ্য না থাকার সপক্ষে এক আইনি লড়াইয়ে জিতেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু।

ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাস এক বিবৃতিতে এ অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন ও অদ্ভূত’ বলে অভিহিত করেছে। তারা বলেছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণে দেশটির সাম্প্রতিক চুক্তি থেকে বিশ্ববাসীর মনোযোগ সরানোর জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব বলা হচ্ছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এই সফরে কয়েকটি শার্ট ছাড়া কোনো কাপড় পরিষ্কার করা হয়নি। পাবলিক মিটিংয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীর স্যুট ও তার স্ত্রীর কাপড় ইস্ত্রি করা হয়েছিল। আর ১২ ঘণ্টা ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী যে পাজামাটি পরে ছিলেন সেটিও ওয়াশিংটনে পরিষ্কার করা হয়েছে।

ওয়াশিংটন পোস্টের ওই রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, গত সপ্তাহের সফরে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ও তার স্ত্রী জামাভর্তি একাধিক সুটকেস আনেননি বটে, কিন্তু ওবামা এবং বর্তমান ট্রাম্প প্রশাসনে কাজ করা বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা আগেও এ ধরনের ব্যাপক কাপড় ধোলাইয়ের ঘটনার কথা নিশ্চিত করেছেন।

নেতানিয়াহু পরিবারের এমন উচ্চপর্যায়ের সরকারি দফতর থেকে সুযোগ সুবিধা নেয়ার (সেটি যতো ছোটই হোক) অভ্যাসের কারণে নিজ দেশেই একাধিকবার সমালোচিত হয়েছেন।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় খাবার দেয়া হলেও গত বছর সারা নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ১০ হাজার পাউন্ডেরও বেশি অর্থ খরচ করে ব্যয়বহুল ভোজ দেয়ার অভিযোগ উঠেছিল।

প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধেই তিনটি দুর্নীতির মামলা চলছে। এর মধ্যে একটি হলো শ্যাম্পেন, অলঙ্কার ও সিগারেটের মতো দামি উপহার সামগ্রী নেয়া। তবে নেতানিয়াহু সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫