ধর্ষককে সহযোগিতার অভিযোগে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে আসামি করে মামলা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। এমন অভিযোগ অসত্য দাবি করে সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করার পর সেখান থেকে নুরসহ সাতজনকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে পুলিশ পাহারায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। গতকাল রাতে এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত হাসপাতালে ছিলেন তিনি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম শাখার ডিসি ওয়ালিদ হোসেন জানান, বিক্ষোভ মিছিল থেকে নুরসহ সাতজনকে আটক করা হয়েছে। পরে পুলিশ পাহারায় তাকে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। অভিযোগের বিষয়গুলো তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ডিএমপির পক্ষ থেকে নুর আটক বলা হলেও ডিবির যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম জানান, বিক্ষোভ মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছিল। এ ঘটনায় পুলিশ তাত্ক্ষণিকভাবে নুরসহ সাতজনকে আটক করে। পরে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
এর আগে রোববার গভীর রাতে রাজধানীর লালবাগ থানায় নুরসহ ছয়জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় ছয় আসামির মধ্যে পাঁচজনই ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আসামিরা হচ্ছেন হাসান আল মামুন, নাজমুল হাসান সোহাগ, মো. নুরুল হক নুর, মো. সাইফুল ইসলাম, মো. নাজমুল হুদা ও মো. আব্দুল্লাহিল বাকী।
মামলার এজাহারে ওই শিক্ষার্থী উল্লেখ করেছেন, মামলার প্রধান আসামি মামুন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সপ্তম ব্যাচের ছাত্র। ভুক্তভোগী নারীও একই বিভাগের ছাত্রী। পরিচয়ের সূত্র ধরে এক সময় মামুনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত ৩ জানুয়ারি মামুন তাকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি নিয়ে গত ২০ জুন মামলার ৩ নম্বর আসামি নুরুল হক নুরকে মৌখিকভাবে জানানো হয়। তবে সমাধান না করে উল্টো তাকে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেন নুর।
এজাহারভুক্ত আসামিদের পরিচয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, হাসান আল মামুন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক। ২ নং আসামি নাজমুল হাসান সোহাগ বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক। ৩ নং আসামি নুরুল হক নুর ডাকসুর সাবেক ভিপি। ৪ নং আসামি মো. সাইফুল ইসলাম বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক। ৫ নং আসামি মো. নাজমুল হুদা বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সহসভাপতি।
তবে নুরুল হক নুরের দাবি, দেশীয় গণতন্ত্র শক্তিশালী করার জন্য কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার কারণেই দেশী ও বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন সেসহ তার নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা করিয়েছে। এর আগেও তার নামে চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যেগুলো এখনো পুলিশ তদন্ত করে কিছুই পায়নি। এ মামলাও পুলিশ তদন্ত করবে।
ভুক্তভোগীর অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, দুই মাস আগে এক ছাত্রী তার রিলেশন নিয়ে ঝামেলা হয়েছে বলে মোবাইল ফোনে জানান। এরপর আমি তাকে জানাই, ক্যাম্পাস খুললে বিষয়টি দেখব। পাশাপাশি প্রক্টর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী নির্যাতন সেলকে বিষয়টি অবহিত করার জন্য বলি। এর বাইরে ওই ছাত্রীর সঙ্গে আমার দেখা বা কথা হয়নি।