গ্রাহকের কাছে তিতাসের পাওনা সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা

প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত গ্রাহকের কাছে তিতাস গ্যাসের পাওনা সাড়ে হাজার কোটি টাকারও বেশি। বিদ্যুৎ খাত, সার কারখানা, ক্যাপটিভ, শিল্প খাত, বাণিজ্যিক, আবাসিক মৌসুমি গ্রাহকদের কাছে বকেয়া অনাদায়ী রয়েছে বলে সংসদীয় কমিটিতে জানিয়েছেন জ্বালানি খনিজ সম্পদ বিভাগ। গত ১৫ মার্চ জাতীয় সংসদের বিদ্যুৎ, জ্বালানি খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে জ্বালানি বিভাগের দেয়া এক প্রতিবেদনে বকেয়ার তথ্য উঠে আসে।

গতকাল সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে গত বৈঠকের কার্যবিবরণীটি অনুমোদিত হয়। সেই কার্যবিবরণীতে এসব তথ্য উল্লেখ রয়েছে। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে এসব বকেয়া বিল আদায়ে তত্পর হওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

বৈঠকে আবাসিকে গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকার পরও গ্রাহকদের সংযোগপ্রাপ্তির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বন্ধ থাকার পরও সংযোগ পাওয়ার নেপথ্যে তিতাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়িত। এসব অসাধু ব্যক্তিকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির সুপারিশ রয়েছে কমিটির পক্ষ থেকে।

কমিটির সভাপতি মো. শহীদুজ্জামান সরকারের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কমিটি সদস্য নসরুল হামিদ, মো. আবু জাহির, মো. আলী আজগর, মো. নূরুল ইসলাম তালুকদার, মো. আছলাম হোসেন সওদাগর এবং বেগম নার্গিস রহমান। বৈঠকে কমিটির সদস্য ছাড়াও অংশ নেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান, লেজিসলেটিভ সংসদ বিষয়ক বিভাগের কর্মকর্তা এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

জ্বালানি খনিজ সম্পদ বিভাগের কার্যবিবরণী পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আট শ্রেণীর গ্রাহকের কাছে তিতাস সংযোগ লাইনের সহায়তায় গ্যাস সরবরাহ করে। এসব গ্রাহক শ্রেণীর কাছে মাসিক গড় গ্যাস বিক্রির পরিমাণ হাজার ৪৮৭ দশমিক ৮৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি পর্যায়ে ৯৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা এবং বেসরকারি পর্যায়ে হাজার ৩৯৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত জ্বালানি সরবরাহকারী সংস্থার গ্রাহক পর্যায়ে বকেয়া দাঁড়িয়েছে হাজার ৬১৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। বকেয়ার মধ্যে সরকারি পর্যায়ে ৭৩৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা এবং বেসরকারি গ্রাহকের কাছে হাজার ৮৮২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।

সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে বকেয়া আদায়ের জন্য প্রচার, লিফলেট বিতরণ, গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার, নোটিস প্রদান এবং বিশেষ ক্ষেত্রে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নের সুপারিশ করা হয়।

বকেয়া আদায়ে জ্বালানি খনিজ সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ব্যসায়িক সংগঠন বিজিএমইএ বিকেএমই সরকারি দপ্তরগুলোর সঙ্গে পত্রের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

বৈঠকে কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, বিল যে পরিমাণ বকেয়া তা তিন-চার মাসের সমপরিমাণ। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। জবাবে টিজিটিডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, বিল করার পর শিল্পের ক্ষেত্রে ৪৫ দিন, আবাসিকের ক্ষেত্রে ২১ দিন সিএনজির ক্ষেত্রে ২০ দিনের সময় দেয়া হয়। কিন্তু সময় অনেকে বিল পরিশোধ না করার কারণে বকেয়া বাড়ছে। তিনি কমিটির সদস্যদের আশ্বস্ত করে বলেন, চলতি বছরের মধ্যে বকেয়া সমতা পর্যায়ে নিয়ে আসবেন।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫