ভারতে ২১ লাখ হেক্টরের বেশি কৃষিজমি প্লাবিত

প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২০

বণিক বার্তা ডেস্ক

অতিবৃষ্টি দীর্ঘমেয়াদি বন্যা দুইয়ের জের ধরে গভীর সংকটে পড়েছে ভারতের কৃষি খাত। এর আকস্মিক প্রভাব দেখা গেছে পেঁয়াজের বাজারে। বন্যায় উৎপাদন সরবরাহ ব্যাহত হয়ে ভারতের বাজারে এরই মধ্যে পেঁয়াজের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। সাময়িক বন্ধ করতে হয়েছে রফতানি। তবে শুধু পেঁয়াজ নয়, বরং অতিবৃষ্টি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরো অনেক ফসল। তালিকায় রয়েছে ধান, ভুট্টা, তুলা, পাট, ডাল তেলবীজ, কাঁচামরিচ, মসলা পণ্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের ফল সবজি। দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এবারের বন্যায় ভারতজুড়ে ২১ লাখ হেক্টরের বেশি কৃষিজমি প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে কৃষিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলোর তালিকায় এগিয়ে রয়েছে বিহার, কর্ণাটক, আসাম, ওড়িশা, তেলেঙ্গানাসহ কয়েকটি রাজ্য। তুলনামূলক কম ক্ষতির শিকার হয়েছে তামিলনাড়ু, অরুণাচল, কেরালা, পাঞ্জাবের কৃষি খাত। খবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড ইকোনমিক টাইমস।

ভারতের কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার শুক্রবার কৃষি খাতে অতিবৃষ্টি বন্যার প্রভাব নিয়ে রাজ্যসভায় প্রশ্ন-উত্তর পর্বে অংশ নেন। সময় লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, চলতি বছর ১৩টির বেশি রাজ্যে ২১ লাখ হেক্টরের বেশি কৃষিজমি প্লাবিত হয়েছে। এর জের ধরে পেঁয়াজ ছাড়াও বিভিন্ন কৃষিপণ্যের উৎপাদন সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে।

সময় রাজ্যওয়ারি ক্ষতির বিবরণ তুলে ধরেন ভারতের কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী। এর মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশে ৫২ হাজার ৫৫১ দশমিক ৯৯ হেক্টর কৃষিজমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। রাজ্যটিতে পেঁয়াজ, সুপারি, টমেটো, কাঁচামরিচ, কলা, পেঁপেসহ বিভিন্ন ফল সবজির উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে।

একইভাবে আসাম বিহারে বন্যার প্রকোপ দেখা গেছে তুলনামূলক বেশি। আসামে লাখ ৯০ হাজার ১৭৬ দশমিক ৭৩ হেক্টর কৃষিজমি প্লাবিত হয়েছে। উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে ধান, ভুট্টা, পাট ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ডাল সবজির। বিহারে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে ধান, ভুট্টা, ফল সবজির। রাজ্যটিতে লাখ ২২ হাজার ৩৮ দশমিক ৮২ হেক্টর কৃষিজমি প্লাবিত হয়েছে।

এবারের বন্যায় কর্ণাটকে লাখ ৩১ হাজার ৩৩৪ দশমিক ৯৭ হেক্টর কৃষিজমি প্লাবিত হয়েছে। উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে ধান, তুলা, আখ, সয়াবিন, ভুট্টা, বাজরা, তামাক, সূর্যমুখী বীজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন জাতের ডালের। মহারাষ্ট্রে প্লাবিত হয়েছে লাখ ৭০ হাজার ৮৯৯ হেক্টর কৃষিজমি। উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে আখ, তুলা, ভুট্টা, সয়াবিন, জোয়ার, হলুদ, চীনাবাদাম সবজির।

পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওডিশায় লাখ ২১ হাজার ২৬২ হেক্টর কৃষিজমি প্লাবিত হওয়ায় ধান উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। তেলেঙ্গানায় প্লাবিত হয়েছে লাখ ৪৩ হাজার ৩৮৮ দশমিক ৩৮ হেক্টর কৃষিজমি। রাজ্যে ধান, আখ, তুলা, ভুট্টা, সয়াবিন, জোয়ার, চীনাবাদাম, কলা, পেয়ারা, পাম, সজনে, পেঁপেসহ বিভিন্ন ধরনের ফল, ফুল সবজির উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। ছত্তিশগড়ে ১২ হাজার ৬১৫ হেক্টর কৃষিজমি প্লাবিত হয়ে মূলত সয়াবিন উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে।

এবারের অতিবৃষ্টি বন্যায় কেরালায় হাজার ৭৫৪ হেক্টর কৃষিজমি প্লাবিত হয়ে নারকেল, এলাচি, আদা, হলুদ, কাজুবাদাম, রাবার, কলা, কফি, আনারস উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। তামিলনাড়ুতে প্লাবিত হয়েছে ৭৮৭ দশমিক ২৬ হেক্টর কৃষিজমি। রাজ্যটিতে আখ, ধান, ভুট্টা, বাদাম, ডালের ক্ষেতগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পাঞ্জাবে প্রায় ২৪ হাজার ৪০৩ হেক্টর কৃষিজমি প্লাবিত হয়েছে। তুলা ধান উৎপাদন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজ্যে। অরুণাচলে প্লাবিত হয়েছে হাজার ৮৬৪ দশমিক ৭৬ হেক্টর কৃষিজমি। হিমাচল প্রদেশে প্লাবিত হয়েছে ৩৫ হাজার ৩৪০ হেক্টরের বেশি কৃষিজমি। ব্যাহত হয়েছে ভুট্টা, ধানসহ খারিফ মৌসুমের বিভিন্ন শস্য উৎপাদন। মধ্যপ্রদেশে সয়াবিন, মুগ, অড়হড়সহ বিভিন্ন ডাল উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে।

২০১৬ সালের এপ্রিলে চালু হওয়া প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা জোযনার আওতায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সহায়তা দেবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫