ভারতে লকডাউনে শুধু স্পেশাল ট্রেনেই মারা গেছেন ৯৭ পরিযায়ী শ্রমিক

প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২০

বণিক বার্তা অনলাইন

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তার রোধে দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণার পর সবচেয়ে বিপদে পড়েছিলেন সেইসব শ্রমিকরা যারা নিজের রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে কাজ করতে গিয়েছিলেন। লকডাউনের সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঘরে ফিরতে পায়ে হেঁটে শত শত মাইল পাড়ি দিতে গিয়ে দুর্ঘটনা, ক্ষুধা, তৃষ্ণায় অনেকেই পথিমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন।

রাজ্যসভার অধিবেশনে সেইসব মৃত পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যুর কোনো হিসাব নেই বলে তোপের মুখে পড়েছিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু এবার রেলমন্ত্রী স্বীকার করলেন, ২৫ মার্চ লকডাউন কার্যকর হওয়ার পর থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শুধু শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনগুলোতেই ৯৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

গতকাল শুক্রবার রাজ্যসভায় শ্রমিক মৃত্যুর প্রসঙ্গ নিয়ে সরব হন তৃণমূল এমপি ডেরেক ও’ব্রায়েন। কেন্দ্রের কাছে এইসব শ্রমিক মৃত্যুর পরিসংখ্যান প্রকাশ্যে আনার দাবি করেন তিনি। 

তৃণমূল এমপির প্রশ্নের জবাবে লিখিত বক্তব্যে শ্রমিক মৃত্যুর কথা স্বীকার করেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। তিনি বলেন, বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশের পক্ষ থেকে যে তথ্য হাতে এসেছে, সেই অনুযায়ী, করোনা পরিস্থিতিতে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে সফর করার সময় ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

মন্ত্রী আরো বলেন, অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে ১৭৪ ধারায় মামলা দায়ের করে রাজ্য পুলিশ। সেই অনুযায়ী যে ৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ৮৭ জনের মরদেহ রাজ্য পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলো থেকে ৫১ জনের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট কেন্দ্রের হাতে এসেছে। তাতে মৃত্যুর কারণ হিসেবে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট, হৃদরোগ, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, দীর্ঘদিনের অসুস্থতা, ফুসফুস ও যকৃতের রোগের উল্লেখ রয়েছে।

এর আগে, গত সোমবার রাজ্যসভায় কাজ খুইয়ে ঘরে ফেরার পথে মৃত শ্রমিকদের তথ্য না-থাকার কথা জানান কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গঙ্গোয়ার। তিনি বলেন, এ ধরনের তথ্য রাখার রেওয়াজ নেই। তাই  ঘরমুখো পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর জন্য কোনও ক্ষতিপূরণ দেয়ারও প্রশ্ন ওঠে না।

এদিকে রেলমন্ত্রী শুধু শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনে প্রাণহানির পরিসংখ্যান তুলে ধরলেও ভারতের একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, লকডাউনের সময় মূলত দুর্ঘটনার কবলে পড়ে রাস্তাতেই প্রায় ২০০ পরিযায়ী শ্রমিক প্রাণ হারান। উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, তেলঙ্গানা এবং মহারাষ্ট্র— এই পাঁচ রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়।

সূত্র: এনডিটিভি


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫