বিয়নড-২০২০ ওয়েবিনারে আলোচকরা

উদীয়মান প্রতিযোগিতায় শ্রমনির্ভর অর্থনীতি যথেষ্ট নয়

প্রকাশ: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেল করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) মহামারী-পরবর্তী বৈশ্বিক যে মন্দার ঝুঁকি রয়েছে তা কাটিয়ে উঠতে এবং উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে শ্রমনির্ভর অর্থনীতি যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। মহামারী-পরবর্তী পরিস্থিতিতে হাই-টেক পার্কগুলোয় বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সহায়তায় আয়োজিত বিয়নড-২০২০ শীর্ষক ওয়েবিনারে এমন মত দেন আলোচকরা। দক্ষতা উন্নয়ন, স্টার্টআপ এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনার লক্ষ্যে গত বৃহস্পতিবার থেকে ওয়েবিনার শুরু হয়েছে।

দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের হাই-টেক পার্কগুলোয় বিনিয়োগের উপযোগিতা জানান দিতেই অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এই ওয়েবিনার আয়োজিত হচ্ছে। প্রথমবারের মতো আয়োজিত এই ওয়েবিনারের দ্বিতীয় দিনে বিনিয়োগকারীদের জন্য হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের প্রণোদনা সুবিধা, ওয়ানস্টপ সার্ভিসসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আলোচনা হয়।

অনুষ্ঠানে আলোচকরা বলেন, বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রণোদনা প্যাকেজ, মানবসম্পদ উন্নয়ন, সহায়ক অবকাঠামো, অনুকূল রফতানি শর্ত, নেতৃস্থানীয় ভোক্তা দেশগুলোর সঙ্গে কূটনীতিক সম্পর্ক ইত্যাদি সূচকে বাংলাদেশ ভারতসহ বিশ্বের মধ্যে নয়টি উদীয়মান গন্তব্যগুলোর চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। অন্যদিকে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে চীনের সম্পর্কের ক্রমাবনতির ফলে পশ্চিমা বিনিয়োগকারীরা নতুন গন্তব্যের খোঁজে রয়েছেন। যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো অগ্রাধিকার পাবে বলে মনে করেন আলোচকরা।

ওয়েবিনারের দ্বিতীয় দিনে তথ্য যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম অংশগ্রহণ করে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে টেকসই হাই-টেক ম্যানুফ্যাকচারিং ইকোসিস্টেম নির্মাণের এখনই উপযুক্ত সময়। যেখানে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। চলমান পরিস্থিতিতে যেসব দেশ জ্ঞানভিত্তিক প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পের বিকাশে মনোনিবেশ করছে তারাই এফডিআই (সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ) আকৃষ্ট করতে সমর্থ হবে। বাস্তবতা উপলব্ধি করে প্রযুক্তিভিত্তিক অবকাঠামো উন্নয়নে শুরু থেকেই নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম বলেন, দেশে মুহূর্তে পাঁচটি হাই-টেক পার্ক বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে এরই মধ্যে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে ৩৫৫ একর জমিতে বিভিন্ন কোম্পানি কাজ করছে। এখান থেকে উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রফতানি হচ্ছে। মাত্র চার বছরে হাই-টেক পার্কগুলোয় দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ এসেছে। সম্প্রতি ওরিক্স বায়োটেক লিমিটেড নামীয় একটি চীনা জায়ান্ট কালিয়াকৈরের বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে ৩০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের লক্ষ্যে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এছাড়া সামস্যাং, নকিয়া, ওয়ালটনসহ বেশকিছু কোম্পানি পার্কে কাজ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ওয়েবিনারে অন্যদের মধ্যে আলোচনা করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক ভল্ট ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান সুলতান লুতাহ, আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়াং বাংলাদেশের অ্যাসোসিয়েট ভাইস প্রেসিডেন্ট মুইজ তাসনিম তাকি, লাইট ক্যাস্ট্রেল পার্টনার্সের সিইও বিজন ইসলাম, বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শৈবাল চক্রবর্তী প্রমুখ।

উল্লেখ্য, দক্ষতা উন্নয়ন, স্টার্টআপ এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনার লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিয়নড-২০২০ গত বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী ওয়েবিনার আজ শেষ হবে। বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সহায়তায় এই ওয়েবিনার আয়োজন করছে ইন্সপায়রিং বাংলাদেশ নামের দেশীয় উদ্যোগ।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫