আগামী বছরের জন্য মোট ৪৯ লাখ ৮০ হাজার টন বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি তেল আমদানির অনুমতি দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। পাশাপাশি সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ২ হাজার ৭২৮ কোটি টাকার ছয়টি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে রাশিয়া থেকে দুই লাখ টন গম আমদানিতে ব্যয় হবে ৪৩৭ কোটি ৫৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
গতকাল কমিটির বৈঠক শেষে ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। পরবর্তী সময়ে ক্রয় প্রস্তাব ও অন্যান্য বিষয়ের বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাসিমা বেগম।
জিডিপি নিয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সাম্প্রতিক পূর্বাভাসের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, তারা আমাদের সম্পর্কে খারাপ বলেনি। আমরা কাজ শুরু করেছি। তারা বলেছে আমাদের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হবে। ধীরে হলেও পুনরুদ্ধার শুরু করেছে। আমরা ধীরে হলেও এগিয়ে যাচ্ছি। এ বছর আমাদের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৮ দশমিক ২ শতাংশ। এ বছর আমাদের আশা বাজেটে যে প্রক্ষেপণ করা হয়েছে সেটা অর্জন করতে পারব। এডিবির পূর্বাভাস অনুসারে চলতি অর্থবছরে যদি ৬ দশমিক ৮ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারি, তাহলে সাউথ এশিয়া নয়, সাউথ-ইস্ট এশিয়ার সব দেশের মধ্যে আমরা ৩ নম্বরে থাকব। আমাদের ওপর থাকবে ভারত আর চীন।
জানা গেছে, সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ২ হাজার ৭২৮ কোটি ৩৮ লাখ ১৪ হাজার ৫৯৫ টাকার ছয়টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) কর্তৃক কাফকো থেকে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানিতে ব্যয় হবে ৬৬ কোটি ৯২ লাখ ৯৯ হাজার ৮১২ টাকা। একই মন্ত্রণালয়ের ডিএপি ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএপিএফসিএল) জন্য ৩০ হাজার টন ফসফরিক অ্যাসিড আমদানিতে ব্যয় হবে ৮৭ কোটি ৫৯ লাখ ১৯ হাজার ৪৫০ টাকা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক দুই লাখ টন গম আমদানিতে ব্যয় হবে ৪৩৭ কোটি ৫৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা। রাশিয়া থেকে গম আমদানি করা হবে।
অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) জন্য ২০২১ সালের জন্য বিভিন্ন বিভাজনে ৪৯ লাখ ৮০ হাজার টন জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে। এর মধ্যে গ্যাস অয়েল ৩৯ লাখ ৬০ হাজার টন, জেট এ-১ ৪ লাখ ৮০ হাজার টন, মোগ্যাস ১ লাখ ৮০ হাজার টন, ফার্নেস অয়েল ৮০ হাজার টন ও মেরিন ফুয়েল ২ লাখ ৮০ হাজার টন। সব পণ্য ১০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেতে পারে।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ১ লাখ ২ হাজার ৭২০টি এসপিসি পোল কিনতে ব্যয় হবে ১৬৪ কোটি ৮৭ লাখ ৯৮ হাজার ৪০ টাকা। বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি থেকে এসব পোল কেনা হবে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ জেলার জালকুড়ি এলাকায় ছয় মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের জন্য তিনটি সংস্থার সঙ্গে ২০ বছর মেয়াদে চুক্তি সম্পাদনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানকে আনুমানিক ১ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে। অন্যদিকে ‘কুড়িগ্রাম (দাসেরহাট)-নাগেশ্বরী-ভুরুঙ্গামারী-সোনাহাট স্থলবন্দর সড়ককে জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪৫ কোটি ৬৩ লাখ ৫৭ হাজার ৪৪১ টাকা।