নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আগামী বছর ভালোভাবে আরোগ্য লাভের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে নেয়া বিভিন্ন বিধিনিষেধের কারণে অঞ্চলটির প্রবৃদ্ধিতে ফেরা বিঘ্নিত হতে পারে। মঙ্গলবার এক পূর্বাভাসে এমনটা জানাচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। খবর এএফপি।
২০২০ সালে ৬০ বছরের মধ্যে প্রথম সংকোচনের আশঙ্কা করছে প্রশান্ত মহাসাগরের কুক আইল্যান্ড থেকে শুরু করে মধ্য এশিয়ার দেশ কাজাখস্তান। এতে লাখ লাখ মানুষ দারিদ্র্যে পতিত হতে যাচ্ছে বলে জানায় ম্যানিলাভিত্তিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটি।
এডিবি জানায়, চলতি বছরে অঞ্চলটির অর্থনীতি শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে। গত জুনে সর্বশেষ পূর্বাভাসে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল এডিবি। অঞ্চল হিসেবে ১৯৬০-এর দশকের শুরুর দিকের সংকোচনের পর এই প্রথম সংকুচিত হচ্ছে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনীতি।
সর্বশেষ প্রতিবেদনে ম্যানিলাভিত্তিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটি আরো জানায়, প্রায় সব দেশের অর্থনীতির সব শাখাতেই এ মন্দা দেখা যাচ্ছে। অঞ্চলটির তিন-চতুর্থাংশ অর্থনীতিই সংকুচিত হবে বলে পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে।
আগামী বছরে বৃহৎ অঞ্চলটির অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে এবং ৬ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। তবে তা কভিড-১৯ মহামারীপূর্ব সময়ের পূর্বাভাসের চেয়ে তুলনামূলকভাবে অনেক কম। এভাবে অঞ্চলটির অর্থনীতি ‘এল’ আকারের আরোগ্য লাভ করবে, ‘ভি’ আকারের নয়। প্রলম্বিত মহামারী এতে প্রধান হুমকি হিসেবে কাজ করছে।
এডিবি বলছে, পুনরায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপে পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে এবং ‘আর্থিক বিশৃঙ্খলা’
দেখা দিতে পারে।
এডিবির মুখ্য অর্থনীতিবিদ ইয়াসুয়ুকি সাওয়াদা বলেন, উন্নয়নশীল এশিয়ার অর্থনীতি দৃঢ়তার পরিচয় দিলেও আরোগ্য লাভের ক্ষেত্রে অব্যাহত পলিসি সহায়তা জরুরি।
আগস্ট শেষে অঞ্চলটির জন্য পলিসি সহায়তা প্যাকেজের পরিমাণ ৩ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা অঞ্চলটির মোট জিডিপির ১৫ শতাংশ বলে জানিয়েছে এডিবি।
অঞ্চলটির মধ্যে অল্প যে কয়েকটি অর্থনীতি প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে, তাদের মধ্যে রয়েছে চীন, যেখানে গত ডিসেম্বরে কভিড-১৯ মহামারীর সূত্রপাত হয়েছিল। সফলতার সঙ্গে কভিড-১৯ মোকাবেলা করে চলতি বছরে ১ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিটি। ২০২১ সালে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির।