সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের যন্ত্রপাতি সরবরাহ না করেই তুলে নেয়া হয়েছে ৩০ কোটি টাকা।
এ প্রক্রিয়ায় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রমাণ পেয়ে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে দুদকের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও ৫০০ শয্যার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সিরাজগঞ্জ স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ডা. কৃষ্ণ কুমার পাল এবং মেসার্স বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোংয়ের প্রোপ্রাইটর মো. জাহের উদ্দিন সরকার।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে অর্থ স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক অনুমোদন নিয়েছেন।
পিপিএ ২০০৬, পিপিআর ২০০৮ লঙ্ঘন করে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতির পরিবর্তে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী কল্যাণ ট্রাস্টের আড়ালে মেসার্স বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানির মালিক মো. জাহের উদ্দিন সরকারের মালিকানাধীন ফারভেন্ট কোম্পানি লিমিটেড হংকং থেকে মেডিকেল যন্ত্রপাতি ক্রয় বা সরবরাহের নামে ১৩২ কোটি ৫০ লাখ ৪ হাজার ১৪৭ টাকার ফান্ড ট্রান্সফার করেছে এবং কার্যাদেশ ও এলসির নির্ধারিত সময় বা মেয়াদ অতিবাহিত হলেও স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী কোনো মেডিকেল যন্ত্রপাতি বুঝিয়ে দেয়নি।
তা সত্ত্বেও কেবল জাহাজীকরণ দলিলের মাধ্যমে ট্রান্সফারকৃত ওই ফান্ড থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২০ পর্যন্ত ৭০টি মেডিকেল আইটেমের কার্যাদেশ মূল্য ৩৭ কোটি ৫৪ লাখ ৪৩ হাজার ৬৪৬ টাকার ৮০ শতাংশ অর্থাৎ ৩০ কোটি ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৯১৬ টাকার ডলার ফারভেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের সিটি ব্যাংক হংকং লিমিটেডের অ্যাকাউন্ট নম্বর ২৫০৩৯০৮৬৭৪৯১৫৩-এর অনুকূলে পরিশোধ বা প্রেরণ করেছেন।
এর দায়ে তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৪০৯/১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২), (৩) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ কর্মকর্তা) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল মৌজায় শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজটি অবস্থিত।
সিরাজগঞ্জ জেলা শহর থেকে এর দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটার।
এটি শুরুতে সিরাজগঞ্জ মেডিকেল কলেজ নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
পরবর্তীতে জাতীয় চার নেতার একজন এম মনসুর আলীর নামে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ নামকরণ করা হয়।
২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ৫০ শিক্ষার্থী দ্বারা কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়।