প্রযুক্তি জায়ান্টদের ওপর ১০% ভ্যাট আরোপ ইন্দোনেশিয়ায়

প্রকাশ: আগস্ট ০৯, ২০২০

বণিক বার্তা ডেস্ক

ইন্দোনেশিয়া সরকার আগেই ঘোষণা দিয়েছিল দেশটিতে কার্যক্রম রয়েছে এমন আবাসিক অনাবাসিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ১০ শতাংশ হারে ভ্যাট পরিশোধ করতে হবে, যা কার্যকর করা হয়েছে। এর ফলে দেশটিতে কার্যক্রম থাকা ফেসবুক, ডিজনি টিকটকসহ গুগলের মতো বৃহৎ প্রযুক্তি জায়ান্টগুলোকে উল্লেখিত হারে ভ্যাট পরিশোধ করতে হবে। গত শুক্রবার ইন্দোনেশিয়া কর কর্তৃপক্ষের অফিসের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। খবর রয়টার্স।

নভেল করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট কভিড-১৯ মহামারীতে বিপর্যস্ত বৈশ্বিক অর্থনীতি। ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবে দেশে দেশে আর্থিক সংকট তীব্র হচ্ছে। ভাইরাস মোকাবেলায় অর্থ ঢালতে গিয়ে অনেক দেশের সরকারি তহবিল তলানিতে গিয়ে ঠেকছে। অবস্থায় বর্তমান সময় ভাইরাসপরবর্তী আয় বাড়াতে মরিয়া হয়ে উঠবেন সরকারপ্রধানরা। যার অংশ হিসেবে আয়ের নতুন নতুন উৎস খুঁজে বের করার পাশাপাশি বিরাজমান খাতে বাড়তে পারে কর আরোপ। এমন পথেই হাঁটল ইন্দোনেশিয়া সরকার। দেশটিতে ইন্টারনেট সেবাদানকারী জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসায় আরোপ করা হলো মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট। ডিজিটাল পণ্য সেবা বিক্রিতে সরকারকে ভ্যাট পরিশোধ করতে হবে প্রতিষ্ঠানগুলোকে।

বিবৃতিতে দেশটির কর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এরই মধ্যে অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস, নেটফ্লিক্স, স্পটিফাই এবং গুগল এশিয়া প্যাসিফিক, গুগল আয়ারল্যান্ড গুগল এলএলসি ইউনিটকে কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) দেয়া হয়েছে।

নতুন ভ্যাট নীতিমালার আওতায় যে বিদেশী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো ইন্দোনেশিয়ায় পণ্য বা সেবা বিক্রি করে বছরে অন্তত ৬০ কোটি ইন্দোনেশীয় রুপি বা ৪১ হাজার ৪০ ডলার আয় করে কিংবা বছরে অন্তত ১২ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে আয় করে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ১০ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে।

জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। দ্রুতগতিতে বাড়ছে দেশটির ডিজিটাল অর্থনীতি। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশটির ডিজিটাল অর্থনীতি ১৩ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছবে বলে ধারণা দিয়েছে গুগল, টেমাসেক হোল্ডিংস বাইন অ্যান্ড কোম্পানির গবেষণা।

কভিড-১৯ মহামারীতে ব্যবসায়িক কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বছর রাষ্ট্রের বার্ষিক আয় ১৩ শতাংশ কমবে বলে ধারণা দিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয়। নভেল করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রায় হাজার কোটি ডলার খরচ করছে ইন্দোনেশিয়া, যা দেশটির ২০২০ সালের বাজেট ঘাটতির তিন গুণেরও বেশি।

ইন্দোনেশিয়ার কর অফিসের এক মুখপাত্র বলেন, বাইরের একই ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যাবে কর অফিস, ডিজিটাল পণ্যের জন্য ভ্যাট আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়বে বলেই মনে হচ্ছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শীর্ষ অর্থনীতির দেশ ইন্দোনেশিয়া। এতদিন ধরে দেশটিতে কার্যক্রম পরিচালনা করা ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানগুলো ন্যায্য হিস্যা অনুযায়ী সরকারকে ট্যাক্স প্রদান করে আসছিল। নভেল করোনাভাইরাস সংকট মোকাবেলায় গত মার্চেই দেশটির প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো জরুরিভিত্তিতে ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর ভ্যাট আরোপের ঘোষণা দেন। ওই ঘোষণার কয়েক সপ্তাহ পরই দেশটির পার্লামেন্টে -সংক্রান্ত নতুন আইন পাস হয়েছে।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, কভিড-১৯ মহামারীর ফলে ঘরবন্দি থাকা মানুষেরা এখন খুব বেশি ইন্টারনেটনির্ভর হয়ে উঠেছে। এতে করে অন্যান্য খাতে যখন আয় নিম্নমুখী, তখন এসব প্রতিষ্ঠানের রাজস্ব আয়ে বেশ উল্লম্ফন হয়েছে। সে কারণেই বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি টেনে তুলতে মরিয়া সরকারগুলোর নজর পড়েছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর। যে কারণে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কর্তৃপক্ষ এখন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ওপর করারোপ বৃদ্ধি করতে যাচ্ছে।

উন্নত দেশগুলোর সংগঠন অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টসহ (ওইসিডি) প্রায় ১৪০টি দেশ অ্যামাজন, ফেসবুক, অ্যাপল, গুগলসহ অন্যান্য প্রযুক্তি জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে আরো বেশি আয় বাড়ানোর জন্য নতুন করে ট্যাক্স আইন করার বিষয়ে ভাবছে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫