৩৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ

প্রকাশ: জুলাই ০৩, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক

এ মাসেই ৩৭ বিলিয়ন ডলার স্পর্শের প্রত্যাশা

প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের ওপর ভর করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। গতকাল দুপুরে প্রথমবারের মতো মাইলফলক স্পর্শ করে রিজার্ভ। দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৬ দশমিক ১৪৪ বিলিয়ন ডলার। রেমিট্যান্সের বিদ্যমান ধারা অব্যাহত থাকলে মাসের মধ্যেই দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে বলে প্রত্যাশা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, সদ্যসমাপ্ত জুন মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ১৮৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এটি একক মাস হিসেবে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ২০১৯ সালের জুনে প্রবাসীরা ১৩৬ কোটি ৮২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। এর আগে দেশে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসার রেকর্ডটি ছিল গত বছরের মে মাসে। ওই মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৭৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার।

রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠানোয় প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ধন্যবাদ জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল। অর্থমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যেসব প্রবাসীর অক্লান্ত পরিশ্রমে অর্জন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ধন্যবাদ। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রেমিট্যান্স প্রবাহের উল্লম্ফনে সরকার কর্তৃক বাস্তবায়িত শতাংশ প্রণোদনা বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিসহায়তা সহায়ক ভূমিকা রেখেছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী।

করোনার তাণ্ডবের মধ্যেই গত জুন প্রথমবারের মতো দেশের রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করে। এরপর মাস পার হওয়ার আগেই রিজার্ভে যুক্ত হলো আরো বিলিয়ন ডলার। গত ২৩ জুন ৩৫ বিলিয়ন ডলার স্পর্শ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ। আমদানিতে বড় ধসের বিপরীতে রেমিট্যান্সে বড় উল্লম্ফন এবং রফতানি খাত ঘুরে দাঁড়ানোকেই রিজার্ভ বৃদ্ধির কারণ বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তারা।

করোনার তাণ্ডব সত্ত্বেও দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রবৃদ্ধির ধারায় থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক কাজী সাইদুর রহমান। কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্টবিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক বণিক বার্তাকে বলেন, এক মাসের মধ্যেই রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়নের গণ্ডি থেকে ৩৬ বিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতেও প্রবাসীরা আগের চেয়ে বেশি অর্থ দেশে পাঠাচ্ছেন। দেশের রফতানি খাতও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। আমদানি ব্যয় কমে যাওয়া এরই মধ্যে আমদানি হওয়া পণ্যের দায় পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানোর কারণে রিজার্ভের পরিমাণ তরতর করে বাড়ছে। আশা করছি, জুলাই মাসেও রিজার্ভের প্রবৃদ্ধি ঊর্ধ্বমুখী থাকবে। এটি ৩৭ বিলিয়নের মাইলফলকও স্পর্শ করতে পারে।

কাজী সাইদুর রহমান বলেন, এরই মধ্যে আমরা কিছু বৈদেশিক ঋণ অনুদান পেয়েছি। আগস্ট মাসের পর থেকে আমদানি দায় পরিশোধে তাগাদা বাড়বে। তার পরও রিজার্ভ ৩৫ বিলিয়নের নিচে নামবে না বলেই আমরা মনে করছি। রফতানি বাড়ানোর পাশাপাশি বিলাসবহুল অপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে।

জুলাই মাসেই এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মাধ্যমে এশিয়ার নয়টি দেশের আমদানি-রফতানি সমন্বয় করা হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে পরিশোধ করতে হবে প্রায় ৭০ কোটি ডলার। দায় পরিশোধের পরও দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৬ বিলিয়নের ওপরেই থাকবে বলে আশাবাদী কাজী সাইদুর রহমান।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে হাজার ৮২০ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ লাখ ৫৪ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল হাজার ৬৪১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। হিসেবে বিদায়ী অর্থবছরে রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ৮৫ শতাংশ।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫