৩ কোটি ৩০ লাখ বেল তুলা উৎপাদনের সম্ভাবনা ভারতে

প্রকাশ: জুন ২৯, ২০২০

বণিক বার্তা ডেস্ক

ভারতের তুলা উৎপাদন নিয়ে কটন অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (সিএআই) সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে দেশটিতে পণ্যটির উৎপাদন পূর্বাভাসে কোনো পরিবর্তন আনেনি সিএআই। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ২০১৯-২০ মৌসুমে ভারতে সব মিলিয়ে কোটি ৩০ লাখ বেল (প্রতি বেলে ১৭০ কেজি) তুলা উৎপাদন হতে পারে। মে মাসের প্রতিবেদনেও একই কথা বলেছিল প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৮-১৯ মৌসুমে দেশটিতে মোট কোটি ১২ লাখ বেল তুলা উৎপাদন হয়েছিল। অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম বাড়তি থাকায় এবার তুলা আবাদে ঝুঁকেছেন দেশটির কৃষকরা। খবর ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস।

ভারতে প্রতি বছরের অক্টোবর থেকে তুলার উৎপাদন মৌসুম শুরু হয়। শেষ হয় পরের বছরের সেপ্টেম্বরে। সিআইএর তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমের শুরু থেকে মে পর্যন্ত ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে সব মিলিয়ে কোটি ৫২ লাখ ৬৫ হাজার বেল তুলার সরবরাহ রয়েছে। এর মধ্যে দেশটির বিভিন্ন রাজ্য থেকে বাজারে এসেছে কোটি লাখ ৬৫ হাজার বেল। গত অক্টোবর থেকে ৩১ মে পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বাজার থেকে দেশটি আমদানি করেছে ১৩ লাখ বেল তুলা। আর মৌসুমের শুরুতে পণ্যটির মজুদের পরিমাণ ছিল ৩২ লাখ বেল।

এদিকে সময়ের মধ্যে ভারতে তুলার অভ্যন্তরীণ ব্যবহার কোটি ৭৪ লাখ বেলে দাঁড়িয়েছে বলে প্রাক্কলন করেছে সিআইএ। একই সময়ে দেশটি থেকে পণ্যটির রফতানি দাঁড়াতে পারে ৩৭ লাখ ১০ হাজার বেলে। মে মাস শেষে দেশটিতে কৃষিপণ্যটির মোট মজুদ বেড়ে কোটি ৪১ লাখ ৫৫ হাজার বেলে উন্নীত হয়েছে বলে ধারণা করছে প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে টেক্সটাইল মিলারদের হাতে মজুদ আছে ১৭ লাখ বেল। দ্য কটন করপোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড (সিসিআই), ট্রেডার অন্যান্য খাত মিলিয়ে পণ্যটির মজুদ দাঁড়িয়েছে কোটি ২৪ লাখ ৫৫ হাজার বেল।

যা- হোক সিআইএর প্রাক্কলন অনুযায়ী, চলতি মৌসুম শেষে ভারতের বাজারে তুলার মোট সরবরাহ দাঁড়াতে পারে কোটি ৭৭ লাখ বেল। অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের পাশাপাশি সময় দেশটি আন্তর্জাতিক বাজার থেকে মোট ১৫ লাখ বেল তুলা আমদানি করতে পারে, যা আগের মৌসুমের তুলনায় ১৭ লাখ বেল কম। মৌসুম শেষে দেশটিতে পণ্যটির অভ্যন্তরীণ ব্যবহার কোটি ৮০ লাখ বেল ছুঁতে পারে। করোনা প্রাদুর্ভাবের আগে ধারণা করা হচ্ছিল, চলতি মৌসুমে ভারতে তুলার ব্যবহার কোটি ৩০ লাখ বেল ছাড়িয়ে যাবে। এছাড়া চলতি মৌসুমে দেশটি থেকে পণ্যটির রফতানি দাঁড়াতে পারে ৪৭ লাখ বেল এবং সমাপনী মজুদ বেড়ে ৫০ লাখ বেলে উন্নীত হতে পারে।

মহামারীর মধ্যে অন্যান্য পণ্যের মতো ভারতে তুলার ব্যবহারও কমেছে। ফলে পণ্যটির দামে ধস নেমেছে। তবে ভবিষ্যতে পণ্যটির দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। এছাড়া সম্প্রতি দেশটির সরকার পণ্যটির ন্যূনতম সহায়তা মূল্য বা এমএসপি বাড়িয়েছে। এতে  ভুট্টা সয়াবিনের পরিবর্তে তুলার আবাদ বাড়িয়েছেন দেশটির কৃষকরা।

নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ভারতের কয়েকটি অঞ্চলের লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে সরকারি বিধিনিষেধ হালকা হতে শুরু করেছে। এতে ধসে যাওয়া চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে তুলার দাম বাড়তে শুরু করেছে দেশটিতে। জুনের প্রথমার্ধে ভারতে পণ্যটির দাম শতাংশ বেড়েছে। এদিকে পণ্যটির এমএসপি শতাংশ বাড়িয়েছে দেশটির সরকার। ভারতের মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জে ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি বেল তুলা গড়ে ১৬ হাজার ১২০ রুপিতে বেচাকেনা হচ্ছে। এদিকে দেশটির সরকার মাঝারি ধাঁচের প্রতি বেল তুলার এমএসপি ৪৪২ রুপি বাড়িয়ে বেলপ্রতি হাজার ৩৭৬ রুপি নির্ধারণ করেছে। পণ্যটির মূল্যবৃদ্ধির আঁচে চলতি খারিফ মৌসুমে দেশটিতে তুলার আবাদ উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে।

ভারতের জিওজিট ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের প্রধান বিশ্লেষক বিনোদ টিপি জানান, চলতি বছরের জুলাই থেকে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত দেশটিতে তুলার আবাদ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪ শতাংশ বাড়তে পারে। সময় কৃষিপণ্যটির আবাদি জমির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ১৭ লাখ হেক্টরে। বিশেষ করে হরিয়ানা, পাঞ্জাব রাজস্থানসহ দেশটির উত্তর রাজ্যগুলোতে পণ্যটির আবাদ বাড়ার সম্ভাবনা বেশি।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫