অর্থনৈতিক প্রভাব হবে নজিরবিহীন ও দীর্ঘস্থায়ী : ওইসিডির পূর্বাভাস

প্রকাশ: জুন ১১, ২০২০

বণিক বার্তা ডেস্ক

অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি) সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, কভিড-১৯ মহামারীর কারণে অর্থনীতির ওপর ‘নজিরবিহীন ও দীর্ঘস্থায়ী’ প্রভাব পড়বে। সংস্থাটি আরো বলেছে, বৈশ্বিক মন্দা ৬ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। 

ওইসিডির প্রধান অর্থনীতিবিদ লরেন্স বুন বলেন সংস্থাটির সর্বশেষ অর্থনৈতিক চেহারাটা ‘খুবই শান্ত’। তার মতে, ওইসিডি প্রতিষ্ঠার পর এমন অনিশ্চিত ও নাটকীয় চেহারা আর কখনই দেখা যায়নি।  

ওইসিডির সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ৩৭টি রয়েছে ধনী দেশ। এই সংস্থাটি মনে করছে, মহামারী নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসতে পারলে বৈশি^ক মন্দা ৬ শতাংশ হবে, আর যদি দ্বিতীয়বারের মতো করোনাভাইরাস হানা দেয় তবে মন্দা পৌঁছতে পারে ৭ দশমিক ৬ শতাংশে। বুন বলেন, ‘উভয় পরিস্থিতিতেই অর্থনীতি ও মানুষের জীবনমানের ওপর ধাক্কাটা হবে নজিরবিহীন এবং প্রভাব হবে দীর্ঘস্থায়ী।’

বুন জানান, তাদের সদস্য দেশগুলোর সবাই মন্দার মধ্যে পড়বে এবং কিছু দেশের মন্দা পৌঁছবে দুই অঙ্কের ঘরে। 

ওইসিডি আশাবাদী, মহামারী নিয়ন্ত্রণ করা গেলে ২০২১ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ২ শতাংশ, আর নভেল করোনাভাইরাস দ্বিতীয়বারের মতো হানা দিলে এটি মাত্র ২ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে। 

সরকারগুলো যেভাবে দ্রুত সাড়া দিয়ে নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার কমাতে ভূমিকা রেখেছে তার প্রশংসা করে ওইসিডি বলছে, তাদের পদক্ষেপগুলোর কারণেই অর্থনৈতিকভাবে বড় ধরনের বিপর্যয়ও সামাল দেয়া গেছে। তাদের মতে, দেশে দেশে শক্তিশালী আর্থিক সহযোগিতার নিশ্চয়তা দেয়া হলে কভিড-১৯ এর পরিণতি ঠিকই থাকবে।

ওইসিডির পরামর্শ, সরকারি বরাদ্দের অর্থ যেন সঠিকভাবে ব্যয় করা হয় এবং সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় থাকা ও ক্ষতিগ্রস্ত সেক্টরই এর সুফল পায়। এমনটি করতে পারলে বেকারত্বের হারটা কমানো যাবে, যা এখন বেড়েই চলেছে। বুন মনে করেন, মহামারীর অর্থনৈতিক আঘাতে অপেক্ষাকৃত তরুণরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এই সংকটে জীবন সম্পর্কে যেন তরুণরা ভয় না পায়, আমাদের সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি যেসব পরামর্শ দেন তার মধ্যে অন্যতম হলো-মেডিকেল সরঞ্জামাদির শক্তিশালী মজুদ করা এবং এটি সরবরাহের চেইন যাতে মৃসণ ও বৈচিত্র্যময় থাকে সেটি নিশ্চিত করা। ‘ঘটনা ঘটলে ব্যবস্থা নেয়া’র মানসিকতা থেকে সরে আসার আহ্বান জানান বুন। 

ওইসিডির সেক্রেটারি জেনারেল হোসে অ্যাঞ্জেল গুরিয়া ও বুন উভয়ই মনে করেন, সংকটের সমাধান দিতে পারে বাণিজ্য। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি মনে করিয়ে দিয়ে গুরিয়া বলেন, ‘বাণিজ্য, আরো বাণিজ্য, এমনকি আরো বাণিজ্যই বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনার প্রশমন করতে পারে।’

মহামারীর মধ্যেও অর্থনৈতিক কর্মকা- সচল রাখতে ইউরোপিয়ান কমিশন ৭৫০ বিলিয়ন ইউরো পুনর্গঠন তহবিলের ঘোষণা দিয়েছে, যার মধ্যে ৫০০ বিলিয়ন দেয়া হবে অনুদান হিসেবে। এ নিয়ে বুন বলেন, ‘এই পরিকল্পনার সুবিধা হলো, এই অনুদানটা জাতীয় ঋণ হিসেবে পরিগণিত হবে না।’ এই তহবিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে শক্তিশালী ইউরোপিয়ান সংহতি দেখতে পাচ্ছেন বুন। 

সূত্র: ইউরো নিউজ   


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫