মে মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত লাতিন আমেরিকার যে দুটি মুদ্রার মান সবচেয়ে বেশি কমেছিল, ১৫ মের পর সে দুটি মুদ্রাই বেড়েছে ১০ শতাংশের বেশি হারে। মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে হঠাৎ করে মান বেড়েছে লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশের মুদ্রারও। মূলত বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি গতিশীল হওয়ার আশা তৈরি হওয়া ও বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো তাদের আর্থিক ব্যবস্থায় নগদ অর্থের প্রবাহ বাড়ানোর কারণেই এ উত্তরণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এখন পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, তাতে এসব মুদ্রার মান আরো বাড়তে পারে। খবর ব্লুমবার্গ।
লাতিন আমেরিকার ২৪টি উদীয়মান অর্থনীতির মুদ্রার মান নিয়ে পর্যালোচনা করেছে ব্লুমবার্গ। এতে দেখা গেছে, ১৫ মে থেকে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ব্রাজিলের রিয়েলের মান (১৭ শতাংশ)। এছাড়া মেক্সিকোর পেসোর মান বেড়েছে ১১ শতাংশের বেশি। অথচ চলতি বছরের শুরু থেকে ১৫ মে পর্যন্ত এ দুটি মুদ্রার মানই কমেছিল সবচেয়ে বেশি হারে। ব্রাজিলের রিয়েলের মান হারিয়েছিল ৩১ শতাংশ। আর পেসোর মান পড়েছিল ২১ শতাংশ।
বিশ্বজুড়ে উদীয়মান অর্থনীতিগুলোয় সম্পদমূল্যে প্রবৃদ্ধি লাতিন আমেরিকার মুদ্রাগুলোর মান বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে। এর বাইরে আরো কিছু প্রভাবক কাজ করেছে, যেগুলো আপাতদৃষ্টিতে গুরুত্বহীন বলে মনে হতে পারে। মেক্সিকো আবার তাদের ‘ক্যারি ট্রেড’
কৌশলে ফিরে গেছে। এ পদ্ধতিতে স্বল্প সুদহারবিশিষ্ট মুদ্রায় ঋণ গ্রহণ করা হয়। পরে সেই ঋণ অন্য মুদ্রায় রূপান্তর করা হয়। ক্যারি ট্রেড কৌশলের আওতায় স্বল্প সুদে ঋণ নিয়ে এমন সম্পদে বিনিয়োগ করা হয়, সেখান থেকে উচ্চহারে রিটার্ন পাওয়া যায়। মেক্সিকো এ কৌশলে ফিরে যাওয়ার পর তাদের মুদ্রার মান বেড়েছে। এছাড়া ব্রাজিলে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং চিলি ও পেরুর তামার দাম বেড়ে যাওয়াও মুদ্রার মান বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।
নভেল করোনাভাইরাসের কারণে লাতিন আমেরিকার দেশগুলো স্বাস্থ্যগত দিক থেকে বেশ বিপাকে রয়েছে। এখন পর্যন্ত বিশ্বে যত মানুষ কভিড-১৯ রোগে মারা গেছে, তার ৪০ শতাংশই এ অঞ্চলের। করোনা সংক্রমণে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্রাজিল। দেশটিতে ৫ লাখ ৮৫ হাজার মানুষ কভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ৩২ হাজার ৫৬৮ জন। সেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৩৪৯ জনে দাঁড়িয়েছে, যা দেশটির জন্য নতুন রেকর্ড। মেক্সিকোয়ও একদিনে প্রাণহানির সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়েছে।