গভর্নরের সঙ্গে বিএসইসি চেয়ারম্যানের সাক্ষাৎ

ঋণের সুদ স্থগিতের সুবিধা পাবে পুঁজিবাজারের প্রতিষ্ঠানগুলো

প্রকাশ: জুন ০২, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চেন্ট ব্যাংক বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও এপ্রিল মে মাসের ব্যাং ঋণের সুদ স্থগিতের সুবিধা পাবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর . ফজলে কবির। গতকাল পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি কথা জানান। তাছাড়া ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে অবিলম্বে ব্যাংকের লভ্যাংশ বিতরণ করা এবং বিশেষ তহবিল গঠন করে পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে অনুরোধ জানান বিএসইসি চেয়ারম্যান।

সভায় বিএসইসির পক্ষ থেকে কমিশনার খোন্দকার কামাল উজ্জামান অধ্যাপক . শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ এবং নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ডেপুটি গভর্নর এসএম মনিরুজ্জামান আহমেদ জামাল, উপদেষ্টা আল্লাহ মালিক কাজেমি, নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম, মো. মাসুদ বিশ্বাস আবু ফারাহ মো. নাসের উপমহাব্যবস্থাপক মো. আমিনুর রহমান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, অর্থবাজার পুঁজিবাজার অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি বিধায় দুই বাজারে সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি এগিয়ে নিতে হবে। বর্তমানে কভিড-১৯-এর মতো কঠিন পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতিকে চলমান রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সবাইকে একই উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করার বিষয়ে সভায় গুরুত্বারোপ করা হয়।

আলোচনায় বিএসইসি চেয়ারম্যান পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে ব্যাংকের বিশেষ তহবিল, ব্যাংকগুলোর লভ্যাংশ বিতরণের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন এবং এপ্রিল মে মাসের ব্যাংকঋণের সুদ স্থগিতের ক্ষেত্রে মার্চেন্ট ব্যাংক বাজার মধ্যস্থতাকারীদের অন্তর্ভুক্ত করা তিনটি বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য প্রতিটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সর্বোচ্চ ২০০ কোটি টাকার তহবিল গঠনের সুযোগ রেখে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি জারি করা প্রজ্ঞাপনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিএসইসি চেয়ারম্যান জানান, এখন পর্যন্ত মাত্র দুটি বাণিজ্যিক ব্যাংক তহবিল থেকে আংশিক অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেছে। আর আটটি ব্যাংক তাদের পর্ষদ সভায় তহবিল গঠনের বিষয়ে অনুমোদন নিলেও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে এগিয়ে আসেনি। বিষয়ে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বছরের ১১ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ২০১৯ হিসাব বছরের জন্য ব্যাংকগুলোর ঘোষিত লভ্যাংশ ৩০ সেপ্টেম্বরের আগে বিতরণ না করা-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনের বিষয়টি উল্লেখ করে বিএসইসি চেয়ারম্যান পুঁজিবাজারের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা যাতে অবিলম্বে লভ্যাংশ পান, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সময় বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি বিবেচনা করছে বলে আশ্বস্ত করেন গভর্নর।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এপ্রিল মে মাসের ব্যাংকঋণের সুদ স্থগিত করার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিএসইসি চেয়ারম্যান এক্ষেত্রে মার্চেন্ট ব্যাংক বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানান, মার্চেন্ট ব্যাংক বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রেও এপ্রিল মে মাসের সুদ স্থগিতের সুবিধা প্রযোজ্য হবে। এছাড়া প্রজ্ঞাপনের আওতায় ভবিষ্যতে সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে মার্চেন্ট ব্যাংক বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানান গভর্নর।

বিএসইসি বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে সমন্বয় আরো জোরদার করার জন্য একটি সমন্বয় কমিটি গঠনের বিষয়ে সভায় আলোচনা করা হয়। কমিটিতে বিএসইসির পক্ষে কমিশনার অধ্যাপক . শেখ শামসুদ্দিন আহমেদকে ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে প্রস্তাব করা হয়। সমন্বয় কমিটির প্রস্তাবে গভর্নর সম্মতি জানান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে নির্বাহী পরিচালক মো. মাসুদ বিশ্বাস প্রতিনিধিত্ব করবেন বলে জানানো হয়। কমিটি প্রথম তিন মাসের প্রতি মাসে আর পরবর্তী সময়ে দুই মাস অন্তর সভা করবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এছাড়া সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ডেরিভেটিভস, বন্ড, লভ্যাংশ বিতরণসহ বিভিন্ন সভার বাধ্যবাধকতার বিষয়ে আইনগত জটিলতা নিরসনে বিএসইসির সহায়তা চাওয়া হয়। সময় বিএসইসির পক্ষ থেকে বিষয়ে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়।

 


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫