চলতি বছরের শুরু থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের রেকর্ড দরপতনের পেছনে বড় একটি কারণ ছিল চীনে চাহিদা কমতে থাকা। নভেল করোনাভাইরাসের মহামারীর বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে লকডাউন ঘোষণার পর থেকে দেশটিতে জ্বালানি পণ্যটির চাহিদায় রেকর্ড পতন দেখা দেয়। তবে চীনে মহামারী পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসায় লকডাউন উঠে গেছে। বাড়তে শুরু করেছে জ্বালানি তেলের চাহিদা। এ ধারাবাহিকতায় বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) দেশটিতে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের অভ্যন্তরীণ চাহিদা আগের প্রান্তিকের তুলনায় ১৬ শতাংশের বেশি বাড়তে পারে। যুক্তরাজ্যের জ্বালানিবিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান উড ম্যাকেঞ্জির সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। খবর রয়টার্স ও সিনহুয়া।
প্রতিষ্ঠানটির পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে চীনে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের অভ্যন্তরীণ চাহিদা আগের প্রান্তিকের তুলনায় বাড়তে পারে ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়তে পারে। তবে এ চাহিদা প্রবৃদ্ধি আগের প্রান্তিকের তুলনায় বাড়লেও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ কম থাকতে পারে। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের পাশাপাশি চলতি প্রান্তিকে চীনে গ্যাসোলিন ও ডিজেলের অভ্যন্তরীণ চাহিদাও বাড়তির দিকে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
উড ম্যাকেঞ্জির গবেষণা সহকারী ইউওয়ে পেই বলেন, লকডাউনের কারণে মানুষের চলাচল, শিল্পোৎপাদন, ব্যবসা-বাণিজ্য সীমিত হয়ে পড়ায় চীনে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা কমে গিয়েছিল। তবে এরই মধ্যে লকডাউন তুলে নিয়েছে চীন সরকার। স্বাভাবিক হয়ে এসেছে শিল্পোৎপাদন ও ব্যবসা খাত। মানুষের চলাচল বেড়ে গতি পেয়েছে পরিবহন খাতও। এ কারণে দেশটিতে ধীরে ধীরে বাড়ছে জ্বালানি তেলের চাহিদা।
চীন অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড় ভোক্তা ও আমদানিকারক দেশ। এ কারণে দেশটিতে জ্বালানি পণ্যটির চাহিদায় উত্থান-পতন আন্তর্জাতিক বাজারে এর মূল্য নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। এখন দেশটিতে চাহিদা বাড়তে শুরু করলে আন্তর্জাতিক বাজারেও অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী গতি ফিরে পেতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।