চীনে গত মাসে কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম কিছুটা কমেছে। এ সময়ে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স (পিএমআই) ২০ বেসিস পয়েন্ট কমে ৫০ দশমিক ৬ পয়েন্টে নেমে এসেছে, যা প্রত্যাশিত মাত্রার চেয়েও কিছুটা কম। খবর ব্লুমবার্গ।
একটি দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম অর্থাৎ ম্যানুফ্যাকচারিং ও সেবা খাত সংকোচন না প্রসারণের পথে রয়েছে, তা বোঝাতে নির্দেশক হিসেবে পিএমআই ব্যবহার করা হয়। এর মান ৫০-এর বেশি থাকার মানে অর্থনৈতিক কার্যক্রম সম্প্রসারণের পথে রয়েছে।
চীনের ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের পিএমআই এখনো ৫০-এর ওপরেই রয়েছে। তবে গত মাসে তা এপ্রিলের তুলনায় কমেছে। এপ্রিলে সূচকটির অবস্থান ছিল ৫০ দশমিক ৮ পয়েন্ট। দেশটির ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকস গতকাল এ তথ্য প্রকাশ করেছে। ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে নন-ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে চীনের পিএমআই ছিল ৫৩ দশমিক ৬।
চীনে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো আবার ধীরে ধীরে উৎপাদনে ফিরছে। কিন্তু কার্যাদেশ না থাকায় উৎপাদন কার্যক্রম প্রত্যাশা অনুযায়ী গতি পাচ্ছে না। হংকংয়ে আইএনজি ব্যাংকের বৃহত্তর চীনবিষয়ক প্রধান অর্থনীতিবিদ আইরিস প্যাং বলেছেন, ‘বিশ্বের বড় কিছু শহরে লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। কিন্তু বৈশ্বিক চাহিদা এখনো বেশ দুর্বল রয়েছে।’
মে মাসে নতুন রফতানি কার্যাদেশের উপসূচক বেড়ে ৩৫ দশমিক ৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে কর্মসংস্থানের সূচক কিছুটা কমে ৪৯ দশমিক ৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর নন-ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে কর্মসংস্থান সূচক দাঁড়িয়েছে ৪৮ দশমিক ৫ পয়েন্টে।
নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে স্থবির হয়ে পড়া অর্থনীতির চাকা সচল করতে এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিল করা শুরু হয়েছে। তবে বৈশ্বিক অর্থনীতি নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েই গেছে। এ কারণে উচ্চ প্রবৃদ্ধির আশা ত্যাগ করেছে চীন। সম্প্রতি ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কংগ্রেসে সরকার চলতি বছরের জন্য প্রণোদনা প্যাকেজেরও ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া মুদ্রানীতি সহজ করা এবং অবকাঠামো খাতে লাখ লাখ কোটি ইউয়ান বাড়তি খরচের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে জিনপিং প্রশাসন।
প্রথম প্রান্তিকের অচলাবস্থা শেষে চীনের স্থানীয় কিছু কারখানা আবার তাদের কর্মীদের কাজে ফিরিয়েছে এবং উৎপাদন বাড়িয়েছে। কিন্তু তাদের বেশির ভাগকেই মজুদ বেড়ে যাওয়া ও কার্যাদেশের অনিশ্চয়তার সংকটে পড়তে হয়েছে। আর যারা উৎপাদনে ফিরতে পারেনি, তারা করোনার আর্থিক ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি। এর অর্থ হলো, চীনে খেলাপি ঋণ ও বেকারত্বের হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।