কুড়িগ্রামে উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও বৃষ্টিতে পানি বেড়েছে ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদে। এতে চরাঞ্চলের জমি প্লাবিত হয়ে তলিয়ে গেছে বোরো ধান। কৃষকরা জানিয়েছেন, পাকা ধান কাটার আগেই পানিতে তলিয়ে গেছে। দ্রুত পানি নেমে না গেলে তলিয়ে থাকা এসব ধান সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার নদের অববাহিকার দুই শতাধিক চরে বোরো আবাদ করেছেন কৃষকরা। যেসব এলাকায় ব্রি-২৯ জাতের ধান আবাদ হয়েছে তা এখনো ঘরে তোলা যায়নি। কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে দুই নদের পানি বেড়ে সদর উপজেলার পোড়ার চর, মাঝিয়ালির চর, বড়ুয়া, রলাকাটা, ভগবতীপুর, পার্বতীপুর, ঝুনকার চর, নাগেশ্বরীর নারায়ণপুর, কালার চর, অষ্টআশির চর, উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা, জাহাজের আলগা, দইখাওয়া ও আইরমারীর বিভিন্ন এলাকায় বোরো ক্ষেত তলিয়ে গেছে।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের পার্বতীপুর চরের কৃষক খোকা মন্ডল জানান, চরের পাঁচ বিঘা জমিতে ব্রি-২৯ জাতের বোরো ধান চাষ করেছি। হঠাৎ করেই নদীতে পানি বাড়ায় ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এক বিঘা জমির ধান এখনো পানির ওপরে আছে। লোকজন নিয়ে সে ধান কাটছি। বাকিগুলো এখন পানির নিচে।
সদরের ভগবতীপুর চরের আয়নাল হক জানান, ধারদেনা করে আবাদ করা এ ধান দিয়েই আমাদের সারা বছর চলতে হয়। কিন্তু এবার প্রকৃতির বৈরী আচরণে অর্ধেক ধানও ঘরে তুলতে পারছি না।
যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য শাহা জামাল জানান, যাত্রাপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলে আবাদ করা বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কয়েক দিন ধরে এসব ধান পানির নিচে থাকায় নষ্ট হওয়ার উপক্রম। এতে কৃষকের অপূরণীয় ক্ষতি হবে।
যাত্রাপুর ইউপির চেয়ারম্যান মো. আইযুব আলী সরকার জানান, চরাঞ্চলগুলোর কৃষকরা যে বোরো আবাদ করেছেন পানি আসার আগে তার অর্ধেকও ঘরে তুলতে পারেননি। এখন দ্রুত পানি নেমে না গেলে তলিয়ে থাকা ধান নষ্ট হয়ে যাবে। কৃষকদের এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোস্তাফিজার রহমান প্রধান জানান, চরাঞ্চলের যেসব জমিতে ধান দেরিতে লাগানো হয়েছে শুধু সেসব ধানক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানতে পেরেছি। ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে কাজ চলছে।