লক্ষ্মীপুরে মৃত রেলের সাবেক কর্মকর্তা করোনা আক্রান্ত ছিলেন না

প্রকাশ: মে ২৪, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ব্যুরো

ঢাকা থেকে লক্ষ্মীপুরে গ্রামের বাড়িতে আসার পর রেলের সাবেক কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন মোহন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে দাবি করে স্থানীয় বাসিন্দারা। গ্রামবাসী ও প্রশাসনের চাপে রায়পুর উপজেলা হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনাও দেন তিনি। রিপোর্ট আসার আগেই ১৬ মে স্ট্রোক করে মারা যান মোজাম্মেল হোসেন। গত ২২ মে রেলের সিগন্যাল বিভাগের সাবেক ওই কর্মকর্তার করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। 

রায়পুর থানা সূত্রে জানা গেছে, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সেকশনের সিগন্যালিং বিভাগের এমএসআর এর দায়িত্ব থেকে ২০১৩ সালে অবসরে যান মোজাম্মেল হোসেন (৬৫)। অবসরের পর তিনি দীর্ঘদিন গ্রামের বাড়িতে থাকলেও সম্প্রতি ঢাকার শনিরআখড়ায় ছেলের সঙ্গে অবস্থান করছিলেন। গত ১৩ মে তিনি রায়পুরের বামনী ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে আসেন। গ্রামে আসলে স্থানীয় প্রভাবশালীরা তার করোনা পজেটিভ বলে প্রচার করতে থাকে। মোজাম্মেল হোসেন ওই সময় করোনায় আক্রান্ত নয় বলে দাবি করলেও প্রতিবেশী ও স্থানীয়রা তাকে ও তার পরিবারকে বাড়িতে আবদ্ধ করে রেখে পুলিশকে খবর দেয়। এরপর পুলিশের মধ্যস্থতায় ১৫ মে মোজাম্মেল হোসেনের নমুনা সংগ্রহ করে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। পুলিশ ওই সময় কাঞ্চনপুর গ্রামের দুটি বাড়ি লকডাউন করে দেয়য়। এরপর ২২ মে আসা রিপোর্টে তার নমুনা নেগেটিভ আসে বলে জানিয়েছে রায়পুর থানা কর্তৃপক্ষ। 

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে গ্রামে আসার পর করোনা আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ উঠলে মোজাম্মেল হোসেন ও তার বাড়ি নিয়ে করা স্থানীয় যুবকের এক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই ভিডিওতে তিনি করোনা আক্রান্ত নয় বলে বার বার দাবি করা হয়। মোজাম্মেল হোসেনের মৃত্যুর পর ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।  

জানতে চাইলে রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি-তদন্ত) শিপন বড়ুয়া বণিক বার্তাকে বলেন, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসলে স্থানীয় মানুষের মধ্যে এক ধরনের ভীতি কাজ করে। রেলের সাবেক ওই কর্মকর্তা ঢাকা থেকে গ্রামে আসলে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। এরপর পুলিশ গিয়ে বাড়িটি লকডাউন করে এবং ওই ব্যক্তির করোনা টেস্টের জন্য বলা হয়। মারা যাওয়ার এক সপ্তাহ পর আসা রিপোর্টে তার করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।  

আজ রোববার সকালে নিহত মোজাম্মেল হোসেন মোহনের সন্তান মো. মনির হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, আমার বাবার হৃদরোগের সমস্যা ছিল। বার্ধক্যজনিত সমস্যা থাকলেও শুধুমাত্র ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসার অপরাধে প্রতিবেশীরা সামাজিক ভাবে হেয়প্রতিপন্ন করেন। এসব কারণে ১৬ মে বাবা স্ট্রোক করে মৃত্যুবরণ করেন। যদিও মারা যাওয়ার পর গ্রামবাসীসহ প্রভাবশালীরা আমার বাবার লাশ দাফন করতে বিভিন্ন ধরনের হয়রানি করে। মূলত করোনার উপসর্গ রয়েছে এমন দাবি তুলে অপদস্থ করায় বাবা মোজাম্মেল হোসেন স্ট্রোক করেছেন বলে দাবি করেন তিনি। 


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫