নির্বাহী পরিচালক, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। অর্থনীতিতে মাস্টার্স ও পিএইচডি করেছেন ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন, যুক্তরাজ্য থেকে। পোস্টডক্টরাল রিসার্চ করেছেন কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্র থেকে। ভিজিটিং ফেলো ছিলেন নরওয়ের ক্রিশ্চিয়ান মিখেলসেন ইনস্টিটিউট, দক্ষিণ কোরিয়ার কোরিয়া ইনস্টিটিউট ফর ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনমিকস অ্যান্ড ট্রেড ও ভারতের সেন্টার ফর স্টাডি অব সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড পলিসিতে। বিআইডিএসে রিসার্চ ফেলো, ইউএনডিপিতে পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও ইউএসএআইডিতে অর্থনীতিবিদ হিসেবে কাজ করেছেন। করোনা পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রুহিনা ফেরদৌস
চলমান করোনা
পরিস্থিতি অনানুষ্ঠানিক খাতের মানুষদের অর্থনৈতিক সংকটকে কতটা তীব্রতর করবে?
নভেল
করোনাভাইরাস
বিরাট
স্বাস্থ্য
সংকট
তৈরি
করছে,
যা
আমরা
আগে
কখনো
দেখিনি।
স্বাস্থ্য
থেকে
এখন
তা
আবার
অর্থনীতিকে
গ্রাস
করেছে।
সারা
বিশ্ব
একটি
অর্থনৈতিক
সংকটে
পড়েছে।
আমরাও
দুটো
সংকট
একসঙ্গে
অনুভব
করছি।
করোনা
প্রাদুর্ভাব
রোধের
জন্য
সরকার
যে
লকডাউনের
পদক্ষেপ
গ্রহণ
করেছে,
তা
সময়োপযোগী।
এ
রকম
মহামারী
রোধ
করতে
হলে
এছাড়া
উপায়
নেই।
কিন্তু
এর
ফলে
যে
অর্থনৈতিক
সংকট
দেখা
দিয়েছে,
তাও
উপেক্ষা
করা
যায়
না।
এ
সময়ে
প্রচুর
মানুষের
কাজ
নেই।
শুধু
সরকারি,
কিছু
বেসরকারি
খাত
ছাড়া
অন্যরা
কর্মহীন।
কারণ
তারা
অপ্রাতিষ্ঠানিক
খাতে
কাজ
করেন,
যেখানে
বেতন
কম,
কাজের
নিশ্চয়তা
কম,
কাজের
কোনো
নিয়োগপত্র
থাকে
না।
বাংলাদেশের
প্রায়
৮৫
শতাংশ
মানুষ
অনানুষ্ঠানিক
খাতে
কাজ
করে,
যাদের
সংখ্যা
প্রায়
পাঁচ
কোটি,
তাদের
আয়টা
দৈনিকভিত্তিক,
তারা
অনেকটা
‘দিন
আনে
দিন
খায়’
ধরনের
কাজ
করে।
দিনমজুর,
নির্মাণ
শ্রমিক,
রিকশাচালক,
সব
ধরনের
পরিবহন
কর্মী,
ফুটপাতের
দোকানদার,
নাপিত,
রাস্তার
পাশের
চা
কিংবা
খাবার
বিক্রেতা,
বিউটি
পার্লারের
কর্মী,
বাসাবাড়ির
সহায়তা
কর্মী,
অফিস
বা
বাসাবাড়ির
গাড়িচালক
এবং
এ
রকম
বহু
কর্মী
আয়হীন
হয়ে
পড়েছেন।
সুতরাং
অনানুষ্ঠানিক
খাতের
লোকেরাই
সবচেয়ে
বেশি
ক্ষতিগ্রস্ত।
অনানুষ্ঠানিক খাতে
কর্মরতদের বিপদটা এত বেশি
কেন?
অপ্রাতিষ্ঠানিক
খাতে
কর্মরতদের
বেতন
প্রাপ্তি
ও
চাকরির
কোনো নিশ্চয়তা
নেই।
অনেকে
বাসার
কাজের
সহযোগিতাকারী
কিংবা
ড্রাইভারকে
হয়তো
বেতনসহ
ছুটি
দিয়েছেন।
আবার
অনেকে
দিচ্ছেন
না।
কিন্তু
অন্যান্য
খাত,
যেখানে
১০০
থেকে
২০০
বা
তার
উপরে
শ্রমিক
রয়েছেন,
সেসব
খাতের
মালিকরা
অনীহা
প্রকাশ
করছেন।
এসব
খাতে
কর্মরত
শ্রমিক-কর্মীরা
দৈনিক
মজুরিতে
কাজ
করেন
না,
মাসিক
মজুরি
থাকে
তাদের।
কিন্তু
কাজের
প্রকৃতিটা
এমন
যে
তাদের
অবস্থাটা
অনেকটা
দৈনিক
মজুরিভিত্তিক
মানুষের
মতোই।
সুতরাং
তাদেরও
সরকারি
সাহায্যের
আওতায়
আনতে
হবে।
অতিদরিদ্র,
দরিদ্র
এমনকি
দারিদ্র্যসীমার
উপরে
যারা
রয়েছেন,
তাদেরও
বর্তমানে
সাহায্যের
প্রয়োজন
পড়ছে।
আর কারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন?
এ
সংকটকালে
দারিদ্র্যসীমার
কিছুটা
উপরে
যারা
ছিলেন,
যেমন
কম
আয়ের
চাকরিজীবী,
ছোট
স্কুলের
শিক্ষক,
অফিস
সহকারী,
যাদের
বেতন
মাসে
২০
হাজার
থেকে
৩০
হাজার
টাকা
পর্যন্ত
ছিল,
তারাও
তো
আয়হীন
হয়ে
পড়েছেন।
তারা
কোথায়
যাবেন?
কীভাবে
হাত
পাতবেন?
তাদেরকেও
সরাসরি
অর্থ
দিতে
হবে।
তাই
করোনা
পরিস্থিতিতে সরকারকে সাহায্যের
গণ্ডিটা
বাড়াতে
হবে।
শুধু
অতিদরিদ্র
বা
দারিদ্র্যের
গণ্ডির
মধ্যে
থাকলে
চলবে
না।
অনেকে
আছেন
নিম্নমধ্যবিত্ত
বা
স্বল্প
আয়ের
লোক,
তারা
হয়তো
কোনো
প্রতিষ্ঠানে
কাজ
করছেন,
কিন্তু
তাদের
এখন
বেতন
নেই।
তাদের
অনেকেরই
আয়
বন্ধ
হয়ে
গেছে।
সবচেয়ে
বিপদটা
হচ্ছে
নিম্নমধ্যবিত্ত
বা
স্বল্প
আয়ের
লোকদের
যাওয়ার
কোনো
জায়গা
নেই।
তারা
কোথাও
সাহায্য
নিতে
গেলে
সামাজিকভাবে
কুণ্ঠিত
বোধ
করবেন।
তারা
না
খেয়ে
থাকলেও
হাত
পাততে
পারছেন
না।
বর্তমান
পরিস্থিতিতে
আমাদের
এই
মানুষগুলোর
কথাও
মনে
রাখতে
হবে,
তাদেরও
খাইয়ে-পরিয়ে
বাঁচিয়ে
রাখার
সময়
এখন।
তাদের
বাইরে
রেখে
বলতে
পারব
না
যে
আমরা
করোনা
সংকট
ঠিকমতো
মোকাবেলা
করছি।
বর্তমান এ
স্বাস্থ্য সংকট
যাতে আমাদের অর্থনৈতিক সংকটকে তীব্রতর না
করে, সে
ব্যাপারে কী
করা উচিত?
মানুষ
যাতে
না
খেয়ে
মারা
না
যায়,
সে
ব্যবস্থা
সর্বাগ্রে
করতে
হবে।
পৃথিবীর
বিভিন্ন
দেশে
লকডাউন
চলছে।
কিন্তু
যাদের
সাহায্য প্রয়োজন,
তাদের
জন্য
সরকার
থেকে
বিশেষ
ধরনের
ব্যবস্থা
নেয়া
হচ্ছে।
আমাদের
দেশে
যাদের
খাবার
দরকার
তাদের
দোরগোড়ায়
তা
সরবরাহ
করতে
হবে।
বেসরকারি
উন্নয়ন
ও
সমাজসেবী
প্রতিষ্ঠানগুলোকে
যুক্ত
করে
সরকার
দরিদ্র
মানুষের
সাহায্যের
ব্যবস্থা
করতে
পারে।
এখানে
একটা
প্রশ্ন
হচ্ছে,
কতদিন
তাদের
জন্য
এ
ব্যবস্থা
করতে
হবে?
তা
এখনো
অনিশ্চিত।
আগামী
দুই
থেকে
তিন
মাস
কিংবা
তারও
বেশি
সময়
ধরে
এ
অবস্থা
চলতে
পারে।
এক্ষেত্রে
গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়টি
হচ্ছে
কাদের
প্রয়োজন
আর
কাদের
প্রয়োজন
নেই।
আমাদের
বেশ
বড়
সামাজিক
নিরাপত্তাবেষ্টনী
কর্মসূচি
রয়েছে।
তার
আওতায়
২০২০
অর্থবছরে
৭৪
হাজার
৩৬৭
কোটি
টাকা
বরাদ্দ
রাখা
হয়েছে।
এর
অধীনে
১০০টির
বেশি
কর্মসূচি
রয়েছে।
এ
পর্যায়ে
তার
আওতাটা
অনেক
বেশি
বৃদ্ধি
করতে
হবে।
দুটি
বিষয়
এখানে
গুরুত্বপূর্ণ।
সামাজিক
নিরাপত্তাবেষ্টনী
কর্মসূচির
সুবিধাভোগীদের
যে
তালিকা
আছে,
সেটিতে
কিছু
সমস্যা
রয়েছে।
যাদের
প্রয়োজন
নেই,
তাদের
অনেকেই
প্রভাবশালীদের
সাহায্য
নিয়ে
তালিকায়
নাম
লিখিয়ে
নিয়েছেন।
আর
যাদের
প্রয়োজন,
তাদের
অনেকেই
তালিকা
থেকে
বাদ
পড়েছেন।
এ
তালিকা
ঠিক
করার
এটা
একটা
সুযোগ।
তালিকা
তৈরির
ব্যাপারে
স্বচ্ছতা
দরকার।
বর্তমানে
যে
তালিকাটা
রয়েছে,
সেখানে
দেখা
যায়
অনেকে
রাজনৈতিক
যোগসূত্রতা
বা
প্রভাবশালীর
সঙ্গে
সম্পর্কের
কারণে
তালিকায়
চলে
এসেছেন।
কিন্তু
হতদরিদ্র
ব্যক্তিটিই
হয়তো
বাদ
পড়ে
গেছে।
এখন
তাদেরকে
এ
তালিকার
মধ্যে
আনতে
হবে
এবং
এ
তালিকা
তৈরির
জন্য
এনজিও
অর্থাৎ
যারা
তৃণমূল
পর্যায়ে
কাজ
করে,
তাদের
সাহায্য
নিতে
হবে।
কারণ
বিভিন্ন
গ্রাম
ও
গরিব
জনগোষ্ঠীকে
নিয়ে
কর্মরত
এনজিওগুলো
খুব
ভালো
জানে
সত্যিকারের
অসহায়
বা
দরিদ্র
কারা।
সুতরাং
এনজিওগুলোকে
তালিকা
তৈরির
মধ্যে
অন্তর্ভুক্ত
করতে
হবে।
স্বজনপ্রীতি
করে
কারো
নাম
রাখলাম
আর
কারো
নাম
রাখলাম
না,
এখন
এটা
করলে
হবে
না।
এখন
মানুষকে
বাঁচিয়ে
রাখার
কথা
ভাবতে
হবে।
তাই
তালিকাটা
খুব
দ্রুত
করতে
হবে।
এ
ধরনের
তালিকা
তৈরির
বিষয়টি
কিন্তু
খুব
সময়সাপেক্ষ
নয়।
অনেকে
বলছেন,
এখন
আবার
তালিকা
তৈরি
করবে
কখন
আর
খাবার
দেবে
কখন?
এরই
মধ্যে
যে
তালিকা
রয়েছে,
তার
ভিত্তিতে
তালিকা
সম্প্রসারণ
করতে
হবে
এবং
তালিকা
থেকে
যারা
বাদ
পড়ে
গেছেন,
তাদের
অন্তর্ভুক্ত
করতে
হবে।
আর
এটা
খুব
দ্রুতই
করা
সম্ভব।
গ্রামের
পাশাপাশি
শহরেও
দরিদ্রদের
তালিকা
তৈরি
করতে
হবে।
গ্রামে
যেমন
যতটা
সহজে
সামাজিক
নিরাপত্তা
কর্মসূচি
চালানো
যায়,
শহরে
কিন্তু
ততটা
সহজ
নয়।
শহুরে
দরিদ্রদের
তালিকা
আমাদের
কাছে
তেমন
সঠিকভাবে
নেই।
এক্ষেত্রে
তালিকাটা
কীভাবে
দ্রুত
করা
যায়,
তা
সর্বোচ্চ
গুরুত্ব
দিতে
হবে।
ব্র্যাক
ঢাকা
শহরের
বিভিন্ন
বস্তির
তালিকা
করেছে।
সেটা
ব্যবহার
করা
যেতে
পারে।
তাছাড়া
পিছিয়ে
পড়া
মানুষদের
ব্যাংক
অ্যাকাউন্ট
আছে,
যাদের
এখন
আর্থিক
অন্তর্ভুক্তির
মধ্যে
নেয়া
হয়েছে।
তাই
কাজটি
খুব
কঠিন
নয়।
আরো
একটা
উপায়
রাখা
যেতে
পারে।
যেসব
দরিদ্র
মানুষ
বাদ
গেল,
তারা
যাতে
নিজেরাই
তাদের
পরিচয়পত্র
দিয়ে
নিজেকে
তালিকায়
অন্তর্ভুক্ত
করতে
পারে,
সেজন্য
একটা
অনলাইন
নাম্বার
দেয়া
উচিত।
এ
সেবাটা
খুব
দক্ষতার
সঙ্গে
দিতে
হবে।
এ তো গেল
দরিদ্রের সংখ্যা নির্ধারণের বিষয়টি। এখন তাদের
সহায়তা কীভাবে দেয়া যাবে?
তাদের
দুই
ধরনের
সমর্থন
দিতে
হবে।
একটা
খাদ্যনিরাপত্তা,
অন্যটা
হচ্ছে
অর্থসহায়তা।
তাদের
খাবারের
ব্যবস্থা
করতে
হবে,
তাদের
কাছে
খাদ্য
পৌঁছে
দিতে
হবে।
তাদের
যদি
বাইরে
এসে
লাইনে
দাঁড়িয়ে
খাবার
সংগ্রহ
করতে
হয়,
সেক্ষেত্রে
সামাজিক
দূরত্ব
বজায়
রাখা
সম্ভব
হবে
না।
তাই
ঘরে
খাবার
পৌঁছে
দেয়ার
ব্যবস্থা
করতে
হবে।
তাদের
কিছু
নগদ
অর্থও
দরকার
অন্যান্য
প্রয়োজনীয়
জিনিস
ক্রয়ের
জন্য।
প্রণোদনা
প্যাকেজে
অতিদরিদ্র,
বয়স্ক,
বিধবা—এ
রকম
মানুষের
জন্য
সামাজিক
নিরাপত্তাবেষ্টনীর
আওতা
বাড়ানো
হয়েছে।
চলতি
অর্থবছর
২০২০
সালে
সামাজিক
নিরাপত্তাবেষ্টনীর
জন্য
বাজেটে
৭৪
হাজার
৩১৪
কোটি
টাকা
বরাদ্দ
রাখা
আছে।
এখন
এর
আওতা
বাড়িয়ে
আরো
৬
হাজার
৮৫৯
কোটি
টাকা
যোগ
করা
হলো।
কিন্তু
আসলে
প্রয়োজন
আরো
বেশি।
আমার
মতে,
এই
পরিমাণ
আরো
বাড়াতে
হবে।
সরকারকে
এখানে
আরো
উদার
হতে
হবে।
আরেকটি
বিষয়
হচ্ছে,
ত্রাণ
সবাই
পাচ্ছে
কিনা
তা
তদারক
করা।
এ
ধরনের
কর্মসূচিগুলোয়
বিভিন্ন
ধরনের
ফাঁকফোকরের
কথা
আমরা
জানি।
বিভিন্ন
গবেষণা
এবং
গণমাধ্যমে
অপচয়
ও
দুর্নীতির
কথা
এসেছে।
কিছু
জায়গায়
করোনার
ত্রাণ
বিতরণ
ঘিরে
দুর্নীতি
হচ্ছে।
এগুলো
বন্ধ
করতে
হবে।
এক্ষেত্রে
সর্বোচ্চ
সতর্কতা,
স্বচ্ছতা
ও
জবাবদিহিতা
নিশ্চিত
করতে
হবে।
কেননা
এ
সংকটকালে
দুর্নীতির
মাধ্যমে
পকেট
ভারী
করতে
দেয়া
যাবে
না।
স্বচ্ছতা ও
জবাবদিহিতা কীভাবে নিশ্চিত করা
যাবে?
প্রথম
কথা
হচ্ছে
সরাসরি
অর্থ
মোবাইল
ব্যাংকিংয়ের
মাধ্যমে
গরিবদের
অ্যাকাউন্টে
চলে
যাবে।
এখানে
মধ্যস্বত্বভোগীর
কোনো
ভূমিকা
থাকবে
না।
দ্বিতীয়ত,
স্থানীয়
প্রশাসনের
সঙ্গে
এনজিও,
স্থানীয়
গণ্যমান্য
ব্যক্তিদের
অন্তর্ভুক্ত
করতে
হবে।
তৃতীয়ত,
দুর্নীতি
ধরা
পড়লে
সঙ্গে
সঙ্গে
শাস্তির
ব্যবস্থা
করতে
হবে।
সর্বোচ্চ
পর্যায়
থেকে
তো
নির্দেশ
দেয়াই
আছে।
করোনার
ত্রাণ
চোররা
হচ্ছে
চরম
অমানবিক
লোক।
তাদের
কোনো
বিবেকবোধ
আছে
বলে
মনে
হয়
না।
এ
রকম
ব্যক্তিদের
ক্ষমা
করাটাও
হবে
অন্যায়।
এখন পর্যন্ত যেসব প্রণোদনা প্যাকেজ সরকার
ঘোষণা করেছে,
সেখানে কি
অনানুষ্ঠানিক খাতের
জন্য যথেষ্ট পরিকল্পনা তারা
নিয়েছে বলে
দৃশ্যমান হচ্ছে?
কভিড-১৯
বা
করোনাভাইরাসের
অভিঘাত
আমাদের
অর্থনীতিতে
যেভাবে
পড়েছে,
সেটা
মোকাবেলা
করার
জন্য
প্রধানমন্ত্রী
বেশ
কয়েকটি
প্রণোদনা
প্যাকেজ
ঘোষণা
করেছেন।
দরিদ্রদের
জন্য
অনেক
কথাই
বলা
হয়েছে।
যেমন
তাদের
বিনা
মূল্যে
খাদ্য
দেয়া
হবে,
খোলাবাজারে
১০
টাকা
করে
চাল
বিক্রি
করা
হবে,
ভিজিএফ
ও
ভিজিডি
কর্মকাণ্ডের
মাধ্যমে
তাদের
সহায়তা
করা
হবে
ইত্যাদি।
অর্থ
বরাদ্দের
পরিমাণটা
তো
আগেই
বললাম।
যে
পরিমাণ
দরিদ্র
এবং
যে
পরিমাণ
লোক
দারিদ্র্যসীমার
নিচে
পড়ে
গেছে,
সে
তুলনায়
তাদের
জন্য
প্যাকেজ
অনেক
কম।
আরো
অর্থ
লাগবে।
বতর্মান পরিস্থিতি সামলে আগামীতে কাজে ফেরারও একটা চ্যালেঞ্জ আছে? এ
জায়গায় করণীয়
কী?
দেখুন,
বর্তমানে
যে
অর্থনৈতিক
সংকট
সৃষ্টি
হয়েছে,
এটা
থেকে
আমরা
কবে
নাগাদ
ঘুরে
দাঁড়াতে
পারব
তা
এখনো
অনিশ্চিত।
অনেকে
বলছেন
দুই
বছর
লাগবে,
কোনো
কোনো
দেশ
বলছে
তারা
পাঁচ
বছরের
কর্মপরিকল্পনা
হাতে
নিয়েছে।
কিন্তু
আমরা
যেসব
অর্থনৈতিক
কর্মকাণ্ড
করছিলাম,
আগামী
এক
বছরের
মধ্যেই
সেসব
ধারাবাহিকভাবে
করে
যেতে
পারব
তা
কিন্তু
নয়।
ধীরে
ধীরে
হয়তো
অর্থনৈতিক
কর্মকাণ্ডগুলো
চালু
হবে।
তবে
এখনই
আমরা
সেটার
কোনো
পূর্বাভাস
দেখতে
পারছি
না।
সুতরাং
যারা
বেকার
হয়ে
গেছেন,
তাদেরকে
পুনরায়
কর্মসংস্থানে
ফিরিয়ে
আনতে
অনেকখানি
সময়
লাগবে।
তাদের
কীভাবে
অন্য
ধরনের
প্রণোদনা
প্রদানের
মাধ্যমে
স্বনির্ভর
করা
যায়,
তা
ভাবতে
হবে।
যেমন
যদি
কেউ
নিজে
কিছু
করতে
চান,
ক্ষুদ্র
কোনো
উদ্যোগ
গ্রহণ
করেন,
তাদের
কোনো
সাহায্য
করা
যায়
কিনা
তা
দেখতে
হবে।
ক্ষুদ্র
ও
মাঝারি
উদ্যোক্তাদের
জন্য
কিন্তু
২০
হাজার
কোটি
টাকা
প্রণোদনা
দেয়া
হয়েছে,
সেখান
থেকে
তাদের
সাহায্য
করা
যেতে
পারে।
এক্ষেত্রে
ব্যাংকগুলোর
অনীহা
থাকতে
পারে।
কারণ
ক্ষুদ্র
ও
মাঝারি
উদ্যোক্তাদের
জন্য
ঋণ
দিতে
গিয়ে
ব্যাংকগুলোর
পরিচালনা
ব্যয়
বেড়ে
যায়।
এজন্য
ক্ষুদ্র
ও
মাঝারি
উদ্যোক্তাদের
সহযোগিতার
জন্য
তারা
খুব
একটা
উৎসাহী
হয়
না।
এখন
নতুন
করে
যদি
ক্ষুদ্র
বা মাঝারি
ব্যবসার
জন্য
কেউ
ঋণ
চাইতে
যান,
যার
আগের
কোনো
ব্যবসায়িক
রেকর্ড
নেই
কিংবা
ব্যবসাসংক্রান্ত
কোনো
অভিজ্ঞতা
নেই,
সেক্ষেত্রে
একটা
বাধার
সৃষ্টি
হতে
পারে।
সেই
বাধাটা
যাতে
না
হয়,
তার
জন্য
নীতিনির্ধারকদের
তদারক
করতে
হবে।
যারা
বিদেশ
থেকে
ফেরত
এসেছেন,
তারা
আদৌ
চাকরি
ফেরত
পাবেন
কিনা,
আমরা জানি
না।
আমরা
জানি
না,
আগামী
তিন
মাস
নাকি
ছয়
মাস
তারা
কর্মহীন
থাকবেন।
তবে
অসহায়
হয়ে
পড়া
মানুষগুলোকে
বাঁচিয়ে
রাখার
কোনো
বিকল্প
নেই।
তাদের
জন্যও
অর্থ
সহযোগিতার
প্রয়োজন,
যাতে
তারা
কাজে
নিয়োজিত
হতে
পারেন।
অর্থ কোত্থেকে আসবে?
এটি
একটি
অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ
প্রশ্ন।
কারণ
সরকারের
হাতে
বেশি
টাকা
নেই।
আমাদের
রাজস্ব
আয়ের
অবস্থাটা
খুব
ভালো
নেই।
নভেল
করোনাভাইরাস
এমন
সময়
এসেছে
যখন
কিনা
অর্থনীতি
নাজুক
অবস্থার
মধ্যে
ছিল।
ব্যক্তি
খাতে
ঋণপ্রবাহের
হার
কমে
যাচ্ছিল,
শুধু
একটা
আশার
আলো
ছিল
রেমিট্যান্স।
নভেল
করোনাভাইরাস
আসার
পরে
রেমিট্যান্সের
ওপর
নেতিবাচক
প্রভাব
পড়েছে।
এরই
মধ্যে
প্রায়
পাঁচ
লাখ
জনগোষ্ঠী
পৃথিবীর
বিভিন্ন
দেশ
থেকে
চলে
এসেছে।
তারা
কবে
কখন
যেতে
পারবে
তার
কোনো
নিশ্চয়তা
নেই।
এছাড়া
প্রতি
বছর
আমাদের
রাজস্ব
ঘাটতি
বাড়ছে।
চলতি
অর্থবছরে
আমাদের
রাজস্ব
আদায়
অত্যন্ত
কম
হয়েছে
এবং
করোনার
পরিপ্রেক্ষিতে
আগামী
অর্থবছরে
আরো
কম
হবে।
কারণ
মানুষের
আয়
কমে
গেছে।
ব্যবসার
আয়
কমে
গেছে।
তাই
কর
আদায়
কম
হবে।
সরকারের
হাতে
স্বাভাবিকভাবেই
অর্থ
কম
থাকবে।
আমাদের
হিসাব
অনুযায়ী,
২০২০
অর্থবছরে
রাজস্ব
আদায়
১
লাখ
কোটি
টাকা
কম
হবে।
তাই
এ
মুহূর্তে
সরকারের
চেষ্টা
থাকবে
কর
ফাঁকি
রোধ
করে
এবং
অবৈধভাবে
দেশের
বাইরে
অর্থ
যাওয়া
বন্ধ
করে
রাজস্ব
আদায়
বাড়ানো।
বাংলাদেশ
ব্যাংক
সম্প্রসারণশীল
মুদ্রানীতির
মাধ্যমে
তারল্য
সৃষ্টির
চেষ্টা
করছে।
প্রয়োজনে
নীতিহার
আরো
কমিয়ে
তারল্য
বাড়ানোর
পদক্ষেপ
নিতে
হবে।
তাছাড়া
অপ্রয়োজনীয়
ব্যয়
কমানোর
উদ্যোগ
নিতে
হবে।
ভারতে
সরকারি
বিভাগগুলোকে
৬০
শতাংশ
ব্যয়
কমানোর
নির্দেশ
দেয়া
হয়েছে।
মন্ত্রী,
পার্লামেন্ট
সদস্যদের
বেতন
কমানো
হয়েছে।
অন্য
অনেক
দেশেও
তা-ই
করা
হয়েছে।
কৃচ্ছ
সাধন
একটা
বড়
উৎস।
আর
করোনা-পরবতী
সময়ে
সরকারের
বিদেশ
ভ্রমণ
বন্ধ
করে
সাশ্রয়
করতে
হবে।
মোট
কথা,
অনেক
ব্যয়
অপ্রয়োজনীয়।
সেগুলো
সহজেই
বন্ধ
করা
যায়।
যেসব
প্রকল্পের
এখন
আমাদের
দরকার
নেই,
কিছুদিন
পর
শুরু
করলেও
যেসব
প্রকল্প
ক্ষতিগ্রস্ত
হবে
না
কিংবা
যেসব
প্রকল্প
মাত্র
শুরু
হয়েছে,
সেসব
প্রকল্পের
অর্থ
আমরা
বর্তমান
করোনা
পরিস্থিতি
সামলাতে
ব্যয়
করতে
পারি।
তবে
এ
কথা
বলার
অর্থ
এই
নয়
যে
আমরা
সব
প্রকল্প
বন্ধ
করে
দেব।
কারণ
প্রকল্পের
কাজ
বন্ধ
করলে
তার
সঙ্গে
জড়িত
মানুষ
কর্মসংস্থান
হারাবে।
মানুষের
কর্মসংস্থান
ঠিক
রাখতে
হবে
এবং
বাড়াতে
হবে।
তবে
যাচাই-বাছাই
করে
আমরা
দেখতে
পারি
কোন
প্রকল্পগুলো
আগামী
ছয়
মাস
বা
এক
বছর
বন্ধ
রাখলেও
কোনো
ক্ষতি
হবে
না।
এভাবে
আমরা
অর্থসংস্থান
করতে
পারি।
বিদেশ থেকে
কি আমরা
অর্থ পেতে
পারি?
আন্তর্জাতিক
সংস্থাগুলোর
কাছে
অবশ্যই
অর্থ
সহযোগিতা
চাইতে
হবে।
এরই
মধ্যে
ক্ষতিগ্রস্ত
দেশগুলোর
প্রায়
অর্ধেকই
আন্তর্জাতিক
মুদ্রা
তহবিল,
বিশ্বব্যাংক,
এশীয়
উন্নয়ন
ব্যাংক,
ইসলামী
ডেভেলপমেন্ট
ব্যাংক,
এশীয়
ইনফ্রাস্ট্রাকচার
ইনভেস্টমেন্ট
ব্যাংক—এমন
বিভিন্ন
প্রতিষ্ঠানের
কাছে
অর্থ
পাওয়ার
জন্য
আবেদন
করছে।
আমাদের
কিন্তু
খুব
দ্রুত
তাদের
কাছ
থেকে
স্বল্প
সুদে
অর্থ
জোগাড়
করতে
হবে।
আন্তর্জাতিক
বাজারে
তেলের
মূল্য
অনেক
কম
হওয়ায়
কিছুটা
সাশ্রয়
করতে
পারব।
সাশ্রয়ের
টাকাটাও
কিন্তু
এখানে
যোগ
করতে
পারি।
আরেকটা
বিষয়ও
ভাবা
যায়।
জাতীয়
সঞ্চয়পত্রের
ওপর
কড়াকড়ি
কমিয়ে
জনগণ
যদি
তা
কেনে,
তা
থেকেও
সরকার
অর্থ
পাবে।
আগামী দিনের
মূল চ্যালেঞ্জ কী?
সামনের
দিনগুলোয়
আমরা
কীভাবে
অর্থনীতির
চাকা
সচল
রাখতে
পারি,
সেটাই
সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ।
মানুষকে
কাজ
দিতে
হবে,
আয়ের
সুযোগ
করে
দিতে
হবে,
চাহিদা
চাঙ্গা
রাখতে
হবে,
সরবরাহ
সচল
রাখতে
হবে।
এ
এক
কঠিন
দায়িত্ব
সরকারের।
স্বাস্থ্যঝুঁকি এখন অর্থনৈতিক সংকটে পরিণত হয়েছে। দুটিকে পাশাপাশি একসঙ্গে চালাতে হবে। স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে মানুষ না খেয়ে মরবে, সেটাও যেন না হয়। সুচারুভাবে প্রণোদনা কর্মসূচিগুলো পরিচালনা করা উচিত। গরিব মানুষদের টাকাটা যেন তারাই পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। তবে এই বিশাল কাজ সরকারের একার নয়। ব্যক্তি খাত, এনজিও, তৃণমূল পর্যায়ের সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সবার এবং আমাদের দেশের যাদের সামর্থ্য আছে, তারাও কিন্তু এগিয়ে আসতে পারেন এবং অনেকেই এসেছেন।