চীনের সীমানা ছাড়িয়ে নভেল করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারীতে রূপান্তরিত হয়েছে।
ভাইরাসটির প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে জ্বালানি তেলের বাজারে।
আন্তর্জাতিক বাজারে পাঁচদিন টানা নিম্নমুখী রয়েছে জ্বালানিপণ্যটির দাম।
কমতে কমতে সর্বশেষ বৃহস্পতিবার এক বছরের বেশি সময়ের সর্বনিম্নে নেমেছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম।
খবর রয়টার্স।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বৃহস্পতিবার কার্যদিবস শেষে আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্ট ক্রুডের প্রতি ব্যারেলের দাম দাঁড়িয়েছে ৫১ ডলার ৬১ সেন্ট, আগের দিনের তুলনায় যা ১ ডলার ৮১ সেন্ট বা ৩ দশমিক ৪ শতাংশ কম।
এদিন বেচাকেনার এক পর্যায়ে পণ্যটির দাম ব্যারেলপ্রতি ৫০ ডলার ৯৭ সেন্টে নেমে যায়, যা ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের পর পণ্যটির সর্বনিম্ন দাম।
একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম আগের দিনের তুলনায় ২ ডলার শূন্য ৬ সেন্ট বা ৪ দশমিক ২ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৪৬ ডলার ৬৬ সেন্টে নেমেছে, যা ২০১৯ সালের জানুয়ারির পর থেকে সর্বনিম্ন।
নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে আসতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
এ
পরিস্থিতি দেশটিতে জ্বালানি তেলের চাহিদা কমিয়ে দিতে পারে।
চীন বিশ্বের শীর্ষ জ্বালানি তেল ভোক্তা ও আমদানিকারক দেশ।
তাই দেশটির বাজারে পণ্যটির চাহিদার হ্রাস-বৃদ্ধি আন্তর্জাতিক বাজারে বড় ধরনের প্রভাব বিস্তার করে।
এদিকে নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাব আর চীনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই।
দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ইতালি, কুয়েতসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশে ভাইরাসটির প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে।
এর
প্রভাব পড়বে দেশগুলোর অর্থনীতিতে।
সব
মিলিয়ে জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদায় বড় ধরনের মন্দা দেখা দিতে পারে, যা পণ্যটির দাম রেকর্ড কমিয়ে আনতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে।
নিউইয়র্কভিত্তিক ফরেন এক্সচেঞ্জ কোম্পানি ওএএনডিএ করপোরেশনের জ্যেষ্ঠ বাজার বিশ্লেষক এডওয়ার্ড মওয়া জানান, নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপে বৈশ্বিক বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
এছাড়া বৈশ্বিক অর্থনীতিতে শ্লথতার পূর্বাভাসে জ্বালানি তেলের চাহিদায় দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে।
ফলে পণ্যটির দাম আরো কমে যাওয়ার সম্ভাবনা জোরদার হচ্ছে।
এদিকে বাজারে ভারসাম্য ফেরাতে আসন্ন সম্মেলনে অর্গানাইজেশন অব দ্য পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিস (ওপেক) অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উত্তোলন আরো কমিয়ে আনতে পারে।
আগামী ৫ ও ৬ মার্চ জোটটির পরবর্তী বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
২০১৭ সাল থেকে উত্তোলন হ্রাসের মাধ্যমে জ্বালানিপণ্যটির সরবরাহ কমিয়ে দাম বৃদ্ধির চেষ্টা করছে জোটটি।
বর্তমানে ওপেক ও এর মিত্র দেশগুলো সক্ষমতার তুলনায় দৈনিক গড়ে ১৭ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল কম উত্তোলন করছে।