৯৬% পরিবারে মোবাইল ফোন: বিবিএস

প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক

মোবাইল ডিভাইস বিশেষ করে স্মার্টফোন ও কম্পিউটার মানুষের জীবনের অপরিহার্য প্রযুক্তি অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। শুধু যোগাযোগের জন্যই নয়, ইন্টারনেটের কল্যাণে শহরের পাশাপাশি প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এসব ডিভাইস শিক্ষা ও বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। এখন বাংলাদেশের ৯৫ দশমিক ৯ শতাংশ পরিবারে অন্তত একটি ল্যান্ডফোন বা মোবাইল ফোন আছে। ২০১২-১৩ সালে দেশের ৮৭ দশমিক ২ শতাংশ পরিবারে অন্তত একটি ল্যান্ডফোন বা মোবাইল ছিল। গত সোমবার রাজধানীর আগারগাঁও পরিসংখ্যান ভবনে প্রকাশিতবাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে ২০১৯ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।

বিবিএসের সমীক্ষায় শুধু মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার ব্যবহারের চিত্রই উঠে আসেনি; উঠে এসেছে ইন্টারনেট, মোবাইল ও কম্পিউটার ডিভাইসে ইন্টারনেট ব্যবহার, নারীর মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারের চিত্র। সমীক্ষায় শিক্ষা, শিশুমৃত্যু, মাতৃমৃত্যুর হারসহ সামাজিক খাতের সর্বশেষ তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা হয়।

বিবিএসের সমীক্ষা অনুযায়ী, বাংলাদেশের মাত্র ৫ দশমিক ৬ শতাংশ পরিবারে অন্তত একটি কম্পিউটার আছে। ২০১২-১৩ সালের চেয়ে কম্পিউটার ব্যবহার ৩ দশমিক ৪ থেকে বেড়ে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে পৌঁছেছে। গত ছয় বছরে দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেলেও কম্পিউটার ব্যবহারে তেমন প্রবৃদ্ধি হয়নি। দেশের ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ পরিবারে যেকোনো ডিভাইস দিয়ে ইন্টারনেটে প্রবেশের সুবিধা রয়েছে। অর্থাৎ দেশের ৬২ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবার এখনো ইন্টারনেট সেবার বাইরে রয়েছে। এখন শুধু কম্পিউটার বা ল্যাপটপে ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয় না। হাতে হাতে পৌঁছেছে স্মার্টফোন। স্মার্টফোনের বদৌলতে হাতের মুঠোয় এখন ইন্টারনেট। ইন্টারনেট থাকলে ফেসবুক, ইউটিউব, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপের মতো সামাজিক মাধ্যমগুলো মুঠোফোনে সহজে ব্যবহার করা যায়। যে কারণে মোবাইল ডিভাইসের এ যুগে পারিবারিকভাবে কম্পিউটার রাখার প্রবণতা খুব বেশি বাড়েনি।

বিবিএসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে নারীদের মধ্যে স্মার্টফোনের ব্যবহার বাড়লেও কম্পিউটার ব্যবহারে নারীরা অনেক পিছিয়ে রয়েছেন। গত তিন মাসে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে মাত্র ১ দশমিক ৯ শতাংশ কম্পিউটার ব্যবহার করেছেন। তবে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ৭১ শতাংশ নারীর নিজের মোবাইল ফোন আছে। গত তিন মাসে কমপক্ষে একবার মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন দেশের প্রায় ৯৮ শতাংশ নারী।

বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারে পুরুষের তুলনায় নারীরা অনেক পিছিয়ে রয়েছেন। গত তিন মাসে ইন্টারনেট ব্যবহার করেছেন দেশের ১২ দশমিক ৯ শতাংশ নারী। এছাড়া গত তিন মাসে সপ্তাহে অন্তত একবার ইন্টারনেট ব্যবহার করেছেন ১১ দশমিক ৫ শতাংশ নারী।

তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষতার ক্ষেত্রেও নারীরা অনেক পিছিয়ে রয়েছেন। গত তিন মাস সময়ে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী নারীদের মাত্র ২ দশমিক ৩ শতাংশ অন্তত একবার কম্পিউটারসংশ্লিষ্ট কোনো কাজ সম্পন্ন করেছেন। একই সময়ে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী নারীদের মাত্র ১ দশমিক ৪ শতাংশ সপ্তাহে অন্তত একবার কম্পিউটারসংশ্লিষ্ট কোনো কাজে অংশ নিয়েছেন।

তথ্যপ্রযুক্তি খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। এ পেশায় নারী-পুরুষের সমান সম্ভাবনা রয়েছে। পুরুষের পাশাপাশি দেশের নারীরাও স্বাধীন এ পেশায় যুক্ত হয়ে স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পারেন। কারণ এ পেশায় সময় বেঁধে কাজ করতে হয় না। ফ্রিল্যান্সিংয়ে যুক্ত হতে বড় ধরনের কোনো বিনিয়োগের প্রয়োজন হয় না। শুধু একটি কম্পিউটার, প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার, নিরবচ্ছিন্ন ও দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ এবং বৈদেশিক অর্থ লেনদেনের জন্য অ্যাকাউন্ট থাকলে চলে। তবে দেশের ৬২ দশমিক ৪ শতাংশ পরিবার ইন্টারনেট সুবিধার বাইরে থাকায় ইচ্ছা থাকলেও অনেকে ফ্রিল্যান্সিংয়ে যুক্ত হতে পারছেন না। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষতার অভাবে নারীরা আধুনিক প্রযুক্তির অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকছেন।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫