ইরানের পার্লামেন্ট নির্বাচন

বড় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের পথে রক্ষণশীলরা

প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০

বণিক বার্তা ডেস্ক

প্রাথমিক ফলাফল অনুসারে দেশের পার্লামেন্টারি নির্বাচনে বড় ধরনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পথে রয়েছে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডসংশ্লিষ্ট রক্ষণশীলরা জীবনমানের পতন নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে জনগণের ক্ষোভ পশ্চিমাবিরোধী মনোভাব শক্তিশালী হওয়ার বহিঃপ্রকাশ ঘটছে এবারের জাতীয় নির্বাচনে খবর গার্ডিয়ান রয়টার্স

পার্লামেন্টারি নির্বাচনে রক্ষণশীলদের সম্ভাব্য জয়ের মানে হবে প্রেসিডেন্সি বাদে দেশের মূল ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণে থাকছে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির শক্তিশালী সমর্থকরাই পশ্চিমের সঙ্গে সদ্ভাব রাখার টিকিটে চার বছর আগে জয় পাওয়া ইরানের সংস্কারবাদীরা পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও তাদের বহু প্রস্তাবেই প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা রক্ষণশীলরা, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ইরানের গার্ডিয়ান কাউন্সিল

শুক্রবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দেশটির ৫৫ হাজার ভোটকেন্দ্র বন্ধ করার সময়সীমা বারবার বাড়ানো হয় ভোটারদের অংশগ্রহণের প্রবাহ মোকাবেলায় মধ্যরাত পর্যন্ত ভোটকেন্দ্র খোলা রাখার দাবি করেছে সরকারপন্থী সূত্রগুলো অন্যদিকে সরকারবিরোধীরা জানায়, ইরানের রাজনীতি নিয়ে মোহমুক্তি ঘটায় বেশকিছু বড় শহরে ভোট বর্জন করে ভোটাররা কিন্তু শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ভোটকেন্দ্র খোলা রেখে পরিস্থিতির উন্নতি আশা করছিল সরকারি কর্মকর্তারা

ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পার্লামেন্টের ২৯০ আসনের মধ্যে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীসহ রক্ষণশীলরা ৫৫ আসন পেয়েছে

নির্বাচনে রক্ষণশীলদের এগিয়ে থাকা মূলত দেশটির পশ্চিমাপন্থী রাজনীতিবিদদের বড় পতন হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে মূলত ওয়াশিংটনের ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত ইরান পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে আসা নিষেধাজ্ঞা পশ্চিমের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ককে দুর্বল করেছে

সংস্কারপন্থীদের প্রতি ক্ষোভ থাকলেও এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ আশানুরূপ দেখা যায়নি অনানুষ্ঠানিক হিসাব অনুসারে, তেহরানে নির্বাচনে কেবল ২২ শতাংশ অংশগ্রহণ দেখা গেছে এছাড়া জাতীয় পর্যায়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ ৪০ শতাংশের কাছে পৌঁছে, যা ২০১৬ সালের ৬২ শতাংশের চেয়ে কম

ভোটে অংশগ্রহণের হার কমাকে ইরানের রাজনীতির জন্য বড় প্রশ্ন বলে মনে করছেন অনেকে তেহরান ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক সাদেঘ জিবাকালাম বলেন, যখন বড় বড় শহরে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ জনগণকে ভোট দান থেকে বিরত থাকতে দেখা যায় এবং এর মধ্যে সর্বাধিক প্রত্যাশিত প্রার্থীকে ৫০ শতাংশ ভোটে জয় পেতে দেখা যায়, সে মুহূর্তটি অভিনন্দন জানানো সম্মানের কিনা তা ভেবে দেখার রয়েছে

তবে পার্লামেন্টের স্বতন্ত্র দলের সদস্য সাঈদ হাসান আলাভি বলেন, জীবনমানের পতন জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে নির্বাচনে অংশগ্রহণ খুব একটা মন্দ নয় যখন অর্থ থাকে না, তখন কোনো আগ্রহও থাকে না আর সময় জনগণ নিজেকে বিচ্ছিন্নবোধ করে সরকারকে এবারের নির্বাচন থেকে বার্তাই গ্রহণ করা উচিত

এদিকে ইরানে নভেল করোনাভাইরাস বিস্তারের প্রভাব দেখা গেছে ভোটকেন্দ্রগুলোয় রাজধানী তেহরানে বহু নাগরিককে মুখে মাস্ক পরে ভোট দিতে দেখা যায়

প্রাথমিক ফলাফলে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদের শাসনামলের ১৪ জন সাবেক মন্ত্রিসভা সদস্যকে নির্বাচিত হতে দেখা গেছে এছাড়া আহমাদিনেজাদের সাবেক কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নরও জয় পেয়েছেন

উল্লেখ্য, আগামী বছর ইরানে প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫