ফিচ রেটিংসের প্রতিবেদন

করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে এশিয়ার সেবা খাত

প্রকাশ: জানুয়ারি ২৭, ২০২০

বণিক বার্তা ডেস্ক

চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া উহান ভাইরাস নামে পরিচিত করোনাভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব তীব্রভাবে বাড়তে থাকলে এশিয়ার সেবা খাতের কার্যক্রম, বিশেষ করে পর্যটনসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়বে। এশিয়ার সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও হংকংয়ের মতো অর্থনীতিগুলো এ ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ধারণকারী সংস্থা ফিচ রেটিংস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে। খবর স্ট্রেইট টাইমস।

তবে বড় আকারের আর্থিক বাফার ও অন্যান্য সামষ্টিক অর্থনৈতিক ঝুঁকি প্রশমনের মাধ্যমে এশীয় দেশগুলোর এ নেতিবাচক ঝুঁকি প্রশমিত হবে বলে প্রতিবেদনের এক নোটে ফিচ জানিয়েছে।

২০১৯-এনকোভি নামে পরিচিত উহান করোনাভাইরাসটি মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হতে পারে। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৫৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া সারা বিশ্বে ভাইরাসটিতে আক্রান্তের সংখ্যা এরই মধ্যে সহস্র ছাড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ বিশ্বের ১৩টি দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার কথা জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুর প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণের কথা নিশ্চিত করেছে। উহান থেকে আগত ৬৬ বছর বয়সী এক চীনা নাগরিক ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। 

ফিচ জানায়, যেসব মহামারী ভোক্তাদের আচরণের ওপর প্রভাব বিস্তার করে, সাধারণত সেসব মহামারী বৈশ্বিক আকাশসেবা, ক্রীড়া, লজিং ও অবকাশ খাতগুলোর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। ঋণমানকারী সংস্থাটি জানায়, বড় মাত্রার ও অনিশ্চিত ঘটনাগুলো বৈশ্বিক ভ্রমণ চাহিদায় তাত্ক্ষণিক ও ভয়াবহ ব্যাঘাত তৈরি করতে পারে। তবে এ ধরনের কোনো কিছু আয়ের ওপর প্রভাব ফেললেও সাধারণত ক্ষণস্থায়ী হয়ে থাকে। ফিচ জানায়, দেখা গেছে শেষ পর্যন্ত আর্থিক পদক্ষেপ এ ধরনের পরিস্থিতির তীব্রতা ও স্থায়িত্ব নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

এখন পর্যন্ত উহান ভাইরাসের সংক্রমণের জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা জারির প্রয়োজনীয়তা নেই বলে বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে। তবে ভাইরাসটির কারণে হুবেই প্রদেশের অন্তত ১০টি শহরে জরুরি অবস্থা জারি করেছে চীন। এলাকাগুলোর গণপরিবহন বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া বৃহস্পতিবার থেকে প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রস্থল উহান অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।

করোনাভাইরাসটির সংক্রমণ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়লে ও দীর্ঘস্থায়ী হলে ভোক্তা মনোভাব ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং ঋণমানে উল্লেখযোগ্যভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে ফিচ জানিয়েছে।

শনিবার প্রকাশিত ডিবিএস গ্রুপের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৩ সালে সিভিয়ার একিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম (সার্স) মহামারীর ফলে চীনা মূল ভূখণ্ড, হংকং, সিঙ্গাপুর ও তাইওয়ানের ভ্রমণ, পর্যটন ও বাণিজ্যে তীব্র পতন ঘটে। সে সময় মহামারীতে ৭৭০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়।

সার্সের কারণে ২০০৩ সালে সিঙ্গাপুর দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি ও হংকং প্রায় ২ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি হারায়। তবে প্রতিবেদনে ডিবিএস জানিয়েছে, যেসব অর্থনীতির উন্নত স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামো ও উন্নত মানের দুর্যোগ মোকাবেলা নীতিব্যবস্থা রয়েছে, সেগুলো ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের ধাক্কা সামাল দিতে, ক্ষতি নিয়ন্ত্রণে ও দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে।

এদিকে ভাইরাস সংক্রমণের কারণে এশিয়ার চলতি মাসের পর্যটন ও বিক্রি পরিসংখ্যানে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে ডিবিএস জানিয়েছে। এছাড়া এখনই বড় ধরনের অর্থনৈতিক ও আর্থিক ক্ষতির কথা বলা যাচ্ছে না বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।



সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫