মানবদেহে রোগবালাই লেগেই থাকে। আর
রোগমুক্তির জন্য চিকিৎসকদের দ্বারে আমাদের যেতেই হয়। তাদের কাছে যাওয়া মানেই হাতে
একগুচ্ছ টেস্ট ধরিয়ে দেয়া। তারপর শুরু চিকিৎসকের চেম্বার থেকে বিভিন্ন পরীক্ষাগারে
ছোটাছুটি। যেকোনো রোগ নির্ণয়ে চেকআপ কিংবা পরীক্ষার আগে সাধারণ কিছু নিয়ম রয়েছে।
অনেকেরই এসব অজানা। আবার জানা থাকলেও খুব একটা গুরুত্ব দেন না। কিন্তু এ নিয়মগুলো
সবার মেনে চলা উচিত। চেকআপের আগে কী করা উচিত আর কী উচিত নয়, তা
নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন।
রক্তচাপ পরীক্ষার আগে কখনই কফি পান
করা যাবে না। কফি কিংবা অন্য যেকোনো ধরনের ক্যাফেইন যেমন এনার্জি ড্রিং, কোলাস
খাওয়া উচিত না। চেকআপের ১ ঘণ্টা আগে এসব পানীয় খাওয়া হলে উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধি পেতে
পারে। স্ট্রেসজনিত যেকোনো চেকআপের আগেও এগুলো খাওয়া উচিত না।
চেকআপের সময় ডিহাইড্রেশন কমাতে প্রচুর
পানি পান করতে হবে। এর ফলে পালস এবং ব্লাড প্রেসার ভালো থাকে। ইউরিন কিংবা রক্ত
পরীক্ষায় ডিহাইড্রেশনের কারণে ফলাফলে বিভ্রান্তি ঘটতে পারে।
চেকআপের আগে কী খাবেন, কী
খাওয়া উচিত; এসব নিয়ে অনেকে দুশ্চিন্তা করেন। চেকআপের আগে খাবারে পরিবর্তনের
প্রয়োজন নেই। সাধারণত যে রকম খাবার খান,
তা-ই খেতে পারেন। বরং আরো বেশি স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে পারেন।
চেকআপের আগে ঠাণ্ডাজনিত ওষুধ না
খাওয়াই ভালো। যদি আপনি অসুস্থ থাকেন,
তাহলে চিকিৎসককে আপনার অসুস্থতা সম্পর্কে খুলে
বলতে হবে। আর যদি কোনো ধরনের ওষুধ খেয়েও থাকেন, তাহলে তা অবশ্যই চিকিৎসককে জানাতে
হবে। তাহলে শরীরে ওষুধের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটবে কিনা, এ
বিষয়ে তিনি পরামর্শ দিতে পারবেন।
স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে যাওয়ার
আগে মেনি-পেডিকিউর করা
উচিত না। বিশেষজ্ঞদের কাছে যাওয়ার আগে অবশ্যই পুরো শরীর, হাতের
নখ পরিষ্কার করে
যেতে হবে। নেইল পলিশ লাগানো থাকলে তা
তুলে ফেলতে হবে। কারণ নখ রক্তস্বল্পতা,
ডায়াবেটিস,
এমনকি হূদরোগের মত বড় স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোকে
নির্দেশ
করে থাকে। চোখে শ্যাডোও দেয়া যাবে না।
চোখ দেখে ডাক্তাররা অনেক রোগের লক্ষণ শনাক্ত করেন। এ সময় মুখে মেকআপ না করাই ভালো।
ম্যামোগ্রামের আগে ডিওডোরেন্ট এমনকি
পাউডারও ব্যবহার ঠিক না। কারণ এগুলোতে এক ধরনের অ্যালুমিনিয়াম থাকে, যার
কারণে ম্যামোগ্রামের ফলাফল ভুল হতে পারে।
কোলোনস্কপি করার আগে রেড ফুড না
খাওয়াই ভালো। রেড বা পার্পলজাতীয় খাবার কোলনকে রঙিন করতে পারে। যেগুলো ফলাফলে
প্রভাব ফেলে। এমনকি লৌহজাতীয় খাবারও খাওয়া উচিত না। চিকিৎসকরা কোলোনস্কপির অন্তত
এক সপ্তাহ আগে থেকে এ ধরনের খাবার খাওয়া বন্ধ করে দেয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগে অনেকেই
নার্ভাস হয়ে পড়েন। কোনো জটিল রোগ হল কিনা,
ডাক্তার কী পরীক্ষা দিতে পারে, এসব
ভেবে দুশ্চিন্তা করেন। ফলে ডাক্তারকে প্রয়োজনীয় কথাটাই বলতে ভুলে যান। এটা অধিকাংশ
মানুষের ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। এ রকম হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে চিকিৎসককে কী বলবেন, সে
বিষয়ে আগেই কাগজে লিখে নিতে পারেন।
সূত্র: দ্য হেলদি