সরকারি আমানত নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন

বেসরকারি ব্যাংকে সুদহার ৬%, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে ৫.৫%

প্রকাশ: জানুয়ারি ২১, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারি আমানত বেসরকারি ব্যাংকে জমা রাখলে সর্বোচ্চ সুদহার হবে শতাংশ। আর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে রাখলে আমানতের সর্বোচ্চ সুদহার দশমিক শতাংশের বেশি হবে না। ব্যাংকঋণের সুদহার এক অংকে নামিয়ে আনতে সরকারি আমানতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আগেই জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল। গতকাল সে সিদ্ধান্ত প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে গতকাল জারি করা আদেশে বলা হয়েছে, সরকারের নিজস্ব অর্থের ৫০ শতাংশ এখন থেকে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে আমানত হিসেবে রাখা হবে, তাতে সুদহার হবে শতাংশ। বাকি ৫০ শতাংশ অর্থ সর্বোচ্চ দশমিক শতাংশ সুদহারে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকে মেয়াদি আমানত রাখা যাবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) এবং পরিচালন বাজেটের আওতায় প্রাপ্ত অর্থ, স্বায়ত্তশাসিত আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা এবং সরকার মালিকানাধীন কোম্পানির নিজস্ব তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাংলাদেশে ব্যাংকিং ব্যবসায় নিয়োজিত বেসরকারি ব্যাংক অথবা অব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান অথবা উভয় ধরনের প্রতিষ্ঠানে আমানত রাখার জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সুদের হার এক অংকে নামিয়ে আনা প্রয়োজন। সে পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে উল্লিখিত উৎসসমূহের উদ্বৃত্ত অর্থ সর্বোচ্চ দশমিক শতাংশ সুদহারে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকে এবং মোট উদ্বৃত্ত অর্থের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সর্বোচ্চ শতাংশ সুদহারে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে মেয়াদি আমানত রাখা যাবে।

তবে প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্য তহবিলের অর্থ, পেনশন তহবিলের অর্থ এন্ডাউমেন্ট ফান্ডের অর্থ এর আওতাবহির্ভূত থাকবে।

গত বছরের সেপ্টেম্বর মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছিলেন, রাষ্ট্রের ৬৮টি স্বশাসিত সংস্থার হাতে লাখ ১২ হাজার ১০০ কোটি টাকা আছে, যা অলস পড়ে আছে। বিভিন্ন ব্যাংকে মেয়াদি আমানত হিসেবে রাখা ওই টাকা রাষ্ট্রের উন্নয়নমূলক কাজে লাগাতে সেদিন একটি আইনের খসড়ায় অনুমোদন দেয় সরকার। সম্প্রতি আইনের খসড়াটি বিল হিসেবে জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। আর প্রস্তাবিত বিলটিতে সায় দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিও। গতকাল কমিটির বৈঠকে বড় কোনো ধরনের পরিবর্তন ছাড়াই বিলটি পাসের জন্য সংশোধিত আকারে সংসদে রিপোর্ট প্রদানের জন্য সুপারিশ করা হয়।

৬১টি স্বায়ত্তশাসিত, সরকারি কর্তৃপক্ষ স্বশাসিত সংস্থার ব্যাংকে থাকা উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমার বিধান করে সংসদে একটি বিল উপস্থাপন করা হয়। সংসদে বিলটি উপস্থাপনের সময় অর্থমন্ত্রী সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় মেটাতেই উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সংস্থাগুলোর বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা পড়ে আছে, যা জনগণের ব্যবহার করা সমীচীন। সংস্থাগুলোর তহবিলে রক্ষিত উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদানের মাধ্যমে বর্তমান সরকার কর্তৃক গৃহীত উন্নত দেশ গড়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই বিলটি আনার কথা জানান অর্থমন্ত্রী।

বিলের বিধান অনুযায়ী সংস্থার বার্ষিক পরিচালন ব্যয়, নিজস্ব অর্থায়নে অনুমোদিত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বার্ষিক ব্যয় নির্বাহের অর্থ, আপৎকালীন ব্যয়ের জন্য বার্ষিক পরিচালন ব্যয়ের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থের অতিরিক্ত উদ্বৃত্ত অর্থ প্রতি অর্থবছর শেষ হওয়ার তিন মাসের মধ্যে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫