খুলনা
টাইগার্সকে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রাজশাহী রয়্যালস। ব্যাটে-বলে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়ে ২১ রানে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটি জিতে নিয়েছে
রাজশাহী। সে সঙ্গে বিপিএলের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শিরোপা হাতে তোলার সুযোগ পেল
দলটি।
রাজশাহী
রয়্যালসের ব্যাটিংয়ের শেষ আর শুরুর পার্থক্যটাই আসলে প্রকৃত টি২০ ক্রিকেট। বোলাররা
রাজত্ব করলেন ১৫ ওভার। কিন্তু শেষ ৫ ওভারে বদলে গেল ম্যাচের দৃশ্যপট। গতকাল মিরপুর
শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৪.২ ওভার শেষে রাজশাহীর
সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেট হারিয়ে ৯৯ রান। আন্দ্রে রাসেল ও মোহাম্মদ নওয়াজের আগ্রাসী
ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে সেই সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়াল ৪ উইকেটে ১৭০ রান। জবাবে
খুলনা থেমে যায় ১৪৯ রানে।
শিরোপা জয়ের
জন্য ১৭১ রানের টার্গেটের সামনে মাত্র ১১ রান তুলতেই বিদায়ঘণ্টা বাজল খুলনার দুই
ওপেনারের। সাজঘরমুখো হলেন নাজমুল হাসান শান্ত (০) ও মেহেদী
হাসান মিরাজ (২)। এখান থেকে দলকে কক্ষপথে রাখলেন শামসুর রহমান
ও এবারের আসরের রানমেশিন রাইলি রুশো। ৫৪ বলের জুটিতে ৭৪ রান যোগ করলেন দুজনে।
বিপজ্জনক রুশোকে আউট করে দলকে স্বস্তি এনে দিলেন ব্যাট হাতে দুর্দান্ত নৈপুণ্য
দেখানো পাকিস্তান অলরাউন্ডার নওয়াজ। ২৬ বলের ইনিংসে ৩৭ রান করে আউট হন রুশো।
উইকেটে আসেন এবারের আসরে খুলনার অনেক ম্যাচের ত্রাতা মুশফিক। এ জুটি জমে ওঠার আগেই
বিদায় নেন শামসুর। ৪৩ বলের ইনিংসে ৫২ রান করেন তিনি। পরে বেশিদূর যেতে পারেননি
মুশফিকও। ২১ রান করেন তিনি। এরপর অবশ্য আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি খুলনা। নির্ধারিত
ওভার শেষে ১৪৯ রানেই থেমে যায় তারা।
ফাইনালে খুলনার
বোলাররা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বড় কিছুর। রানের জন্য সংগ্রাম করতে হয় রাজশাহী
ব্যাটসম্যানদের। শত রানের নাগাল পেতে ১৪.৪ ওভার পর্যন্ত খেলতে হয় তাদের। টি২০
মেজাজের সঙ্গে সংগতি রেখে ব্যাট করতে পারেননি দলটির টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা।
উইকেটে থিতু হওয়ার আগেই বিদায় নেন ওপেনার আফিফ হোসেন (৮ বলে ১০)। স্ট্রোক প্লের জন্য খ্যাত লিটন দাসও (২৮ বলে ২৫) ফেরেন দ্রুত। শোয়েব মালিকের ব্যাটেও সেই ঝাঁজ
দেখা যায়নি। ১৩ বল খেলে আউট হয়ে যান ৯ রানে। প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই চালিয়ে যান
ইরফান শুক্কুর। কিন্তু রাসেলকে সঙ্গ দিতে পারেননি তিনিও। ৩৫ বলের ইনিংসে আউট হয়ে
যান ৫২ রান করে। রাসেল একা দলকে কত দূর টানতে পারবেন, বড় হয়ে ওঠে এ প্রশ্নটিই। তবে বিধ্বংসী রাসেল মোহাম্মদ নওয়াজকে
নিয়ে অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেট জুটিতে মাত্র ৩৪ বলে সংগ্রহ করলেন ৭১ রান। ২০ বলের
ইনিংসে ৪১ রানে অপরাজিত থাকলেন নওয়াজ। আর রাসেলের হার না মানা ২৭ রানের ইনিংসটি
মাত্র ১৬ বলে গড়া।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রাজশাহী রয়্যালস: ২০ ওভারে ১৭০/৪ (ইরফান ৫২, নওয়াজ ৪১*, রাসেল ২৭*;
আমির ২/৩৫, শহিদুল ১/২৩,
ফ্রাইলিংক ১/৩৩)। খুলনা
টাইগার্স: ২০ ওভারে ১৪৯/৮ (শামসুর ৫২, রুশো ৩৭,
মুশফিক ২১; ইরফান ২/১৮,
কামরুল ২/২৯, রাসেল ২/৩২) ফল:
রাজশাহী ২১ রানে জয়ী, ফাইনাল সেরা:
আন্দ্রে রাসেল, টুর্নামেন্ট সেরা:
আন্দ্রে রাসেল।