রাজধানীর ওয়ারিতে ছয় বছরের শিশু সামিয়া আফরিন সায়মাকে ধর্ষণের পর হত্যার মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন নিহতের বাবা আব্দুস সালাম ও বাড়ির দারোয়ান মো. ফরিদ মোল্লা।
আজ বুধবার ঢাকার ১ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক কাজী আব্দুল হান্নান এ সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের পর আগামী ১৪ জানুয়ারি পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করেছেন।
সাক্ষ্য গ্রহণের সময় মামলার একমাত্র আসামি অভিযুক্ত ধর্ষক মো. হারুন অর রশিদকে (২৬) কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
মামলাটিতে গত ৫ নভেম্বর ডিবির পুলিশ পরিদর্শক ওয়ারী জোনাল টিম (নিরস্ত্র) মোহাম্মদ আরজুন আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর গত ২ জানুয়ারি ট্রাইব্যুনালে আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে ৮ জানুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করেন।
অভিযুক্ত আসামি হারুন অর রশিদ কুমিল্লা জেলার মেঘনা থানার নলচর গ্রামের মো. নাছির উদ্দিনের ছেলে।
চার্জশিটে বলা হয়, আসামি হারুন অর রশিদ তার আপন খালাত ভাই পারভেজের বাসায় বিগত প্রায় ২ মাস ধরে বসবাস করতো। ভিকটিমের বাসা আর আসামির বসবাস করার ঠিকানা একই জায়গায়। আসামি হারুন তার খালাতো ভাইয়ের রঙয়ের দোকানে কর্মচারী হিসাবে কাজ করতেন।
গত বছর ৫ জুলাই শুক্রবার সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টার দিকে পারভেজের ছোট ছেলে আরাফের ওষুধ আনার জন্য হারুন বাসা থেকে বের হয়ে ওই ফ্লাটের দরজার সামনে আসলে একই বিল্ডিংয়ের ৬ষ্ঠ তলার ৬/বি নং ফ্লাটের মালিক আবদুস সালামের ৬ বছর বয়সী মেয়েকে দেখেন। সামিয়া মাঝে মধ্যে তার মায়ের সাথে পারভেজের বাসায় আসতো এবং তার ছোট ছেলের সাথে খেলাধুলা করতো। তাই সে হারুনকে চিনতো এবং চাচ্চু বলে ডাকতো।
ঘটনার দিন আরাফ অসুস্থ থাকায় সামিয়া হারুনকে ছাদ দেখানোর জন্য বলে। হারুন তখন সামিয়াকে নিয়ে ওই বিল্ডিংয়ের সিড়ি বয়ে ৯ তলায় একটি খালি ফ্লাটে নিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। এরপর শিশু সামিয়ার গলায় শক্ত পাটের রশি দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর ওই ফ্লাটের রান্নাঘরের সিঙ্কের নিচে গলায় পাটের রশি দিয়ে পেঁচানো ও রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, শিশু সামিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় তার বাবা আব্দুস সালাম গত বছর ৬ জুলাই ওয়ারি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর গত ৭ জুলাই কুমিল্লার ডাবরডাঙা এলাকা থেকে হারুন গ্রেফতার হয়। পরদিনই গত ৮ জুলাই হারুন আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।