ডিএসইর সঙ্গে বৈঠকে অর্থমন্ত্রী

গুজবের কারণে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না

প্রকাশ: জানুয়ারি ০৩, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক

গুজবের কারণে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল। গুজব প্রতিরোধে বিদ্যমান আইনের কঠোর প্রয়োগের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রতিনিধিদের সঙ্গে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিফ্রিংকালে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে বিএসইসির চেয়ারম্যানসহ কমিশনাররাও উপস্থিত ছিলেন।

ডিএসইর সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, আজকে পুঁজিবাজারকে কীভাবে ভালো করা যায়, বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে বেশকিছু দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে আমরা তাদের কাছ থেকে ট্যাক্স কেটে নিই। অ্যাডভান্সড ইনকাম ট্যাক্সের হারটা আমরা কমাতে পারি কিনা। আমরা বলেছি, বিষয়টি যতটুকু সম্ভব আমরা বিবেচনা করব। তাদের আরেকটা দাবি ছিল, অ্যাকসেস টু ব্যাংকিং ফিন্যান্স। অন্যান্য গ্রাহক যেভাবে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারেন, একইভাবে পুঁজিবাজারে যারা ব্যবসা করেন, তারাও যাতে সে সুযোগটা পান। আমাদের জানামতে মুহূর্তে দেশের কারো জন্যই কোনো রেস্ট্রিকশন নেই যে ব্যাংকে যেতে পারবে না। ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে অন্যরা যেভাবে ঋণ পায়, পুঁজিবাজারে যারা ব্যবসা করেন, তাদের জন্যও একই সুবিধা থাকবে। এজন্য জামানত দিতে হবে। ব্রোকাররা এর আগেও সরকারের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সেটি সময়মতো শোধ দিয়েছেন, তাদের রেকর্ড ভালো। তাই তাদের ঋণ পেতে কোনো সমস্যা হবে না বলে আমি মনে করি।

অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, বর্তমানে পুঁজিবাজারে কমপ্লায়েন্স দুর্বল, এটিকে আরো কঠোর করতে হবে। আমি বিএসইসি চেয়ারম্যানকে বলে দিয়েছি, শতভাগ কমপ্লায়েন্ট হতে হবে। প্রয়োজনে যদি নতুন কোনো আইন প্রণয়ন করতে হয়, তাহলে সেটিও করা হবে। কারেন্সি ডিভ্যালুয়েশনের কথা এসেছে। আমি তাদের বলেছি, আমরা কারেন্সি ডিভ্যালুয়েশর করব না। এর কোনো প্রয়োজন নেই। রেমিট্যান্স খাতের জন্য কারেন্সি ডিভ্যালুয়েশনের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু গত ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স খাতে আমাদের ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এক মাসে এক খাতে এত প্রবৃদ্ধি, এটা ইতিহাস। এটা আর কেউ ভাঙতে পারবে না। আমরা খাতে শতাংশ প্রণোদনা দিয়েছি। সুতরাং কোনো খাতেই আমাদের কারেন্সি ডিভ্যালুয়েশন করার প্রয়োজন নেই।

সরকারি কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, তারা আমাদের কাছে সরকারি কোম্পানি যেগুলো ভালো অবস্থায় রয়েছে, সেগুলোকে পুঁজিবাজারে আনার দাবি জানিয়েছেন। আমি তাদের বলেছি, মৌলভিত্তির সরকারি কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আনার ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু এজন্য নির্দিষ্ট দিন-তারিখ নির্ধারণ করে দেয়াটা কঠিন। তবে যত দ্রুত সম্ভব সরকারি কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আনা হবে বলে জানান তিনি।

গতকালের বৈঠকে ডিএসইর পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রীর কাছে বেশকিছু লিখিত দাবি উত্থাপন করা হয়। এগুলো হচ্ছে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের ব্যবস্থা করা, রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির শেয়ার পুঁজিবাজারে আনা, দ্রুত ট্রেজারি বন্ডের লেনদেন চালু করা, বহুজাতিক কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে উদ্বুদ্ধ করা, গ্রামীণফোন বিটিআরসির মধ্যে দ্বন্দ্বের দ্রুত নিষ্পত্তি, ডিএসই পুঁজিবাজারের লেনদেনের ওপর কর হ্রাস, অডিট রিপোর্টের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, পুঁজিবাজার উন্নয়নে আইসিবি অন্যান্য সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ বিশেষায়িত খাতের প্রকল্পগুলোকে পুঁজিবাজারে অফলোড করা, বাজারে অর্থ সরবরাহ বাড়ানো এবং উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন সমন্বয় কমিটি গঠন।

বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, ডিএসইর চেয়ারম্যান অধ্যাপক . আবুল হাশেম, স্বতন্ত্র পরিচালক বিচারপতি সিদ্দিকুর রহমান মিয়া, মনোয়ারা হাকিম আলী, ওয়ালিউল ইসলাম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান, শেয়ারহোল্ডার পরিচালক মো. রকিবুর রহমান, মিনহাজ মান্নান ইমন, মো. শাকিল রিজভী মোহাম্মদ শাহজাহান উপস্থিত ছিলেন।


সম্পাদক ও প্রকাশক: দেওয়ান হানিফ মাহমুদ

বিডিবিএল ভবন (লেভেল ১৭), ১২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

বার্তা ও সম্পাদকীয় বিভাগ: পিএবিএক্স: ৫৫০১৪৩০১-০৬, ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন বিভাগ: ফোন: ৫৫০১৪৩০৮-১৪, ফ্যাক্স: ৫৫০১৪৩১৫