২০১৪ সালে পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে ভেঙে যায় খাসিয়ামারা নদীর বাঁধ হিসেবে ব্যবহূত রাবার ড্যাম-বক্তারপুর সড়ক। এ ভাঙন দিয়ে পানি বের হয়ে যাওয়ায় পরবর্তী সময়ে নদীতে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাবার ড্যাম অকেজো হয়ে পড়ে। ফলে উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের প্রায় সাত হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে। পাঁচ বছরেও ভাঙন মেরামত না করায় এবারো এসব জমিতে বোরো আবাদ করা যাচ্ছে না। ভুক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগ, ভাঙন মেরামতে সরকারি কোনো দপ্তরই উদ্যোগী নয়। তবে সড়ক নির্মাণকারী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) দাবি, ভাঙন মেরামতের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে শিগগিরই কাজ শুরু হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেচের জন্য পানি ধরে রাখতে ২০০০ সালে ১ কোটি ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে দোয়ারাবাজারে খাসিয়ামারা নদীতে একটি রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হয়। এ ড্যামের ওপর দিয়ে অবস্থিত সেতু দিয়ে রাবার ড্যাম-বক্তারপুর সড়কে যাতায়াত করে স্থানীয়রা। আর সড়কটি নদীর বাঁধ হিসেবে ব্যবহূত হয়। ২০১৪ সালে পাহাড়ি ঢলে ড্যামের ডান পাশে সড়কটির একটি অংশ ভেঙে যায়। এতে ওই বছর আশপাশের জমির বোরো ফসল ভেসে যায়। শুষ্ক মৌসুমে ভাঙন দিয়ে পানি বের হয়ে যাওয়ায় পরবর্তী সময়ে ড্যামটি অকেজো হয়ে পড়ে। তবে এ ক্ষতি সত্ত্বেও পরে আর ভাঙন মেরামত করা হয়নি।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, ঢলের সঙ্গে নেমে আসা বালি দিয়ে ভরাট হয়ে খাসিয়ামারা নদীটি নাব্যতা হারিয়েছে। ফলে নদীটি অধিকাংশ সময় শুকনা থাকে। বালির কারণে আশপাশের জমিও আবাদযোগ্যতা হারাচ্ছে। তবে সবচেয়ে বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে রাবার ড্যামের অকার্যকারিতা। মূলত সেচের জন্য এটি নির্মিত হলেও শুকনা মৌসুমে পানি পাওয়া না। এতে উপজেলার সুরমা, লক্ষ্মীপুর ও বোগলাবাজার বিস্তীর্ণ এলাকায় ফসল চাষ করা যায় না। একই কারণে এবার তিন ইউনিয়নের অন্তত সাত হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হবে না।
টিলাগাঁও গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলাম বলেন, রাবার ড্যাম কোনো কাজে আসছে না। একদিকে বালি পড়ে জমি আবাদযোগ্যতা হারাচ্ছে, অন্যদিকে শুষ্ক মৌসুমে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। ফসল আবাদই আমাদের আয়-রোজগারের প্রধান উপায়। বোরো চাষ করতে না পেরে খুব কষ্টে আছি।
আরব আলী নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, এ অঞ্চলের ফসলি জমিতে ধান বা সবজি কিছুই চাষ করা যায় না। আমরা এ এলাকার লক্ষাধিক কৃষক খুব কষ্টে আছি। ভাঙন সংস্কার না হলে আমরা না খেয়ে মারা যাব।
কাগুরা গ্রামের আতিকুর রহমান বলেন, খাসিয়ামারা নদীর পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা না