২০১৮ সালের জুলাইয়ে মেঘনা এনার্জি লিমিটেডকে একীভূতকরণের খসড়া স্কিমে অনুমোদন দেয় সিমেন্ট খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ।
তার আগেই মিলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন।
এখন দরকার উচ্চ আদালত ও শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানি আইন, ১৯৯৪-এর ২২৮ ও ২২৯ নং ধারা অনুযায়ী যৌথভাবে হাইকোর্টের কাছে একীভূতকরণে অনুমোদনের আবেদন জানিয়েছে কোম্পানি দুটি।
একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় মেঘনা এনার্জি লিমিটেডের শেয়ার কিনে নেবে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ।
গত বছরের জানুয়ারিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহকারী কোম্পানি মেঘনা এনার্জি লিমিটেডকে একীভূত করার অনুমতি পায় হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ।
মেঘনা এনার্জির ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ শেয়ার প্রিমিয়ামসহ ৯১ কোটি ৭ লাখ টাকায় কিনে নিতে হাইডেলবার্গের প্রস্তাবে সম্মতি জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
মেঘনা এনার্জির ৪০ লাখ ৫৬ হাজার ৪৫৭টি বা ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ শেয়ার ১০০ টাকা অভিহিত মূল্য ও ১২৪ টাকা ৫২ পয়সা প্রিমিয়ামে কেনার পরিকল্পনা অনুমোদন করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
উল্লিখিত শেয়ারের দাম হিসেবে মোট ৯১ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার ২২০ টাকা পরিশোধ করতে হবে দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট কোম্পানিটিকে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত না হওয়ায় এবং এর মূল্য বিদেশী বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠানোর প্রয়োজনীয়তা উদ্ভূত হওয়ায় একীভূতকরণের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে অনুমোদন চেয়ে আবেদন করে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাদের অথরাইজড ডিলার স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংককে চিঠি দিয়ে নির্ধারিত মূল্য অনুমোদন করার কথা জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্লুমবার্গের তথ্যানুসারে, মেঘনা এনার্জি লিমিটেড বাংলাদেশে নিবন্ধিত একটি ছোট আকারের বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।
হাইডেলবার্গ সিমেন্ট এজির সাবসিডিয়ারি হিসেবে তারা বাংলাদেশে ব্যবসা করছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহের জন্য মেঘনা এনার্জির একটি ছোট আকারের বিদ্যুৎকেন্দ্র (এসপিপি) রয়েছে।
সম্প্রতি আল্ট্রাটেক সিমেন্ট মিডল ইস্ট ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের কাছ থেকে এমিরেটস সিমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেড ও এমিরেটস পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের শতভাগ শেয়ার ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেড।
আর এর মধ্য দিয়ে কোম্পানি দুটি হাইডেলবার্গ সিমেন্টের পূর্ণাঙ্গ মালিকানাধীন সাবসিডিয়ারিতে পরিণত হয়েছে।
কোম্পানি দুটির অধিগ্রহণ মূল্য ধরা হয়েছিল ২ কোটি ১৫ লাখ ১৮ হাজার ৬৮৪ ডলার বা ১৮২ কোটি ৫৮ লাখ ৬০ হাজার ৩৮৪ টাকা।
সর্বশেষ অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) হাইডেলবার্গ সিমেন্টের সম্মিলিত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৭ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১১ টাকা ৬৯ পয়সা।
তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির সম্মিলিত শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২ টাকা ৫৩ পয়সা।
আগের বছরের একই সময়ে এ কোম্পানির সম্মিলিতি ইপিএস হয়েছিল ২ টাকা ১৪ পয়সা।
৩০ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৭৫ টাকা ৩৫ পয়সা, যা গত বছরের ৩১ ডিসেম্বরে ছিল ৮২ টাকা ৬৮ পয়সা।
৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরের জন্য হাইডেলবার্গ সিমেন্ট শেয়ারহোল্ডারদের ৭৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।
এ সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১৪ টাকা ৩৩ পয়সা।
৩১ ডিসেম্বর এনএভিপিএস দাঁড়ায় ৮২ টাকা ৬৮ পয়সা।
২০১৭ হিসাব বছরে ইপিএস ছিল ১৪ টাকা ২১ পয়সা।
এনএভিপিএস ছিল ৮৩ টাকা ১৭ পয়সা।
সে বছর কোম্পানিটি ১৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।
তার আগে ২০১৬ ও ২০১৫ হিসাব বছরে ৩০০ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা।
ডিএসইতে সর্বশেষ ১৫৮ টাকা ২০ পয়সায়